“জনগণের দৃষ্টি ফেরাতে ঢাকায় বাস পোড়ানোর নাটক করেছে সরকার”

0

খুলনা ব্যুরো ॥ ঢাকা-১৮ ও সিরাজগঞ্জ-১ আসনের উপরির্বাচনে ভোট ডাকাতি ও দেশব্যাপী লুটতরাজ, দ্রব্যমূল্য উর্ধগতি এবং লাগামহীন দুর্র্নীতির কারণে সরকার জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। যে কোনো সময় সরকারের পতন আসন্ন। তাই জনগণের দৃষ্টি ফেরাতে ঢাকায় বাস পোড়ানোর নাটক সাজিয়ে অতীতের মতো বিএনপির ওপর দায় চাপাতে চায় সরকার। এই অবৈধ সরকার ক্ষমতা দখলের পর থেকে একের পর এক দুর্নীতি ও লুটপাটের কারণে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে দেশের সার্বভৌত্ব আজ হুমকির সম্মুখীন। আওয়ামী লীগ আর গণতন্ত্র এক সঙ্গে চলতে পারে না। যে কারণে আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে একের পর এক সাজানো পাতানো নির্বাচন করে যাচ্ছে। জনগণের ভোটাধিকার হরণকারী সিইসি সরকারের রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে বালখিল্য আচরণ করছে। শরমের মাথা খেয়ে এই সিইসি মার্কিন নির্বাচন নিয়ে যে মন্তব্য করেছে, তাতে বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ ও নির্বাচন কমিশন হাস্যকরের পাত্র হয়েছে। অবিলম্বে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করে নিরপেক্ষ, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিয়ে জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে। রবিবার বেলা সাড়ে ১১টায় দলীয় কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপি আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে নেতৃবৃন্দ একথা বলেন।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে নামধারী ছাত্রলীগ ও যুবলীগ। দেশের ব্যবসা বাণিজ্য আজ আওয়ামী সিন্ডিকেটের হাতে। যে কারণে পেঁয়াজ তেল, আলু, সবজিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য লাগামহীন। আর জনগণের পকেট কেটে সেই টাকা চলে যাচ্ছে আওয়ামী নেতাদের হাতে। জনগণের ক্রয় ক্ষমতা হারিয়ে গেছে। যৎসামান্য টিসিবি পণ্য রাস্তায় দেওয়া হলেও সেখানে দীর্ঘ লাইন মনে করে দেয় আওয়ামী লীগের অতীত ইতিহাস। সরকারের লাগামহীন দুর্নীতি ও লুটপাটের কারণে জনদৃষ্টিকে অন্য দিকে ফেরাতে ঢাকা ও সিরাজগঞ্জের উপনির্বাচনকে টার্গেট করে সরকারের পৌষ্য বাহিনী তথা এজেন্সি দ্বারা বাসে আগুণ লাগিয়ে দায় চাপাতে চায় বিএনপির ওপর।
নেতৃবৃন্দ বলেন, ঢাকায় বাসে আগুণ লাগানোর ঘটনাটি পূর্ব পরিকল্পিত। যে কারণে ঘটনার দিন খুলনার তিন যুবদল নেতা চৌধুরী শফিকুল ইসলাম হোসেন, মাহবুব হাসান পিয়ারু, শামীম কবীর ও বাগেরহাটের এক যুবদল নেতাকে ওই ঘটনায় আসামি করা হয়েছে। অথচ তারা খুলনা ও বাগেরহাটে ছিল। এতেই প্রমাণিত হয়েছে এ সরকার পরিকল্পিতভাবে সারা দেশে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর নতুন করে দমন, নিপীড়ন, হামলা, মামলা ও ধরপাকড়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে। উদ্দেশ্য একটাই অবৈধ সরকারের ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করা। বক্তারা অবিলম্বে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও গ্রেফতারকৃত সকল নেতৃবৃন্দের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি করেন। বক্তরা আরও বলেন, বিএনপি এ দেশের জনমানুষের দল হিসেবে বসে থাকতে পারে না। সে কারণে একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি আন্দোলন সংগ্রামের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিচ্ছে। কেননা বিএনপিই একমাত্র রাজনৈতিক দল, যে দল জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে রাজপথে আন্দোলন গড়ে তুলতে পারে। তাই জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে এবং দুর্র্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে বিএনপির সকল স্তরের নেতা-কর্মীদের এখন থেকে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলার বিকল্প নেই। নেতৃবৃন্দ বলেন, যে কোনো সময় চূড়ান্ত আন্দোলনের ডাক আসতে পারে, সে জন্য সকলকে প্রস্তুত থাকতে হবে। খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক এমপি নজরুল ইসলাম মঞ্জুর সভাপতিত্বে সভায় বক্তৃতা করেন জেলা বিএনপির সভাপতি এস এম শফিকুল আলম মনা, খুলনা মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র মনিরুজ্জামান মনি, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমীর এজাজ খান, বিএনপি নেতা শেখ মুশাররফ হোসেন, অধ্যক্ষ তরিকুল ইসলাম, শেখ আব্দুর রশিদ, অধ্যাপক আরিফুজ্জামান অপু, শেখ আবু হোসেন বাবু, সিরাজুল হক নান্নু, কামরুজ্জামান টুকু, সৈয়দা রেহানা ঈসা, অ্যাডভোকেট তসলিমা খাতুন ছন্দা, মোল্লা এনামুল কবীর, শরিফুল ইমলাম প্রমুখ। সমাবেশ পরিচালনা করেন বিএনপি নেতা ওয়াহেদুজ্জামান রানা ও সাজ্জাদ বাহসান পরাগ। অনুষ্ঠানের শুরুতে কুরআন তিলাওয়াত করেন মাওলানা আব্দুল গফ্ফার।