ঝিকরগাছায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা রেজাউল হাসান নিহত

0

তরিকুল ইসলাম, ঝিকরগাছা (যশোর)॥ যশোরের ঝিকরগাছায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় সদর উপজেলার রামনগর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির সদস্য রেজাউল হাসান (৫৫) নিহত হয়েছেন। এসময় হাবিল নামে এক ব্যক্তি গুরুতর আহত হন। বুধবার বেলা ১১ টার দিকে ঝিকরগাছায় যশোর-বেনাপোল মহাসড়কে কীর্তিপুরে। ত্যাগী নেতা হিসেবে সুপরিচিত এ বিএনপি নেতার অকাল মৃত্যুতে বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মাঝের শোকের ছায়া নেমে আসে। দুর্ঘটনার খবর শুনে ঢাকা থেকে যশোরে পৌঁছান কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। নিহত রেজাউল হাসান ঝিকরগাছা উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি শহীদ নাজমুল ইসলামের শ্যালক ও উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য সাবিরা নাজমুল মুন্নির বড় ভাই। পারিবারিক সূত্র জানায়, রেজাউল হাসান ঠিকাদারী কাজ দেখাশোনার জন্য বেনাপোলে যাচ্ছিলেন। নিহত রেজাউল হাসান রামনগর গ্রামের আব্দুল মান্নান সরদারের ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দুই আরোহী রেজাউল হাসান ও হাবিল মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের কীার্তপুর মেঠোপাড়া জামে মসজিদের কাছে একটি গাছে সজোরে ধাক্কা দেন। গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা তাদের দ্রুত উদ্ধার করে ঝিকরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক রেজাউল হাসানকে মৃত ঘোষণা করেন। অপর আরোহী হাবিলকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। রেজাউল হাসানের লাশ কীর্তিপুরস্থ তার ভগ্নিপতি শহীদ নাজমুল ইসলামের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। এদিকে বিএনপির এই নেতার মৃত্যুর খবর শুনে যশোর জেলা ও ঝিকরগাছা উপজেলা বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দ সেখানে উপস্থিত হন। দুপুর আড়াইটার দিকে কীর্তিপুর জমিরশাহ্ ঈদগাহে মরহুমের প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় শরিক হন যশোর সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি নুরুন্নবী, সাধারণ সম্পাদক কাজী আজম, ঝিকরগাছা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোর্তজা এলাহী টিপু, যুগ্ম-আহ্বায়ক খোরশেদ আলম, সরদার শহিদুল ইসলাম, মুরাদুন্নবী মুরাদ, পৌর বিএনপির আহ্বায়ক হারুণ অর রশীদ, যুগ্ম-আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম, রুহুল আমীন সুজন, হুমায়ুন কবীর, আরমান হোসেন কাকন, জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক কবির হোসেন বাবু, যশোর সদর উপজেলার রামনগর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ডা. আব্দুল আজিজ, সাধারণ সম্পাদক মারুফ হোসেন, সদর উপজেলা যুবদল নেতা ইদ্রিস আলী, আব্দুর রাজ্জাক, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি রাজিদুর রহমান সাগর, সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান বাপ্পি, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ্ নেওয়াজ ইমরান, ঝিকরগাছা উপজেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু মুসা মিন্টু, উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আশরাফুল আলম রানা, পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক শামিম রেজাসহ বিএনপি,যুবদল ও ছাত্রদলের বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ। জানাজা রেজাউল হাসানের লাশ যশোর শহরের লালদীঘি পাড়ায় দলীয় কার্যালয়ে নেয়া হয়। বেলা সাড়ে তিনটায় রেজাউল হাসানের মরদেহ জেলা বিএনপি কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়। সেখানে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ও কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত তার কফিন দলীয় পতাকা দিয়ে মুড়িয়ে দেন এবং মরদেহে ফুল দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় জেলা বিএনপির পক্ষে আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগম শ্রদ্ধা জানান। এছাড়া সদর উপজেলা বিএনপির পক্ষে সভাপতি নূর-উন-নবী, সাধারণ সম্পাদক কাজী আজম, নগর বিএনপির পক্ষে সাধারণ সম্পাদক মুনীর আহমেদ সিদ্দিকী বাচ্চু ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এছাড়াও তার মরদেহে জেলা মহিলা দল, জেলা যুবদল, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল, রামনগর ও চাঁচড়া ইউনিয়ন বিএনপি এবং জেলা ছাত্রদলের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়। পরে তার আত্মার মাগফিরাত কামনায় মোনাজাত করা হয়। সেখান থেকে রেজাউল হাসানের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় রাজারহাট নিজ বাসভবনে। সেখানে নমেজ সরদার মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে বাদ এশা জানাজা শেষে তাকে রামনগরে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। রেজাউল হাসানের মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ও কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। এক শোক বার্তায় তিনি মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনার পাশাপাশি তার শোকাহত স্বজনদের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। অনুরূপ শোক জানিয়েছেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগম, সদস্য সচিব অ্যাড. সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন প্রমুখ। আরও শোক প্রকাশ করেছেন যশোর জেলা যুবদলের সভাপতি এম.তমাল আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক আনসারুল হক রানা।