যশোরে প্রেম-প্রতারণায় ২ নারীর আত্মহত্যা : আরেকজন মৃত্যুমুখে

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোরে প্রেম-প্রতারণা ও পরকীয়ার শিকার হয়ে ২ নারী আত্মহত্যা করেছেস এবং একজন আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছেন। পুলিশ ও স্বজনরা জানিয়েছেন, মনিরামপুর উপজেলার নেহালপুর গ্রামে গত বৃহস্পতিবার সকালে সুমী রায় (২২) নামে এক যুবতী ঘরের ফ্যানের সাথে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। নেহালপুর পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মো. আতিকুজ্জামান লাশ উদ্ধার করার পর ময়না তদন্তের জন্য যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতাল মর্গে পাঠান। সুমী রায় নেহালপুর গ্রামের সুনীল কুমার রায়ের কন্যা।
স্বজনরা জানিয়েছেন, সুমী রায়ের সাথে দীর্ঘদিন ধরে এলাকার এক ছেলের প্রেম রয়েছে। তারা পরস্পর বিয়ে করবে বলে ঘনিষ্ঠতা গড়ে তোলে। কিন্তু তা হয়নি। সুমীর পিতৃপক্ষ অন্য জায়গায় তার বিয়ে ঠিক করেন। তারা তাকে দেখে যান। পাত্রী পছন্দ হওয়ায় তার মা ও খালার আগামী শুক্রবার পুনরায় দেখতে আসার কথা। কিন্তু সুমী রায় এ বিয়েতে রাজী নন। প্রেমিকের সাথে যোগাযোগও করেন বিয়ে করার জন্যে। কিন্তু প্রেমিক নামের প্রতারক তাকে বিয়ে করতে রাজি হননি। দীর্ঘদিনের প্রেম-ভালোবাসা প্রত্যাখ্যান করেন প্রেমিক। অবশেষে প্রেমিকের প্রতি বিশ্বাস হারিয়ে মানসিকভাবে সুমী রায় ভেঙে পড়েন। এরপর বাড়ির সকলের অগোচরে ঘরের ভেতর ফ্যানের সাথে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। পুলিশ লাশের সুরতহাল রিপোর্টে প্রেমিকের প্রতারণা সুমী রায়ের আত্মহত্যার কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তবে তার আত্মীরা ওই প্রতারকের নাম ঠিকানা বলতে পারেননি।
অপরদিকে, প্রেমঘটিত বিষয় নিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন অভয়নগরের বিভাগদি গ্রামের ইমতিয়াজ আবাবিল ওরফে মোহাম্মদ ইয়াকুব আলীর স্ত্রী কুলসুম আক্তার কুসুম (৩৪)। গুয়াখোলা গ্রামের প্রফেসরপাড়ার মতিয়ার রহমানের বাড়িতে তারা ভাড়া থাকেন। ওই বাসায় গত বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে ঘরের সিলিং ফ্যানের সাথে কুলসুম আক্তার গলায় ফাঁস দেন। পরে অভয়নগর থানার এসআই শাহআলম তার লাশ উদ্ধার করেন এবং ময়না তদন্তের জন্য লাশ হাসপাতাল মর্গে পাঠান। প্রেমজ সম্পর্কের মাধ্যমে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর দু’জনের সম্পর্কের অবনতি ঘটে। স্বামী ইমতিয়াজ অন্য এক মহিলার সাথে প্রেমজ সম্পর্ক গড়ে তোলেন। যা নিয়ে তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহের সৃষ্টি হয়। এরপর ইমতিয়াজ তার ওই প্রেমিককে রাতে বাসায় নিয়ে আসেন। এ ঘটনায় স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে গোলযোগ তুঙ্গে ওঠে। গতকাল সকালে গলায় ফাঁস দেয়া কুলসুম আক্তারের লাশ উদ্ধার করেন এসআই শাহআলম। পুলিশ লাশের সুরতহাল রিপোর্টে এ ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন। যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতাল মর্গে গতকাল দুটি লাশের ময়না তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। ময়না তদন্ত করেছেন হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. মো. দেলোয়ার হোসেন। তিনি বলেছেন, দু’টি ঘটনায় প্রেম সম্পর্কিত আত্মহত্যার কথা পুলিশ উল্লেখ করেছে। এদিকে, গতকাল দুপুরে যশোর শহরের পুলিশ লাইন এলাকার তৌফিক হাসানের স্ত্রী ইসমত জেরিন (৩৮) ঘরে জানালার কাঁচের সাথে মাথায় আঘাত করে আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছেন। তাকে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে রক্তাক্ত অবস্থায় ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতালে মাথায় ব্যান্ডেজ করাকালীন জেরিন তার স্বামীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আমি বাঁচতে চাই না। আমি আত্মহত্যা করবো। তুমি পরকীয়া করছো, করোগে যাও। এ সময় তোফিক হাসান তার স্ত্রীর মুখ চেপে ধরে শান্ত করার চেষ্টা করছিলেন।