অপমানের বিচার না হলে আত্মহত্যার হুমকি দুই মুক্তিযোদ্ধার

0

সাতক্ষীরা সংবাদদাতা॥ অপমান করা পুলিশ কর্মকর্তার বিচার করা না হলে বিষপান করে আত্মহত্যা করার ঘোষণা দিয়েছেন আশাশুনির দুই মুক্তিযোদ্ধা। সোমবার দুপুরে আশাশুনি প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তারা এমন ঘোষণা দেন। অশ্রুকণ্ঠে বীর মুক্তিযোদ্ধা উপজেলার খাজরা ইউনিয়নের দূর্গাপুর গ্রামের মৃত. মানিক চন্দ্র মন্ডলের ছেলে দীনেশ চন্দ্র মন্ডল লিখিত ও মৌখিকভাবে বলেন, রোববার বেলা সাড়ে ১১টার সময় আমি আমার ডায়াং চায়না মোটরসাইকেলযোগে বাড়ি থেকে আশাশুনিতে আসার সময় আশাশুনি বাইপাস হাইওয়ে ৩ রাস্তার পার্শ্বে (দক্ষিণে) এসআই জুয়েল আমাকে গাড়ি থামাতে বলেন। তিনি বলেন, তার নির্দেশমতো আমি গাড়ি থামাই। পরে এক কনস্টেবল সোহাগ আমাকে বলে এই গাড়ি রাস্তার পাশে আন। আমি বলি কাকা কি হয়েছে বলেন? তিনি বলেন রাস্তার ওপরে কথা বলব না। গাড়ি রাস্তার পাশে আন। এরপর তিনি রুক্ষ মেজাজে বলেন এই বালের লাইট লাগাইছ কেন? তখন আমি বলি কাকা আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। তাছাড়া আমি একজন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা। আমার ছেলে পুলিশে চাকরি করে। ভদ্রভাবে কথা বলেন!
‘তখন সে বলে ওই বালের পরিচয় বাদ দে! বুকের মধ্যে ওসব বাল-ছাল (মুক্তিযোদ্ধার মনোগ্রাম) লাগালাইছ কেন। ওসব খুলে ফেল। এই বলে গাড়ির লাইটটা প্লাস দিয়ে কেটে নেয়। পরে হরেন কাটার জন্য প্লাস বাহির করে একটি হর্ন কাটতে যায়। আমি তখন বাঁধা দেই। সে বলে দুটি হরেন রাখা যাবে না। আমি বলি ৮০ সিসি চায়না গাড়িতে কোম্পানি ২টি হর্ন লাগাইয়া দিয়েছে। এটা আপনি কাটবেন কেন’? ‘সে বাঁধা না মানলে, আমি বলি ঘটনাটি আমি এসপিকে বলব। সে তার পরিহিত প্যান্টের চেইন খুলে দিয়ে আমাকে বলে আমার বাল ছিঁড়ে নিস। এ সময় সেখানে শতাধিক পথচারী উপস্থিত ছিলেন। আশপাশের দোকানদারও আমার সঙ্গে কি ব্যবহার হয়েছে, তা দেখেছে। ঘটনাটি শুধু আমার সঙ্গে ঘটেনি। আমার আগে অপর এক মুক্তিযোদ্ধা আফসার গাজীকেও একইভাবে অপমান করা হয়েছে বলে ওই সময় জেনেছি।’ এছাড়া মুক্তিযোদ্ধা আফসার গাজীর গাড়ির সামনে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি সংবলিত স্টিকার ছিঁড়ে ফেলে দিতে উদ্দাত হয় ওই পুলিশ কনস্টেবল সোহাগ। তিনি বক্তব্যের এক পর্যায়ে অশ্রুকণ্ঠে বিষের বোতল এক হাতে নিয়ে বলেন, এহেন অপমান জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানের জন্য অতীব দুঃখজনক আত্মহত্যার শামিল। ওই পুলিশ কনস্টেবল কোন পরিবার থেকে এসেছে, কার ইন্ধনে এসব বলেছে, বিষয়টি সরেজমিনে তদন্ত করার জন্য এবং ন্যায় বিচার পাওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী, মুক্তিযোদ্ধাবিষয়ক মন্ত্রীসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি। ‘সঠিক বিচার যদি না পায় অন্যথায় আমি আত্মহত্যা করতে বাধ্য হব।’ এ ঘটনায় তিনিসহ মুক্তিযোদ্ধা আফছার গাজী বিষয়টি লিখিতভাবে ওইদিন সন্ধ্যায় লিখিতভাবে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও মৌখিকভাবে থানা অফিসার ইনচার্জকে অবহিত করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- বীর মুক্তিযোদ্ধা আফছার আলী গাজী, আব্দুর করিম, কাত্তিক চন্দ্র মন্ডল, মাস্টার আকবর আলীসহ প্রায় ডজ্জনাধিক মুক্তিযোদ্ধা।