ঝিনাইদহে জাল ভোটার আইডি বানিয়ে জমি রেজিস্ট্রির অভিযোগ

0

আসিফ কাজল, ঝিনাইদহ ॥ ভুয়া দাতা সাজিয়ে ১১ লাখ টাকা মূল্যের ১০ শতক জমি রেজিস্ট্রি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঝিনাইদহ সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিস থেকে চক্রটির নামজারি কেস বাতিল করা হয়েছে।
অভিযোগ পাওয়া গেছে, বন্ধুত্ব ও এক সঙ্গে বিদেশ থাকার সুযোগ নিয়ে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার মোবারকপুর গ্রামের আব্দুল লতিফ ব্যাপারীর ছেলে রফিকুলের ১০ শতক জমি জালিয়াতির মাধ্যমে রেজিস্ট্রি করে নেন একই এলাকার জিয়ানগর গ্রামের চাঁদ মিয়ার ছেলে আবুল হোসেন। রফিকুল ইসলাম আত্মীয়তার সূত্র ধরে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ২৪৭ পদ্মাকর মৌজার হাটগোপলপুর এলাকায় ৪৮৩ নং দাগে ১০ শতক জমি কেনেন। এই জমি ২০১৮ সালে বৈধ কাগজপত্রের বুনিয়াদে রফিকুলের কাছ থেকে শৈলকুপার লক্ষণদিয়া গ্রামের মাহবুব হোসেনের ছেলে মোদাচ্ছের হোসেন ও তার স্ত্রী স্বপ্না খাতুন কিনে নেন। জমি কেনার পর মোদাচ্ছের হোসেন বাড়ি তৈরি করার উদ্যোগ নিলে প্রতারক আবুল হোসেন ও হাটগোপালপুর এলাকার একটি জালিয়াতি চক্র নানা ভাবে বাধা প্রদান করতে থাকে। এদিকে আবুল হোসেন ২০১৩ সালের ১৫ মে রফিকুলের মালিকানাধীন ওই জমি ভুয়া দাতা সাজিয়ে একটি দলিল করেন নং ৩৯৬৯। ওই দলিলে রফিকুলের ভোটার আইডি দেখানো হয়েছে ৪৪১১৯১৩৩৬৫৪৩৩। আর গ্রহীতা আবুলের আইডি দেখানো হয়েছে ১৯৬৫ ৬৭১০৪৬৯০২২৮৮৯।
তথ্য নিয়ে জানা গেছে, রফিকুল দীর্ঘদিন বিদেশ থাকার কারণে তার কোনো ভোটার আইডি ছিল না। তার বিএ-০৫৭০০৫৮ নাম্বারের পাসপোর্ট দিয়ে মোদাচ্ছের হোসেনের কাছে জমি রেজিস্ট্রি করেন। অভিযোগ পাওয়া গেছে, আবুলের কেনা জাল ও ভুয়া দলিলে রফিকুলের যে ভোটার আইডি ব্যাবহার করা হয়েছে তার প্রকৃত নাম জহুরুল ইসলাম। তিনি সদর উপজেলার ধননঞ্জয়পুর গ্রামের দুখি বিশ্বাসের ছেলে। ভুয়া দলিলে সাক্ষী হয়েছেন তিওরদা গ্রামের সমর আলীর ছেলে আব্দুল খালেক ও নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার মোবারকপুর গ্রামের আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে সাইদ। দলিলের লেখক হিসেবে পাগলাকানাই ইউনিয়নের ভড়–য়াপাড়া গ্রামের ছাব্দার হোসেন।
জমির বর্তমান মালিক মোদাচ্ছের হোসেন ও তার স্ত্রী স্বপ্না খাতুন জানান, প্রতারক আবুল হোসেন ঝিনাইদহ সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসে রফিকুলের নামজারি কেস (২৭৪১) বাতিল করার জন্য আবেদন করেন। খবর পেয়ে মোদাচ্ছের হোসেন ও তার স্ত্রী স্বপ্না খাতুন ওই মামলায় পক্ষভুক্ত হয়ে শুনানীতে অংশগ্রহণ করেন এবং আবুলের সব জাল কাগজপত্র দাখিল করেন। একাধিকবার শুনানীর দিন ধার্য হলেও প্রতারক আবুল তার সঠিক কাগজপত্র এমনকি মূল দলিল দেখাতে ব্যর্থ হন। ফলে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবুলের নামজারি কেস বাতিল করে পদ্মকার ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তাকে রেকর্ড সংশোধনের জন্য নিদের্শ দেন।