সাইবার বুলিং : প্রয়োজন বন্ধু নির্বাচনে সতর্কতা ও আবেগ নিয়ন্ত্রণ

0

দেশের ৬৮ শতাংশ নারী সাইবার স্পেসে নানাভাবে হয়রানির শিকার হন। সাইবার বুলিংয়ের শিকার হওয়া এসব নারীর অধিকাংশই তরুণী। অধিকাংশ ঘটনাই ঘটছে সম্পর্কের টানাপড়েনের জের ধরে। সাইবার বুলিংয়ের শিকার নারীদের কাছ থেকে প্রাপ্ত অভিযোগের মধ্যে পর্নোগ্রাফি, ব্যাকমেইল, ফেসবুক আইডি হ্যাক, অর্থ আদায় এবং হত্যার হুমকি উলেখযোগ্য। অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পারা, তুচ্ছ ঘটনায় সম্পর্ক নষ্ট করা, ডিজিটাল প্যাটফর্ম সম্পর্কে সঠিক ধারণা না থাকায় এসব ঘটনা বারবার ঘটছে। তবে শুধু আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেই এ ধরনের অনেক ঘটনা কমে যাবে বলে মনে করেন তারা।
রাজধানীতে একটি নামকরা বিশ্ববিদ্যালয় ইংরেজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিার্থী আনিকা (ছদ্মনাম)। ভার্সিটির প্রথম বর্ষ থেকেই কাসমেটের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান তিনি। ছয় মাসের পর তাদের সম্পর্কের অবনতি ঘটে। একজনের সঙ্গে অন্যজনের কথা বলা বন্ধ হয়ে যায়। এই ঘটনার এক বছর পর ফাতেমা আরেকটি নতুন সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। তখন তার সাবেক প্রেমিক সফিকুল ইসলাম এই সম্পর্ক না চালানোর জন্য জবরদস্তি করেন। আনিকা রাজি না হলে, তাদের আগেকার কাটানো কিছু অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও ফুটেজ ভার্সিটির বন্ধুদের দেখাতে শুরু করেন সফিকুল। তার ফোন নম্বর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিভিন্ন সাইটেও পোস্ট করেন। আনিকা সবার সামনে বিব্রত হতে থাকেন। একপর্যায়ে তিনি সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারে যোগাযোগ করেন। অপরাধী পরিচিত হওয়ায় পুলিশ সফিকুল ইসলাম নামের ওই শিার্থীকে সহজে আটক করে। তাকে সঙ্গে নিয়েই আপলোড করা নম্বরগুলো মোছা হয়। মুচলেকা দিয়ে মুক্ত হলেও সফিকুলের ওপর এখনও নজরদারি রেখেছে সিআইডি। সিআইডির সদর দফতর থেকে জানা গেছে, এ বছরের ৫ সেপ্টেম্বর থেকে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত সাইবার পুলিশ সেন্টারের ফেসবুক পেজে ১৭ হাজার ৭০৩টি অভিযোগ এসেছে। ফোনে অভিযোগ করেছেন ৩৮ হাজার ৬১০ ভুক্তভোগী। এর মধ্যে হ্যারাসমেন্টের অভিযোগ ৩৬৫টি। এসব ঘটনায় মামলা হয়েছে ১৮২টি। মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে ১১৮টি। বাকিগুলোর তদন্ত চলমান। গতকাল অনলাইন একটি পত্রিকায় সিআইডি সাইবার পুলিশের সেন্টারের অতিরিক্ত ডিআইজি কামরুল আহসান বলেছেন, আমাদের কাছে যতগুলো অভিযোগ এসেছে তার অধিকাংশই প্রেমঘটিত সাইবার ক্রাইম। এসব েেত্র তরুণীদের আরও সচেতন হওয়া প্রয়োজন। আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করে সাইবার জগতে পদচারণা করাই ভালো। সেেেত্র অনেকাংশে ঝুঁকি কমে আসবে। সাইবার ক্রাইম যে পর্যায়ে চলে গেছে এখন লজ্জা আর ভয় পেয়ে থাকলে চলবে না। ভুক্তভোগীদের আইনের আশ্রয় নিতে সময় ক্ষেপণ করাও চলবে না। আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে বন্ধু নির্বাচনে সতর্কতার প্রয়োজন রয়েছে।