বাগেরহাটে শিশু হত্যা মামলায় তিন জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

0

বাগেরহাট সংবাদদাতা ॥ বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে মা-বাবার কোল থেকে ঘুমন্ত তিনমাস বয়সী শিশু আব্দুল্লাহকে চুরি ও হত্যা মামলায় তিন আসামির যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আাদালত। একই সাথে প্রত্যেক আসামিকে ৪৫ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। গতকাল রোববার দুপুরে বাগেরহাট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মো. নূরে আলম আসামিদের উপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করেন। দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন-মোরেলগঞ্জ উপজেলার নিশান বাড়িয়া এলাকার মোয়াজ্জেম হোসেন হাওলাদারের ছেলে মো. হৃদয় ওরফে রাহাত হাওলাদার (২০), জসিম হাওলাদারের ছেলে মো. মহিউদ্দিন হাওলাদার (২২) এবং মো. আব্দুর রশিদ হাওলাদারের মো. ফয়জুল ইসলাম (২৯)।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ১১ মার্চ ভোর রাতে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার বিশারীঘাটা গ্রামে পিতা-মাতার শোবার ঘর থেকে ঘুমন্ত অবস্থায় শিশু আব্দুল্লাহকে চুরি করে দুর্বৃত্তরা। ওই দিনই শিশুটির পিতা সিরাজুল ইসলাম সোহাগ মোরেলগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে চুরির সময় নেয়া আব্দুল্লাহর পিতা সোহাগ হাওলাদারের মুঠোফোন থেকে কল দিয়ে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে দুর্বৃত্তরা। আসামিদের দাবি অনুযায়ী সোহাগ ১০ লাখ টাকা দিলেও তারা শিশুটিকে ফেরত দেয়নি। ১৩ মার্চ মো. হৃদয় ওরফে রাহাত হাওলাদারকে আটক করে পুলিশ। পরে হৃদয়ের দেয়া তথ্য অনুযায়ী ১৭ মার্চ দুপুরে মোরেলগঞ্জ উপজেলার বিশারীঘাটা এলাকার রাস্তার পাশের একটি টয়লেট থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার হয়। এরপর আরও দুই আসামিকে আটক করে পুলিশ। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার রিপোর্টের ভিত্তিতে ২০২০ সালের ৯ মার্চ আদালতে চার্জ গঠন করা হয়। চাঞ্চল্যকর এ মামলায় ২৫ জন সাীর মধ্যে ২৪ জনের স্যা গ্রহণ ও যুক্তি তর্ক শেষে বিচারক ওই রায় প্রদান করেন। মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রণজিৎ কুমার মন্ডল বলেন, ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ এর ৭ ধারায় আসামিদের অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তিন আসামিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদ- ও ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছেন আদালত। এছাড়া দন্ডবিধি ৩০২/৩৪ ধারার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তিন আসামিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদ- ও ২৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছেন আদালত। আমরা এই রায়ে খুশি হয়েছি।’ তবে মামলার বাদী শিশুটির বাবা সিরাজুল ইসলাম সোহাগ বলেন, ‘আশা ছিল আসামিদের ফাঁসি হবে, তারপরও রায়ে আমরা খুশি।’