আসন্ন সঙ্কট থেকে বিশ্বকে বাঁচাতে আশু পদক্ষেপের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাপমাত্রা বৃদ্ধিজনিত সঙ্কট থেকে ধরিত্রীকে বাঁচাতে একটি আশু ঐক্যবদ্ধ বৈশ্বিক প্রতিকারমূলক ব্যবস্থার ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘বর্তমান ভবিষ্যদ্বাণী অনুসারে এ শতাব্দীর শেষের দিকে তাপমাত্রা ৪.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও বেশি বাড়তে পারে এবং তাৎণিক প্রতিকারমূলক পদপে গ্রহণ করা না হলে পৃথিবী বেঁচে থাকার পে পুরোপুরি অনুপযুক্ত হয়ে পড়বে।’ প্রধানমন্ত্রী ইউএনএফসিসিসি রেস টু জিরো ডায়ালগের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্যানেলে ‘নেট-জিরো ল্য পূরণে রূপান্তরকালীন নেতৃত্ব’ শীর্ষক সমাপ্তি অধিবেশন পূর্ব-রেকর্ডকৃত ভাষণে একথা বলেন। তিনি আরো যোগ করেন, ‘কেবল বিশ্বব্যাপী সমন্বিত পদেেপর মাধ্যমেই আমরা আসন্ন সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে পারি এবং এ গ্রহকে বাঁচানোর পদপে নেওয়ার সময় আগামীকাল নয়, আজ।’ তিনি বলেন, জীবন ও মূল্যবান সম্পদ বাঁচাতে বিশ্ব নেতৃত্বকে অবশ্যই কার্বন নিঃসরণ কমাতে সাহসী সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা যদি আমাদের গ্রহ ও নিজেদের বাঁচাতে চাই, তবে, সকল সরকারকে যথাসাধ্য উচ্চাভিলাষ বাড়াতে হবে।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, নীচের ১০০টি দেশ মাত্র ৩.৫ শতাংশ বৈশ্বিক কার্বন নির্গমন করে যেখানে জি-২০ দেশগুলো তিন চতুর্থাংশের জন্য দায়ী। তিনি বলেন, সুতরাং, আমরা এ দেশগুলোর নেতৃত্বের কাছ থেকে আরও দায়িত্বশীল পদপে আশা করি। মা ধরিত্রী’র সাথে আমাদের সম্প্রীতি রায় ‘জলবায়ু সহসশীলতা দিবস’ নামে একটি আন্তর্জাতিক দিবসের নামকরণ করারও আহ্বান জানাই।’ তিনি বলেন, ‘অভিযোজন ও প্রশমন কার্যক্রমে সহায়তার জন্য আমরা প্রতি বছর প্রতিশ্রুত ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের আহ্বান জানাই।’ তিনি সংশ্লিষ্ট বিশ্ব নেতৃত্বের প্রতি রেয়াতি অর্থায়ন, ঋণ মওকুফ এবং সকলের প্রযুক্তিতে অ্যাক্সেসের নিশ্চয়তা দেওয়ার আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী মত দেন যে, প্যারিস চুক্তির কঠোর বাস্তবায়নই একমাত্র উপায় এবং ‘লোকসান ও য়তির’ বিষয়টি অবশ্যই মূলধারাভুক্ত করতে হবে। প্যারিস জলবায়ু চুক্তির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের উচিত বৈশ্বিক তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের ওপরে উঠতে না দেওয়া। তিনি অবশ্য বলেন, বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রা ইতিমধ্যে প্রাক-শিল্প স্তরের ওপরে প্রায় এক ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড বেড়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, এ বছর বাংলাদেশ দু’টি ঘূর্ণিঝড়ের পাশাপাশি বারবার বন্যার কবলে পড়েছে, যা ফসল ও আবাসস্থলকে তিগ্রস্ত করেছে এবর্ং কোভিড-১৯ মহামারীর মধ্যে মানুষের জীবিকাকে তিগ্রস্ত করেছে। তিনি বলেন, এসব বৈশি^ক উষ্ণায়নের কারণেই ঘটছে, যা প্রকৃতিতে পরিবর্তন আনছে। তিনি আরো বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন সকলের কাছে এক চূড়ান্ত বাস্তবতা, তবে বাংলাদেশের মতো জলবায়ু অরতি দেশগুলোর জন্য এটি আরো প্রকট। প্রধানমন্ত্রী মত দেন যে, সমুদ্রপৃষ্ঠের এমনকি আর আধ-মিটার বৃদ্ধি অনেক জলবায়ু অরতি দেশের অস্তিত্বের জন্য হুমকিস্বরূপ হতে পারে। তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী উচ্চ ঝুঁকি বিবেচনা করে আমাদের জাতীয় সংসদ একটি ‘প্ল্যানেটারি ইমার্জেন্সি’ ঘোষণা করেছে এবং বিশ্বকে জলবায়ু পরিবর্তন রোধে যুদ্ধ মোকাবেলার প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছে। আমরা বিশ্ব-নেতৃত্বের বাকি অংশ থেকেও একই দৃষ্টিভঙ্গি প্রত্যাশা করি।’ তিনি বলেন, দ্বিতীয়বারের মতো ৪৮ সদস্যের জলবায়ু তিগ্রস্ত ফোরামের নেতৃত্বের জন্য নির্বাচিত হয়ে আমরা সম্মানিত হয়েছি। তিনি আরো বলেন, ‘গত মাসে সিভিএফের পে আমি প্রত্যেক দেশের প্রত্যেক নেতার প্রতি তাদের এনডিসিকে ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর মধ্যরাত নাগাদ বাড়ানোর আহ্বান জানাতে ‘মিডনাইট সার্ভাইভাল ডেডলাইন ফর দ্য কাইমেট চালু করেছি।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এ বছর আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করছে, যিনি অনেক আগেই আমাদের জনগণের জন্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের হুমকির বিষয়টি চিহ্নিত করে গেছেন। তিনি বলেন, এসব হুমকি কাটিয়ে উঠতে এবং মানুষের অধিকার রায় তিনি নিরলসভাবে কাজ করেছেন। তিনি বলেন, এবং এই গুরুত্বপূর্ণ বছরে আমরা আমাদের অভিন্ন ভবিষ্যৎ সুরায় একটি নতুন পথরেখা বাস্তবায়নের ল্েয সম্পদ সংস্থানে সহায়তায় একটি জাতীয় ‘মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা’ প্রণয়ন করতে একটি কর্মসূচি চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
খবর: বাসস