দুর্নীতিতে ফাঁসলেন কুষ্টিয়া চিনিকলের এমডি, সিবিএ সভাপতি-সম্পাদক

0

কুষ্টিয়া সংবাদদাতা॥ দুর্নীতির অভিযোগে কুষ্টিয়া চিনিকলের সদ্য বহিষ্কৃত এমডি গোলাম সারওয়ার মুর্শেদ সিবিএ সভাপতি ফারুক হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বুধবার (১৮ নভেম্বর) বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প সংস্থার চেয়ারম্যান সনৎ কুমার সাহা স্বাক্ষরিত এক আদেশে কুষ্টিয়া চিনিকলের এমডি গোলাম সারওয়ার মুর্শেদকে সাময়িক বরখাস্তের কথা জানানো হয়।
আদেশে বলা হয়েছে, কুষ্টিয়া চিনিকলের অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক-কর্মচারীদের প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্রাচুইটি এবং মালামাল সরবরাহকারীর বিল পরিশোধে অনিয়ম উত্থাপিত হয়। পরে অভিযোগ তদন্তে বিএসএফআইসি সদরদফতর কর্তৃক প্রাথমিক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি সরেজমিনে তদন্ত করে প্রধান কার্যালয়ের কর্তৃপক্ষের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন পেশ করে। প্রতিবেদন অনুযায়ী পিএফ ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি হিসেবে অনিয়মতান্ত্রিকভাবে সঞ্চয়পত্র ভাঙানো, রেজিস্ট্রেশনে স্বাক্ষর, অবসর গ্রহণের দুই এক মাস পূর্বে পিএফ সদস্যদের নিজের অংশ এবং মিলের অংশের ৯০-৯৫ শতাংশ লোন হিসেবে প্রদান এবং অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক কর্মচরীদের পিএফ ফান্ডের চেক প্রদানকালে তাদের নিকট থেকে মিলের শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক কর্তৃক অর্থ আদায়করণ, ১৩-৩৩ শতাংশ হারে অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক কর্মচারীদের কাছ থেকে ইউনিয়নের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের ঘুষ নেয়ার বিষয়টি অবহিত হওয়ার পরও ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নীরব থাকা এবং ব্যবস্থা গ্রহণ না করা গুরুতর অভিযোগ হিসেবে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাকে বিএসএফআইসি কর্মচারী প্রবিধানমালা ১৯৮৯ এর ৪৪(১) ধারা অনুযায়ী চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। সাময়িক বরখাস্তকালে তিনি খোরাকি ভাতা পাবেন। একই দিন প্রধান কার্যালয়ের অপর এক নির্দেশে কুষ্টিয়া চিনিকলের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক রকিবুর রহমান স্বাক্ষরিত আদেশে মিলের সিবিএ সভাপতি ফারুক হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমানকে সাময়িকভাবে চাকরি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে যে, কুষ্টিয়া চিনিকলে অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক কর্মচারীদের প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্রাচুইটি ও মালামাল সরবরাহকারীর বিল পরিশোধের ক্ষেত্রে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ উত্থাপিত হয়। এ প্রেক্ষিতে সদর দফতরের ২ নভেম্বরের আদেশ মোতাবেক অভিযোগের বিষয়টি তদন্তের জন্য প্রাথমিক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি সরেজমিনে তদন্ত করে প্রধান কার্যালয় প্রতিবেদন পেশ করে। প্রতিবেদন অনুযায়ী বিধি বহির্ভূতভাবে তিন কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র ভাঙানো, রেজুলেশন করা, নিয়ম ভেঙ্গে পিএফ ফান্ডের সদস্যদের টাকা চিনি ব্যবসায়ীদেরকে প্রদান এবং মিলের অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক-কর্মচারীদের পিএফ ফান্ডের অর্থ প্রদান কালে ৪৩.৩৩ শতাংশ হারে ঘুষ নেয়ার দণ্ডনীয় অপরাধের জন্য বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর ২৪ ( ২ ) ধারা অনুযায়ী চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় সাময়িক বরখাস্ত কালীন সময়ে তারা খোরাকি ভাতাপ্রাপ্ত হবেন বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়। বুধবার ( ১৮ নভেম্বর ) রাতে এ খবর কুষ্টিয়া চিনিকলে পৌঁছালে মিলের শ্রমিক ও কর্মচারীদের মাঝে স্বস্তি ফিরে আসে।