ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ, বাদী পুলিশ কর্মকর্তা ও সাক্ষীকে আদালতের সমন

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোরে রাফিউল হাসান রোহান (২০) নামে এক যুবকের পকেটে ইয়াবা ট্যাবলেট ঢুকিয়ে তাকে ফাঁসিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল রোববার তার জামিন আবেদনকালে আইনজীবী এ সংক্রান্ত কোজ সার্কিট ক্যামেরায় ধারণকৃত ফুটেজ আদালতে উপস্থাপন করেন। এর প্রেক্ষিতে যশোরের সিনিয়র জেলা দায়রা জজ মো. ইখতিয়ারুল ইসলাম মল্লিক মামলার বাদী পুরাতন কসবা পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই উজ্জল কবির এবং ১ নম্বর সাক্ষী আব্দুর জব্বারকে (৪০) আদালতে হাজির হওয়ার জন্য নোটিস ইস্যুর আদেশ দিয়েছেন। একই সাথে আগামী ১৩ ডিসেম্বর আসামির জামিন আবেদনের শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।
আসামি রাফিউল হাসান রোহানের আইনজীবী মাহমুদ কবীর কাঁকন দৈনিক লোকসমাজকে জানান, তার মক্কেল রোহান সদর উপজেলার মনোহরপুর পশ্চিমপাড়ার হাসান আলীর ছেলে। স্বজনেরা ঘটনাস্থল এলাকার একটি প্রতিষ্ঠানের সিসি ক্যামেরায় ধারণকৃত ভিডিও ফুটেজ তাকে সরবরাহ করেন। এতে দেখা যায়, ‘মামলার ১ নম্বর সাক্ষী আব্দুর জব্বার বারবার রোহানের প্যান্টের ডান পকেটে হাত দিয়ে কী যেন খুঁজছেন। এরপর তিনি নিজের প্যান্টের পকেটে হাত দেন এবং পরে রোহানের প্যান্টের পকেটে ফের হাত ঢুকিয়ে দেন। মুহূর্তের মধ্যে পুলিশ সেখানে উপস্থিত হয়ে রোহানকে আটক এবং তার প্যান্টের ডান পকেট থেকে ৩৫ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট বের করে আনে।’ তিনি বলেন, স্বজনদের অভিযোগ ১ নম্বর সাক্ষী আব্দুর জব্বারের সাথে তাদের পূর্ব শত্রুতা রয়েছে। এ কারণে রোহানের পকেটে ইয়াবা ট্যাবলেট ঢুকিয়ে তাকে ফাঁসিয়ে দেয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, জামিন আবেদনকালে তিনি স্বজনদের সরবরাহকৃত ওই ভিডিও ফুটেজ আদালতে উপস্থাপন করেন। এর প্রেক্ষিতে এ সময় বিচারক মামলার বাদী (আটক কর্মকর্তা) ও ১ নম্বর সাক্ষীকে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য নোটিস ইস্যুর আদেশ দেন। এ বিষয়ে মামলার বাদী পুরাতন কসবা পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই উজ্জল কবীর জানান, তিনি রোহানের পকেটে ইয়াবা ট্যাবলেট পেয়েছেন। ১ নম্বর সাক্ষী তার পূর্ব পরিচিত নন এবং সোর্সের কাজও করেন না। ঘটনাস্থলে তাকে পেয়ে সাক্ষী করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, ফাঁড়ির আইসি তাকে সেখানে যেতে বলেছিলেন। তাকে আইসি এ কথা বলেছিলেন যে, ঘটনাস্থলে একজন মাদক ব্যবসায়ী আসবে, তাকে ধরতে হবে।
উল্লেখ্য, গত ২০ নভেম্বর রাত সোয়া সাতটার দিকে যশোর শহরের পালবাড়ি এলাকা থেকে রাফিউল হাসান রোহান (২২) নামে ওই যুবককে আটক করেন এএসআই উজ্জল কবীর। এ সময় তার কাছ থেকে ৩৫ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার হয়েছে মর্মে তিনি কোতয়ালি থানায় মামলা করেন। এই মামলার ১ নম্বর সাক্ষী করা হয়েছে সদর উপজেলার রাজাপুর গ্রামের মৃত জয়নাল আবেদীনের ছেলে আব্দুর জব্বারকে। এদিকে স্বজনদের অভিযোগ, রোহান মাদক কারবারের সাথে জড়িত নয়। তার নামে কোনো মামলাও নেই। ঘটনার দিন জব্বার কথা আছে বলে রোহানকে ডেকে নিয়ে যান। পরে তারা জানতে পারেন, পুলিশ রোহানকে ধরে নিয়ে গেছে।