ক্ষেতেই আগাম আলুর দর প্রতি কেজি ৬০ টাকা

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ নীলফামারীর বিভিন্ন উপজেলায় আগাম আলু উত্তোলনে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষীরা। মৌসুমের শুরুতে বাজারে আগাম আলুর চাহিদার পাশাপাশি দামও ভালো পাওয়া যাচ্ছে। এতে চলতি বছরে কয়েক দফা বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার আশা আলুচাষীদের। বর্তমানে পাইকারি ব্যবসায়ীরা ক্ষেত থেকেই প্রতি মণ আলু ২৩২০-২৪০০ টাকায় কিনে নিচ্ছেন, যা ভোক্তা পর্যায়ে ৯০-১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, মৌসুমের শুরুতে নতুন আলুর চাহিদা ও দাম বেশি থাকে। পর্যায়ক্রমে বাজারে আলু জোগান বেড়ে গেলে দাম কমে আসবে।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জেলার ছয় উপজেলাতেই কমবেশি আগাম আলুর আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে চলতি বছর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় আগাম জাতের আলু চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৪ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে। তবে আবাদ হয়েছে ৪ হাজার ২৭০ হেক্টর জমিতে।
স্থানীয় আলুচাষীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এক সপ্তাহ ধরে আগাম আলু উত্তোলন করা হচ্ছে। আগাম আলু মৌসুমের শুরুতেই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন সবজি বাজারগুলোয় পৌঁছে যাচ্ছে।
নিতাই ইউনিয়নের কালিকাপুর গ্রামের কৃষক আব্দুর রহমান বাবলা বলেন, আমার ক্ষেতের আলু উত্তোলনের খবর পেয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা মাঠ থেকেই আলু কিনে নিয়েছেন। প্রতি মণ আলু ২ হাজার ৩৬০ টাকায় বিক্রি করেছি। সে হিসাবে প্রতি কেজির দাম পড়েছে ৫৯ টাকা।
বাবলা জানান, তিনি এক বিঘা জমিতে আগাম আলুর আবাদ করেছেন। সেখান থেকে উৎপাদন হয়েছে প্রায় ১২ মণ। এ আলু বিক্রি করে ২৯ হাজার ২০০ টাকা পেয়েছেন। বীজ, সার, পরিচর্যা ও সেচ বাবদ খরচ বাদ দিয়ে লাভ হয়েছে ১৬ হাজার ৫০০ টাকা।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. হাবিবুর রহমান জানান, নতুন আলু উঠতে শুরু করেছে। দামও ভালো পাচ্ছেন চাষীরা। এখন পর্যন্ত পোকা ও রোগবালাই দেখা দেয়নি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলন ভালো আছে। এবার বাম্পার ফলনের আশা করা হচ্ছে। উৎপাদনের ক্ষেত্রে অতীতের রেকর্ড ভাঙবে বলে প্রত্যাশা করছি।কিশোরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হাবিবুর রহমান বলেন, চলতি বছর উপজেলায় আগাম জাতের আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৪ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে, তার বিপরীতে আবাদ হয়েছে ৪ হাজার ২৭০ হেক্টর।তিনি বলেন, প্রায় ১ হাজার ৫০ হেক্টর জমির আলু উত্তোলন করা হয়েছে। হেক্টরপ্রতি গড় উৎপাদন প্রায় সাড়ে ছয় টন পাওয়া যাচ্ছে। আগাম আলুর উৎপাদন কম হয়, কিন্তু দাম অনেক বেশি থাকার কারণে কৃষকরা লাভবান হন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ওবায়দুর রহমান মণ্ডল বলেন, জেলায় ৭ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আগাম আলুর আবাদ হয়েছে। সেখান থেকে ৪৪-৪৫ হাজার টন আলু উৎপাদন হবে বলে আশা করছি।
অন্যদিকে, নীলফামারীর খুচরা বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতকাল খুচরা বাজারে প্রতি কেজি নতুন আলু ৯০-১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। হিমাগারের আলু ৪২-৪৫ টাকায় বিক্রি হয়।