বিচার নিয়ে পক্ষপাতের শঙ্কা যবিপ্রবি শিক্ষক ফারজানার

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মামলার আসামি নিজেই জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হওয়ায় আদালতে বিচারকাজ পক্ষপাত হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ফারজানা নাসরিন। ন্যায় বিচারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তিনি। অন্যদিকে শিক্ষিকা ফারজানা নাসরিনের দায়ের করা মামলাটি অধিকতর শুনানির জন্য ৭ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেছে আদালত। সোমবার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-১ এর বিচারক এ আদেশ দেন। এদিকে ফারজানা নাসরিনকে সোমবার আদালত কক্ষে তিন ঘণ্টা অহেতুক বসিয়ে রাখা হয়েছিলো বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তার আইনজীবী এমএ গফুর।
সোমবার দুপুরে প্রেসকাব যশোরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক ফারজানা নাসরিন বলেন, তিনি দৃঢ়ভাবে আশঙ্কা করছেন ‘আমি ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হব’। তিনি বলেন, বিচারকাজ পপাত হতে পারে। কেননা মামলার আসামি তার স্বামী মো. মাসুদ রানা নিজেই জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট।
তিনি বলেন, চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুদ রানার সঙ্গে তার বিয়ে হয়। সংসার চলাকালে তার স্বামী ঢাকায় প্লট কেনার জন্যে দশ লাখ টাকা দাবি করেন এবং এ নিয়ে তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করেন। এক পর্যায়ে মো. মাসুদ রানাকে পাঁচ লাখ টাকা দেন তার বাবা। কিছুদিন চুপ থাকলেও আরো পাঁচ লাখ টাকার জন্যে তিনি ফের শারীরিকভাবে নির্যাতন শুরু করেন। উপায়ন্তর না পেয়ে তিনি যশোরে তার বাবার বাড়ি ফিরে আসেন এবং গত ১৪ সেপ্টেম্বর যশোরের আমলী আদালতে (সদর) যৌতুক আইনে মামলা (সিআর-১১৪৯/২০২০, ১৪.০৯.২০২০) করেন।
তিনি বলেন, ‘মামলার পর গত ১৮ সেপ্টেম্বর মাসুদ রানা, তার বোন রানী ও ভগ্নিপতি জিয়াউর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে আসেন আপসের কথা বলে। কিন্তু তারা এসে ফের আমাকে যৌতুকের দাবিতে মারধর করেন। পরবর্তীতে আমি যশোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি পিটিশন (নম্বর-৪৫/২২.০৯.২০২০) দাখিল করি।’ তিনি বলেন, ইতোমধ্যে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-১ যশোরের ৪৫/২০২০ নম্বর পিটিশন মামলার বিচার বিভাগীয় অনুসন্ধানে মাসুদ রানার বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা মিলেছে। কিন্তু বিচারক ১১ নভেম্বর তারিখে আদেশ প্রদান না করে তাকে (ফারজানা নাসরিন) ব্যক্তিগত আক্রমণ এবং কারণ দর্শানোর নোটিস দেন। সংবাদ সম্মেলনে ফারজানা নাসরিন আশঙ্কা করেন, মাসুদ রানা জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হওয়ায় সুবিচার প্রক্রিয়া নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। এ অবস্থায় সুষ্ঠু বিচার যাতে পেতে পারেন, সেজন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে শিক সমিতির সভাপতি ড. ইকবাল কবির জাহিদ, সাধারণ সম্পাদক ড. মো. আমজাদ হোসাইনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক উপস্থিত ছিলেন। এসময় তারা শিক ফারজানা নাসরিনের ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করেন। এদিকে যবিপ্রবি শিক্ষিকা ফারজানা নাসরিনের দায়ের করা মামলাটি অধিকতর শুনানির জন্য আগামী ৭ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেছেন আদালত। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক টিএম মুসা সোমবার এ আদেশ দেন। মামলার বাদি পক্ষের আইনজীবী এমএ গফুর জানান, বাদি ফারজানা নাসরিনকে সোমবার আদালত কক্ষে তিন ঘন্টা অহেতুক বসিয়ে রাখা হয়েছিলো। এ নিয়ে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।