‘জনমনে স্বাধীনতার স্বপ্ন বপন করেন মওলানা ভাসানী’

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী স্বাধীনতার মহানায়ক ছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ন্যাশনাল পার্টির (ন্যাপ) মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষের মনে স্বাধীনতার স্বপ্ন বপন করে মওলানা ভাসানী জাতি গঠন ও রাষ্ট্রের ধারণাকে জনপ্রিয় করেছেন। শুক্রবার (৪ ডিসেম্বর) নয়াপল্টনের ন্যাপের কার্যালয়ে ‘১৯৭০ সালের ৪ ডিসেম্বর ও মওলানা ভাসানীর- লাকুম দিনুকুম ওয়ালিয়াদিন’ শীর্ষক পাঠচক্রে তিনি এসব কথা বলেন। ন্যাপের মহাসচিব বলেন, ১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বর দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে স্মরণকালের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে মারা যায় প্রায় ১০ লাখ মানুষ এবং অগণিত পশুপাখি। প্রচণ্ড অসুস্থ মওলানা ভাসানী ১০২ ডিগ্রি জ্বর নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় ১৬ নভেম্বর রাতের ট্রেনেই ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পৌঁছান। হাতিয়া-রামগতি-ভোলা-বরিশালের বিভিন্ন এলাকা সফর করেন। তিনি বলেন, ওই বছরের ২৩ নভেম্বর পল্টনের জনসভায় তিনি ক্রোধে ফেটে পড়ে পশ্চিম পাকিস্তানিদের উদ্দেশে বলেন ‘ওরা কেউ আসেনি। আজ থেকে আমরা স্বাধীন। আমি পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতা ঘোষণা করছি। স্বাধীন পূর্ব পাকিস্তান জিন্দাবাদ’। মওলানা ভাসানীর সেই ঐতিহাসিক বক্তব্যের পরই কবি শামসুর রাহমান লিখেছিলেন ‘হায় আজ একি মন্ত্র জপলেন মৌলানা ভাসানী।’ গোলাম মোস্তফা বলেন, মওলানা ভাসানী সে সময় স্বাধীনতার ক্ষেত্র প্রস্তুত করে দিয়েছিলেন। ছাত্রনেতারা স্বাধীনতার আন্দোলন জোরদার করার সুযোগ পেয়েছিল। বাঙালি জাতির স্বাধীনতার অগ্রদূত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রেসকোর্স ময়দানে ঘোষণা দিলেন- এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের পর আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দেন মাওলানা ভাসানী। দুদিন পর ৯মার্চ পল্টনের জনসভায় তিনি বলেন- সাড়ে সাত কোটি বাঙালির মুক্তি ও স্বাধীনতার সংগ্রামকে কেউ দমিয়ে রাখতে পারবে না। ন্যাপের মহাসচিব আরও বলেন, ৭ মার্চ ও ৯ মার্চের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে দুই প্রধান নেতার একই সিদ্ধান্তে চলে আসার একটি উদাহরণ তৈরি হয়। তবে এ উদাহরণটি ইতিহাসের পাতায় আজ অনেকটাই অনুপস্থিত। প্রধান দুই নেতা একসঙ্গে একই সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে ঐকমত্য প্রকাশ করেন। তখন আর স্বাধীনতার ক্ষেত্রে সন্দেহের কোনো অবকাশ থাকে না। স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় মওলানা ভাসানীর অবদানকে যারা অস্বীকার করতে চায় বা পাশ কাটিয়ে যেতে চায় তারা আসলে আত্ম প্রবঞ্চক। এ সময় আরও বক্তব্য দেন- জাতীয় গণতান্ত্রিক লীগ সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা এম এ জলিল, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এনডিপি) মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেন, ন্যাপ ভাইস চেয়ারম্যান স্বপন কুমার সাহা, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. কামাল ভূঁইয়া প্রমুখ।