শিক্ষার্থীদের ‘টিউশন ফি’ সংকট কাটবে কবে?

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ফি (শিক্ষা ফি) আদায় সংক্রান্ত জটিলতা যেন কাটছে না। দ্রুত এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারির কথা ছিল। কিন্তু ১৯ দিনেও তা করতে পারেনি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি)। অন্যদিকে নির্দেশনা না থাকায় ইচ্ছামতো শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। সারাবছর না পড়িয়ে শতভাগ ফি আদায় করা হচ্ছে এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যাও প্রায় শতভাগ। ফি না দিলে পরের ক্লাসে পদোন্নতি দেয়া হচ্ছে না। এ অবস্থায় একপ্রকার জিম্মি হয়ে দাবি করা ফি দিতে বাধ্য হচ্ছেন অভিভাবকরা। সার্বিক পরিস্থিতিতে মাউশির ভূমিকাও এখন প্রশ্নের সম্মুখীন। গত ২৯ অক্টোবর এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছিলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে টিউশন ফি’র সঙ্গে আর কোন কোন খাতে অর্থ আদায় করা যাবে তা উল্লেখ করে একটি নির্দেশনা দেয়া হবে। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ক্রীড়া, মিলাদ-মাহফিলসহ অন্যান্য যে কার্যক্রম হয়নি, নির্দেশনায় সেসব ফি বাদ দেয়া হবে। এর আগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অভিভাবক— উভয়পক্ষকে উদার হতে আহ্বান জানান শিক্ষামন্ত্রী।
অভিভাবকদের অভিযোগ, শিক্ষামন্ত্রীর ওই ঘোষণার পর স্কুলগুলো ফি আদায়ে উঠেপড়ে লাগে। নির্দেশনা জারির আগে পাওনা আদায়ে নানা টালবাহানা শুরু করে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে অভিভাবকদের ওপর চাপ প্রয়োগ করা হয়। ফি’র জন্য চাপ দেয়ায় ইতোমধ্যে মিরপুরের মনিপুর স্কুলের অভিভাবকরা বিক্ষোভ করেন। মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল ও কলেজ চাপ দিয়ে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ফি আদায় করেছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। এখন তারা ডিসেম্বর পর্যন্ত ফি আদায়ের চেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিভাবকরা জানান। এছাড়া কোথাও কোথাও সরকার ঘোষিত ‘অ্যাসাইনমেন্ট’-কে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, পাওনাদি পরিশোধ না করলে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা বা অ্যাসাইনমেন্ট নেয়া হবে না। আবার কোথাও অ্যাসাইনমেন্টের জন্য আলাদা ফি আদায়েরও অভিযোগ উঠেছে। অভিভাবকদের সংগঠন ‘অভিভাবক ঐক্য ফোরাম’-এর সভাপতি জিয়াউল কবির দুলু জাগো নিউজকে বলেন, “মন্ত্রণালয় থেকে শিগগিরই টিউশন ফি সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করার কথা বলা হচ্ছে বারবার। ‘শিগগির’-ই সময়টা আসলে কতদিন, আমরা সেটা জানতে চাই?” মাউশির কর্মকর্তারা বলছেন, টিউশন ফি কমানোর কাজ চলছে। ইতোমধ্যে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তা ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানদের নিয়ে একাধিক বৈঠক করা হয়েছে। বৈঠকগুলোতে মিলাদ-মাহফিল ফি, বিদ্যুৎ, পানির বিল, ল্যাব ফি, খেলাধুলা ফিসহ বিভিন্ন ফি বাতিল করা; টিউশন ফি ছয় মাস মওকুফসহ বিভিন্ন প্রস্তাব এসেছে। জানতে চাইলে মাউশি’র মহাপরিচালক অধ্যাপক এস এম গোলাম ফারুক বলেন, ‘আমরা দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছি। কোন প্রতিষ্ঠানে কত আদায় করা হচ্ছে, তা চিহ্নিত করা হয়েছে। তার আলোকে প্রতিষ্ঠানভিত্তিক টিউশন ফি’র সঙ্গে অতিরিক্ত ফি বাদ দিয়ে আদায় করতে বলা হবে। ‘টিউশন ফি সংক্রান্ত নির্দেশনা তৈরির কাজ চলছে। উচ্চপর্যায়ের অনুমোদন শেষে নির্দেশনাটি জারি করা হবে’—বলেও জানান তিনি।