কাল উপজেলা চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচন : বাঘারপাড়ায় গণগ্রেফতার, অভিযোগ বিএনপি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর

0

স্টাফ রিপোর্টার॥ নির্বাচনের একদিন আগেই যশোরের বাঘারপাড়ায় পুলিশের বিরুদ্ধে নিরীহ নিরপরাধ মানুষকে নির্বিচারে গণগ্রেফতার ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ উঠেছে। নৌকার প্রার্থীর পক্ষ নিয়ে সোমবার রাতে গোটা উপজেলায় সাঁড়াশি অভিযান চালায় পুলিশ। এসময় পুলিশ বিএনপি যুবদল নেতাকর্মীসহ আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থীর অন্তত ২৯ জন সমর্থককে আটক করে। আগামীকাল ১০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য উপজেলা চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে সোমবার রাতে তাদের আটক করা হয় বলে জানান প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রার্থী শামসুর রহমান ও দিন মোহাম্মাদ দিলু পাটোয়ারী। তবে পুলিশ বলছে, আটক ব্যক্তিরা এজাহারভুক্ত ও সন্ধিগ্ধ আসামি। নির্বাচনী পরিবেশ অশান্ত করতে পারে এমন আশংকা থেকে তাদের আটক করা হয়।
আটককৃতদের উল্লেখযোগ্য কয়েকজন হলেন, রায়পুর ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি দেয়াড়া গ্রামের শফিুকুল ইসলাম, জোহরপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু তালেব, জামদিয়া ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক মফিজুর রহমান, বন্দবিলা ইউনিয়ন যুবদল নেতা খোকন আলী, দরাজহাট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক (আনারস প্রতীকের সমর্থক) জালাল উদ্দিন, ইউপি সদস্য রিপন হোসেন, উপজেলা যুবলীগনেতা ও নারিকেলবাড়িয়া ইউপি সদস্য তরিকুল ইসলাম, আব্দুল হাই, বাসুয়াড়ী ইউনিয়নের সাত নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফসিয়ার রহমান, একই ওয়ার্ডের সাবেক সভাপতি লুৎফর মেম্বার, যুবলীগনেতা ইকবাল হোসেন, রায়পুর ইউনিয়নের পাঁচ নংম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজাদ হোসেন, উপজেলা ও স্বেচ্ছাসেবকলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক রাসেল আহমেদ।
বিএনপি মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী শামসুর রহমান বলেন, নির্বাচনের শেষ সময়ে এসে প্রশাসন নৌকার প্রার্থীর হয়ে ন্যাক্কারজনক কর্মকাণ্ড শুরু করেছে। সোমবার রাতে বাঘারপাড়া থানার প্রত্যন্ত অঞ্চলের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের আটকের চেষ্টা চালায় এসময় ধানের শীষের পক্ষে ভোটের মাঠে গেলে পরিনতি খারাপ হবে বলেও শাসিয়ে আসে পুলিশ। তিনি বলেন পুলিশ কোনো কারণ ছাড়াই বিএনপির ৬ জন নেতাসহ তার ১০ জন কর্মীকে আট করেছে। সর্বত্র ভীতি সৃষ্টির জন্যই এসব কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন। এ বিষয়ে পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের কাছে অভিযোগ দায়ের করেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছেননা বলে তিনি জানান।
অপর দিকে আনারস প্রতীকের (স্বতন্ত্র) চেয়ারম্যান প্রার্থী দিলু পাটোয়ারী অভিযোগ করে বলেন, সোমবার রাতে যাদের আটক করা হয়েছে তারা সবাই তার কর্মী। আনারস প্রতীকের বিজয় নিশ্চিত জেনে তার কর্মীদের নির্বাচন থেকে দূরে রাখার জন্যই এই আটক অভিযান। তিনি বলেন, কিছু অতি উৎসাহী পুলিশ নৌকার প্রার্থীর কাছে সুবিধা নিয়ে এভাবে গ্রেফতার করে নির্বাচনের পরিবেশ অশান্ত করছে। এ বিষয়ে সোমবার সকালে বাঘারপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আল মামুন বলেন, ১০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে অশান্ত পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারে এমন আশংকা থেকে ২৫-২৬ জনকে আটক করা হয়েছে। আটক ব্যক্তিরা এজাহারভুক্ত ও সন্ধিগ্ধ আসামি। তাদেরকে কোর্টে পাঠানোর চেষ্টা চলছে। গত ৭ সেপ্টেম্বর বাঘারপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান নাজমুল ইসলাম কাজল হবিগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেলে এই পদটি শূন্য হয়। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক পেয়েছেন নিহত উপজেলা চেয়ারম্যান কাজলের স্ত্রী ভিক্টোরিয়া পারভিন সাথী। তার প্রতিদ্বন্দ্বি দুই প্রার্থী বিএনপির শামসুর রহমান ধানের শীষ ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী অপর প্রার্থী ইউপি চেয়ারম্যান দিন মোহাম্মাদ দিলু পাটোয়ারী আনারস প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে মাঠে আছেন।