চৌগাছার টালিখোলা-জামিরা সড়কে তিন কিলোমিটার অংশের বেহালদশা

0

মুকুরুল ইসলাম মিন্টু, চৌগাছা (যশোর) ॥ যশোরের চৌগাছায় গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়কের প্রায় তিন কিলোমিটার অংশ পাকা না হওয়ায় অন্তত ১০টি গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। সড়কের কিছু অংশ এখনও রয়েছে কাঁচা, বাকি সড়ক সলিংকরণ হলেও বর্তমানে ইট উঠে পায়ে হেঁটে চলাও কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। ভুক্তভোগী এলাকাবাসী গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি দ্রুত পাকাকরণে সংশ্লিষ্টদের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। চৌগাছা উপজেলার সদর ইউনিয়নের উত্তর কয়ারপাড়া গ্রামের মাঝ দিয়ে গেছে একটি সড়ক। স্থানীয়রা এটি টালিখোলা-জামিরা সড়ক হিসেবে চেনে। সড়কটির মাত্র তিন কিলোমিটার আজও পাকাকরণ হয়নি। কাঁচা সড়কের মাঝে মাঝে ইটের সলিং করা হলেও সেই সলিং স্থানীয়দের গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে। জনপ্রতিনিধিরা ‘সড়কটি দ্রুতই পাকাকরণ হবে’ এমন আশ^াস দিলেও তা কথার মধ্যেই সীমাবদ্ধ আছে, কাজের কাজ কিছুই হয়নি বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
স্থানীয় বাসিন্দা ইউছুফ আলী জানান, ‘চৌগাছা-যশোর সড়কের টালিখোলা অত্যন্ত পরিচিত একটি স্থানের নাম। টালিখোলা হতে উত্তর কয়ারপাড়ার পূর্বপাড়া জামে মসজিদ পর্যন্ত সড়কের চরম বেহালদশা। বলা চলে উপজেলা সদরের গা ঘেঁষেই এই গ্রামের অবস্থান। কিন্তু সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার নাজুক পরিস্থিতির কারণে আমরা অনেকটাই পিছিয়ে আছি। সময়মত বাজারে যাওয়া আসায় বিঘœ ঘটছে। সড়কটি দ্রুত পাকা হওয়া জরুরি।’ পথচারী বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘উপজেলা সদরে পৌঁছাতে এই সড়কে এলে অনেক পথ কম হয়। তাই মাঝে মধ্যে সড়কে চলে আসি। কিন্তু উত্তর কয়ারপাড়া গ্রামের মধ্যে এলে মনে হয় যেন ভুল করেছি। একটু দূর হলেও বিকল্প পথ দিয়ে গন্তব্যে যাওয়া ভাল ছিল। গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি আজও কেন পাকাকরণ হয়নি তা ভেবে পাইনা।’ স্থানীয়রা জানান, কয়ারপাড়া, সাদিপুর, রুস্তমপুর, জামিরা, দক্ষিণসাগর, মাড়–য়াসহ এ অঞ্চলের গ্রামগুলো কৃষি নির্ভর এলাকা হিসেবে খ্যাত। কৃষক তার উৎপাদিত পণ্য দ্রুত বাজারজাত করার লক্ষ্যে টালিখোলা-জামিরা সড়ক বেছে নেন। কিন্তু যখনই তারা উত্তর কয়ারপাড়া গ্রামের মধ্যে আসেন তখন পণ্যবাহী বাহন নিয়ে পড়েন বিপাকে। সড়কের বেহাল দশার কারণে অনেক সময় পণ্যবোঝাই ভ্যান নছিমন-করিমন সড়কের পাশে উল্টে যাওয়ার মত ঘটনাও ঘটছে। এ ছাড়া সড়কের পাশে হাজার হাজার বিঘা ফসলি জমি রয়েছে। কৃষক ওই জমিতে ফসল ফলিয়ে তা বাড়িতে আনার সময়ও সড়কের বেহালদশার কারণে বিপাকে পড়েন। এলাকাবাসীরা বলেন, বর্তমানে সড়কের যে বেহালদশা তাতে করে ভ্যান ইজিবাইক চলা তো দূরের কথা পায়ে হেঁটে চলাও দুরহ ব্যাপার। যশোর শহর কিংবা চৌগাছা থেকে কোন বাহন চুক্তি করে নিয়ে এলে চালক টালিখোলা এসে আর গ্রামে যেতে চান না। তখন বাধ্য হয়ে পায়ে হেঁটে যেতে হয় গন্তব্যে। এ সড়কের পাশে বসবাসকারী কোন ব্যক্তি হঠাৎ অসুস্থ হলে সেই ব্যক্তিকে বাড়ি থেকে হাসপাতালে নিতে বড় সমস্যায় পড়তে হয়। বিশেষ করে সন্তান সম্ভবনা মা-বোনদের বেলায় ওই কষ্টের মাত্রা বেড়ে যায়। বিষয়টি বিবেচনা করে গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি দ্রুত পাকাকরণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। এ বিষয়ে সংশিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান যুবলীগ নেতা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ওই সড়কটি পাকাকরণের জন্য প্রায় দু’বছর ধরে চেষ্টা করে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে, আশা করছি, চলতি মাসের মধ্যেই টেন্ডার সম্পন্ন হবে।’