চৌগাছায় বিলে মাছ ছাড়তে গিয়ে জনতার ধাওয়ায় দখলদার পালালো ম্যাগজিনসহ গুলি ফেলে

0

এম. এ রহিম, চৌগাছা (যশোর) ॥ যশোর চৌগাছার পাশাপোল ইউনিয়নের কালিয়াকুন্ডির সরকারি বিল এড়োলে মাছের পোনা ছাড়তে গিয়ে এলাকাবাসীর ধাওয়ায় পালিয়ে গেছে দখলদাররা। গতকাল সোমবার দুপুরে এ ঘটনার সময় তারা ম্যাগজিনসহ পিস্তলের এক রাউন্ড গুলি ও একটি পালসার মোটরসাইকেল ফেলে রেখে যায়। দশপাকিয়া ফাঁড়ির ইনচার্জ জলিল উদ্দীন ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান অবাইদুল ইসলাম সবুজ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
এলাকার মইনুর হোসেন, ওমর ফারুক, জাফর আলী, আয়ুব আলী জানান, বিল এড়োলের সরকারি জমি দখল করে মাছ চাষ করে আসছিলেন স্থানীয় নারী ইউপি মেম্বার মোমেনার স্বামী জুল হোসেন। সরকারি বিল দখল করে ভেড়িবাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করায় এলাকার গোপিনাথপুর, বড়কুলি, দশপাখিয়া, রঘুনাথপুর, মৎস্যরাঙ্গা, বুড়িন্দিয়া গ্রামের কয়েক’শ বিঘা জমির ফসল বর্ষা মৌসুমে পানিতে তলিয়ে যায়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী এলাকাবাসী সরকারি বিল দখলমুক্ত করতে ১ জুলাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা ভূমি কমিশনার ২৩ জুলাই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরে ৩০ জুলাই তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহিদুল ইসলাম ও উপজেলা কমিশনার (ভূমি) নারায়ন চন্দ্র পাল ঘটনাস্থলে গিয়ে বিল অবমুক্ত ঘোষনা করেন। অবমুক্ত ঘোষনা করার পরেও দখলদার জুল হোসেন এলাকাবাসীকে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছিলেন। গতকাল (সোমবার) দুপুরে জুল হোসেন বিলে মাছের পোনা ছাড়তে যান। এ সময় তার ৪ ছেলে তরিকুল ইসলাম, বাবুল হাসান, মজনুর রহমান ও রফিকুল ইসলাম, জুল হোসেনের স্ত্রী মোমেনা, সলুয়া গ্রামের আজিজুর রহমান আজিজ, রহিদুল্লাহ, শেখ পাড়ার আলামিন হোসেন, চন্দ্রপুর গ্রামের মঙ্গলের ছেলে সুমন হোসেনসহ ৪০/৫০টি মোটরসাইকেলে জুল হোসেনের পক্ষে ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। খবর পেয়ে গ্রামবাসীও বিল পাড়ে উপস্থিত হয়। এক পর্যায়ে জুল হোসেনের ছেলে মজনুর রহমান এলাকাবাসীকে টার্গেট করে গুলি ছুড়তে যায়। এ সময় তারা মজনুর রহমানের হাতে আঘাত করেন। এতে তার হাত থেকে পিস্তলের ম্যাগজিন পড়ে যায়। খবর ছড়িয়ে পড়লে উপস্থিত গ্রামবাসী তাদেরকে ধাওয়া করেন। দখলদাররা ধাওয়া খেয়ে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে দশপাকিয়া ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে একটি ম্যাগজিন, এক রাউন্ড গুলি ও নম্বরহীন একটি পালসার মোটরসাইকেল উদ্ধার করেন। এদিকে অভিযুক্ত জুল হোসেন বলেন, ‘আমি মাছ ছাড়তে যাইনি। শুনলাম সলুয়ার কেউ আমার ভেড়িতে মাছ ছাড়তে এসেছিল। আমি ও আমার ছেলেরা সেখানে দেখতে গিয়েছিলাম কারা মাছ ছাড়ছে। এতে গ্রামের লোকজন আমার এক ছেলেকে পিটিয়ে জখম করেছে। সে যশোর সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। আমিও আহত হয়েছি। আমি চৌগাছা উপজেলা সরকারি মডেল হাসাপাতালে ভর্তি আছি।’ এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান অবাইদুল ইসলাম সবুজ বলেন, বিলের জমি নিয়ে মামলা চলছে। মামলা শেষ না হওয়া পর্যন্ত উভয় পক্ষকে শান্ত থাকতে বলা হয়েছিল। জুল হোসেন হঠাৎই প্রশাসনকে না জানিয়ে নিজ ইচ্ছায় মাছ ছাড়তে গিয়ে ভুল করেছেন। চৌগাছা থানা পুলিশের ওসি রিফাত খান রাজিব বলেন, এ ঘটনায় অস্ত্র আইনে মামলার প্রস্তুতি চলছে। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নারায়ণ চন্দ্র পাল বলেন, বিলটি তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহিদুল ইসলাম ও আমি নিজে গিয়ে অবমুক্ত ঘোষনা করি। বর্তমান উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রকৌশলী এনামুল হক বলেন, সে সময় কী হয়েছিল আমি ফাইল না দেখে কিছু বলতে পারছি না।