মাস্ক পরায় প্রয়োজন সচেতনতা

0
দেশে করোনার সংক্রমণ দেখা দেয়ার পর থেকে এ ভাইরাসে কেউ মা হারিয়েছেন, কেউ বাবা, কেউ ভাই-বোন, কেউ স্বামী বা স্ত্রী। অনেকের অনেক আপনজন হারানোর পরও দেশের মানুষকে এ ব্যাপারে তেমন সচেতন হতে দেখা যায়নি। বিশেষজ্ঞদের পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছে, মাস্ক ব্যবহারে এই ভাইরাসের সংক্রমণ কমবে। পাশাপাশি প্রয়োজন অন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা। কিন্তু রাস্তাঘাট, হাট-বাজার, অফিস-আদালতেও অনেকেই মানছেন না স্বাস্থ্যবিধি, অনেকে বিরত থাকছেন মাস্ক পরা থেকে। অথচ মাস্ক না পরা একজন করোনা ভাইরাস বহনকারী রোগী থেকে আক্রান্ত হতে পারে অসংখ্য সুস্থ মানুষ। আবার তাদের থেকে আক্রান্তের ঝুঁকি থাকে পরিবারের অন্য সদস্যদের। সম্প্রতি করোনার টিকা নিয়ে একর পর এক সুখবর পাওয়া গেলেও আবিষ্কৃত সেসব টিকার সুফল উন্নয়নশীল দেশের মানুষ কতদিনে পাবে, তা অনিশ্চিত। কারণ ফাইজার-বায়োএনটেক ও মডার্নার টিকা যে বিশেষ ব্যবস্থায় পরিবহন ও সংরক্ষণ করতে হবে, তা অনেক দেশেই দুর্লভ। অর্থাৎ এ দুই কোম্পানির টিকা ব্যবহার করতে হলে তা ক্রয় করার পরও পরিবহন ও সংরক্ষণ বাবদ বিপুল পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করতে হবে। এ খাতে এত অর্থ বরাদ্দ করা অনেক দেশের পক্ষেই সম্ভব নয়। করোনার টিকা তৈরির দৌড়ে সামনে থাকা আরও বেশকটি কোম্পানির নাম শোনা গেলেও সেসব টিকা কতদিন পর আমাদের দেশে এসে পৌছাবে, তা নিয়েও রয়েছে অনিশ্চিয়তা। এসব বিবেচনায় নিয়ে করেনা মোকাবিলায় মাস্ক পরিধানসহ যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়টিতে সরকার বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। সম্প্রতি সরকারের বিভিন্ন সংস্থা এ বিষয়ে কঠোর হয়েছে, যা সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য। তবে এত পদক্ষেপ নেয়ার পর এখনো অনেকে নানা অজুহাতে মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়ে উদাসিনতা প্রদর্শন করে চলেছে। ভাইরোলজিস্টদের আশঙ্কা, আদ্রতা, সূর্যের তাপ, ভিটামিন ডি-এর অভাব এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়াসহ শীতের সময় অন্য ভাইরাস ও ফু জাতীয় শ্বাসকষ্ট রোগের লক্ষণ দেখা দেয়। ফলে এ সময় করোনায় ব্যাপকভাবে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। দেশে নিয়ন্ত্রণহীন সংক্রমণ বড় ঝুঁকির কারণ হতে পারে। সেজন্য পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে নতুন পরিকল্পনা হাতে নিতে হবে।