ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার ও আইইইবি’র সংবর্ধনা : ছয় হাজার করোনা রোগিকে ফ্রি চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করেছেন মনিরামপুরের সন্তান ডা. মেহেদী হাসান

0

মজনুর রহমান,মনিরামপুর (যশোর) ॥ মহামারি করোনার প্রাদুর্ভাবে মানুষ যখন দিশেহারা। ঠিক সে সময় মনিরামপুরে গরিবের ডাক্তারখ্যাত মেহেদী হাসান নিরন্তর ছুটে চলেছেন করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দিতে। ফ্রি চিকিৎসাসেবা শুধু মনিরামপুরেই তিনি সীমাবদ্ধ রাখেননি, পাশাপাশি তিনি সারাদেশের করোনা আক্রান্ত রোগীদের ফ্রি চিকিৎসাসেবা দিয়ে চলেছেন। দূর-দুরান্তের রোগীদের তিনি চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে। তাঁর দাবি এ পর্যন্ত তিনি ছয় হাজার করোনা আক্রান্ত রোগীকে টেলিমেডিসিনে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করেছেন। দরিদ্র থেকে শুরু করে প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরাও বাদ যাননি ডা. মেহেদীর টেলিমেডিসিনের চিকিৎসা থেকে। ইতোমধ্যে তাঁর এই অনবদ্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তাঁকে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার অফিস এবং ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট(আইইইবি) থেকে সংবর্ধনা দেয়া হয়েছে। ডা. মেহেদী হাসান বর্তমানে ঢাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে(বিএসএমএমইউ) প্যালিয়েটিভ মেডিসিন বিভাগে কর্মরত রয়েছেন।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, মনিরামপুর উপজেলার শ্যামকুড় ইউনিয়নের আগরহাটি গ্রামের হাজী জবেদ আলীর ছোট ছেলে ডা. মেহেদী হাসান লেখাপড়া করেছেন ইউক্রেনের টার্নোপিল ন্যাশনাল মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে। পরে চিকিৎসা বিদ্যায় উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনের পর ২০১৪ সালে যোগদান করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে(বিএসএমএমইউ)। সেই থেকে তিনি চাকরির পাশাপাশি নিজ এলাকার মানুষের ফ্রি চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছেন। শুধু তাই নয় স্বল্প সময়ের ব্যবধানে এলাকার মানুষের চিকিৎস সেবার পাশাপাশি বিভিন্ন সহযোগিতা দিয়ে তিনি বেশ জনপ্রিয় হয়েছেন। বিশেষ করে করোনার প্রাদুর্ভাবে যখন সবাই দিশেহারা, তখন ডা. মেহেদী প্রতিসপ্তাহে ঢাকা থেকে নিজ এলাকায় এসে ফ্রি চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছেন। সুন্দলপুর গ্রামের গৃহবধূ আলেয়া পারভীন জানান, শুধু ফ্রি চিকিৎসা নয়, তিনি নিজের টাকায় ওষুধও কিনে দিয়েছেন তাদের। আগরহাটি গ্রামের বয়োবৃদ্ধ রজব আলী জানান, ফ্রি চিকিৎসার পাশাপাশি ডা. মেহেদী তাদেরকে অর্থিক সহায়তাও করেন। ডা. মেহেদী হাসান জানান, করোনাকালীন এ সময়ে তিনি শুধু টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে প্রায় ২০ হাজার মানুষকে ফ্রি চিকিৎসাসেবা দিয়েছেন। তার দাবি প্রায় ছয় হাজার করোনা রোগীকে টেলিমেডিসিন সেবার আওতায় চিকিৎসা দিয়ে তিনি সুস্থ করেছেন। ঢাকায় বিশেষ করে প্রশাসনের ক্যাডারসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষদের তিনি চিকিৎসা দিয়ে আসছেন। তাঁর এই অনবদ্য অবদানের জন্য গত ৪ নভেম্বর ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার অফিস এবং ৬ ডিসেম্বর ঢাকা ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট(আইইইবি)এর পক্ষ থেকে ডা. মেহেদীকে বিশেষ সংবর্ধনা দেওয়া হয়। ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মোস্তাফিজুর রহমান এবং ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট ঢাকা সেন্টারের সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী কাজী খায়রুল বাশার করোনাকালীন টেলিমেডিসিনের আওতায় অনবদ্য চিকিৎসাসেবার জন্য আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ডা. মেহেদীর ভূয়সী প্রশংসা করেন। মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, করোনাকালীন সময়ে ডা. মেহেদীর অনবদ্য ভূমিকা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। ডা. মেহেদীর বড় ভাই যশোরের সিটি প্লাজা শপিংমলের চেয়ারম্যান এসএম ইয়াকুব আলী জানান, পারিবারিকভাকে সবসময় প্রেরণা দেওয়া হয় তাকে মানবতার সেবায় নিয়োজিত রাখতে। ডা. মেহেদীর প্রত্যাশা পারিবারিক অনুপ্রেরণা থেকেই তিনি সবসময় মানবতার সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখার চেষ্টা করছেন।