যশোরে দুটি আলোচনা সভায় অনিন্দ্য ইসলাম অমিত: তারেক রহমানই আগামী দিনে বাংলাদেশের নেতৃত্বের জন্য নির্ধারিত হয়ে আছেন

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেছেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের আগামী দিনের নেতৃত্ব যেমন নির্ধারিত, ঠিক তেমনি বাংলাদেশের আগামী নেতৃত্বও নির্ধারিত হয়ে গেছে। বর্তমান সরকার জিয়া পরিবারকে নিয়ে যতই ষড়যন্ত্র করুক না কেনো, আগামী দিনে দেশনায়ক তারেক রহমানই এ দেশের নেতৃত্ব দেবেন। অনিন্দ্য ইসলাম অমিত শুক্রবার সকালে ও বিকেলে যশোর জেলা বিএনপি ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল আয়োজিত আলাদা আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এ সভার আয়োজন করা হয়। সভা দুটি শহরের লালদীঘিপাড়স্থ বিএনপি কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা বিএনপির আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন যশোর জেলা বিএনপির আহবায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগম ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির জেলা শাখার সহসভাপতি নির্মল কুমার বীট। জেলা বিএনপির আলোচনা সভায় নেতৃবৃন্দের মধ্যে অংশ নেন সংগঠনের জেলা শাখার যুগ্ম আহবায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন ও সদস্য সচিব অ্যাড. সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু। প্রধান অতিথির আলোচনায় অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, আমরা যাকে সামনে রেখে রাজনীতি করি, যার উৎসাহে উদ্দীপনায় হাজারো প্রতিকূলতাকে উপেক্ষা করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের আদর্শের সৈনিকরা দীর্ঘ ১৩ টি বছর ধরে রাজপথকে আলিঙ্গন করেছেন আমাদের প্রিয় নেতা তারেক রহমানের আজ জন্মদিন। অত্যন্ত উৎসব মুখর পরিবেশে এই জন্মদিন পালন হওয়ার কথা। কিন্তু যে বাংলাদেশের আজ গণতন্ত্র নির্বাসিত। যে বাংলাদেশে আইনের শাসন ভূলুণ্ঠিত, মানবাধিকার পর্যদুস্ত, বাক স্বাধীনতা সংকুচিত সেই বাংলাদেশে আনন্দ উৎসব করার উপলক্ষও কমে গেছে। এরপরও জীবন কখনও থেমে থাকে না। তাই আজকের এতো কষ্ট ও মন খারাপের মাঝেও আমাদের প্রিয় নেতার জন্মদিনে একত্রিত হয়েছি। অমিত বলেন, বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ আজ বিশ্বাস করে বাংলাদেশের এই হারানো গণতন্ত্রকে যদি ফিরিয়ে আনতে হয় এবং সেই গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার লড়াইয়ে নেতৃত্ব দেওয়া যোগ্যতা যিনি রাখেন তিনি হলেন তারেক রহমান। যিনি সূদুর লন্ডনে নির্বাসনে থেকেও গণতন্ত্রের লড়াইয়ের আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে চলেছেন।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ঘোষণায় মহান মুক্তি যুদ্ধের সূচনা হয়েছিলো। তিনি শুধু ঘোষণা দিয়ে থেমে থাকেননি। রণাঙ্গনে শত্রুর সাথে যুদ্ধ করেছিলেন এবং ৯ মাস যুদ্ধ করে লাল সবুজের পতাকা ছিনিয়ে এনেছিলেন। এরপর ১৯৭৫ সালে সিপাহী জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে একটি স্বনির্ভর আত্মনির্ভরশীল বাংলাদেশ উপহার দেন। এজন্য তাকে আধুনিক বাংলার স্বপ্নদ্রষ্টা বলা হয়। তার শাহাদৎ বরণের পর তার প্রিয় সহধর্মিনী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া একজন সাধারণ গৃহিনী হয়েও জনগণের দাবির প্রেক্ষিতে রাজপথে নেমে আসেন। তার নেতৃত্বেই স্বৈরাচার বিদায় হয় এবং দেশে সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। সেই শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার আদর্শের উত্তরাধিকার হচ্ছেন দেশ নায়ক তারেক রহমান। অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, তারেক রহমানকে নিয়ে সরকার নানা সমালোচনা-আলোচনা করে। অথচ তিনিই বাংলাদেশের রাজনীতিতে কিছু গুণগত পরিবর্তন এনেছিলেন। আজকে যেখানে শাসক দলের মধ্যে ন্যুনতম গণতন্ত্র চেতনা অনুপস্থিত। যেখানে তাদের মাঝে সামান্যতম সহনশিলতা নেই। পরমত সহিষ্ণুতা বলতে কী বুঝায় তা নেই। সেখানে তারেক রহমানের কিছু উদ্যোগ আজও প্রশংসনীয়। তিনিই প্রথম বলেছিলেন, আসুন আমরা সকল ভেদাভেদ ভুলে বাংলাদেশের চার নেতাকে সর্বোত্তমভাবে স্বীকৃতি দেই। তারা হলেন, মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, শেরে বাংলা একে ফজলুল হক, শেখ মুজিবুর রহমান ও শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। এই রাজনৈতিক উদারতা আজও পর্যন্ত কোনো রাজনীতিবিদ দেখাতে পারেননি। যা দেখিয়েছেন একমাত্র তারেক রহমান। এছাড়া তিনি টুঙ্গিপাড়ায় শেখ মুজিবের কবর জিয়ারত করেছিলেন। সজিব ওয়াজেদ জয়কে রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হতে চিঠি দিয়েছিলেন। সজিব ওয়াজেদ জয় যেদিন রংপুরে যান সেখানে তারেক রহমানের প্রত্যক্ষ চেষ্টায় শতাধিক তোরণ করা হয়েছিলো। অথচ আওয়ামী লীগ আজ এসব কিছু ভুলে গেছে। তিনি বলেন, দেশের এই পরিস্থিতি থেকে দেশ ও জাতিকে রক্ষা করতে হলে তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিকল্প নেই। তাই আজকের এই দিনে আমাদের সবাইকে শপথ নিতে হবে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে, ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য দেশনায়ক তারেক রহমানকে ফিরিয়ে আনতে রাজপথে ঝাপিয়ে পড়তে হবে।
জেলা বিএনপি ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সভা দুটিতে নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য আব্দুস সালাম আজাদ, প্রফেসর গোলাম মোস্তফা, আলহাজ মিজানুর রহমান খান, বিএনপির কেন্দ্রী সহ-স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক জাহানারা সিদ্দিকী, যশোর নগর বিএনপির সভাপতি মারুফুল ইসলাম, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি নুর-উন-নবী, সাধারণ সম্পাদক কাজী আজম, রফিকুল ইসলাম চৌধুরী মুল্লক চাঁদ, শ্রমিক দল সভাপতি এসএম মিজানুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মো. শাহাবুদ্দিন, জেলা যুবদলের সভাপতি এম তমাল আহমেদ, সাবেক যুবনেতা আকবর হোসেন খোকন, মনিরুজ্জামান মাসুম, জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক কবির হোসেন বাবু, যুগ্ম সম্পাদক নাজমুল হোসেন বাবুল, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মোসফা আমীর ফয়সাল সাংগঠনিক সম্পাদক আলী হায়দার রানা, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান বাপ্পী, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি শেখ রকিবুল ইসলাম, মাহমুদ হাসান চুন্নু, আনোয়ারুল ইসলাম আজাদ,যুগ্ম সম্পাদক রাজু আহমেদ, আসলাম শেখ, সহ-সাধারণ সম্পাদক হামিদুর রহমান রাজিব, তানজিদুর রহমান তানিম, পারভেজ হোসেন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ইব্রাহিম হোসেন, আত্তাবুল আলম পরাগ, রাকিবুল হাসান রাসেল, দপ্তর সম্পাদক সাইফুল বাশার সুজন, প্রচার সম্পাদক ইমরান হাসান বনি, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য, তোহিদুর রহমান, সাইদুর রহমান, রাজিব খান, এম আর মিলন, রফিকুল ইসলাম, ইয়াসিন আলী, সোহরাব হোসেন, রফিকুল ইসলাম, ইকরামুল কবির সুমন, তোফাজ্জেল হোসেন, সবুজ হোসেন প্রমুখ। আলোচনা সভা শেষে তারেক রহমানের দীর্ঘায়ূ ও সুস্থতা কামনা করে দোয়া করা হয়। দোয়া পরিচালনা করেন মাওলানা মো. মনিরুজ্জামান।