ভিএআরে বাতিল মেসির গোল, আর্জেন্টিনার হোঁচট

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ বাধভাঙা উল্লাসে সতীর্থদের নিয়ে গোল উদযাপন করলেন লিওনেল মেসি। ডি বক্সের ভেতর থেকে প্লেসিং শটে তার বল জালে জড়ানোর পর মিনিটখানেকের মতো সময় পেরিয়ে গেছে। দলের সেরা খেলোয়াড়ের গোলে এগিয়ে যাওয়ায় আনন্দে মতোয়ারা তখন আর্জেন্টিনার ডাগ আউট। কিন্তু গোলের প্রায় আরও এক মিনিট আগের এক ‘ফাউল’ ভিএআরে ধরা পড়ায় উৎসব রূপ নিলো হতাশায়। গোলবঞ্চিত হলেন মেসি, আর পয়েন্ট খোয়ালো আর্জেন্টিনা। লাতিন আমেরিকার বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ঘরের মাঠে প্যারাগুয়ের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করেছে আলবিসেলেস্তেরা। দুটো গোলই হয়েছে প্রথমার্ধে। শুরুতে আনহেল রোমেরোর পেনাল্টি গোলে পিছিয়ে পড়া আর্জেন্টিনা সমতায় ফেরে নিকোলাস গনসালেসের হেডে। বোকা জুনিয়র্সের মাঠ লা বোম্বোনেরার ড্রতে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠে গেছে আর্জেন্টিনা। ৩ ম্যাচে তাদের পয়েন্ট ৭। এক ম্যাচ কম খেলা ব্রাজিল দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ৬ পয়েন্ট নিয়ে।
নিজেদের মাঠ হলেও শুরুতে আর্জেন্টিনার খেলায় সেটি বোঝার উপায় ছিল না। প্রথম কয়েক মিনিটের মধ্যে দুই-তিনবার স্বাগতিকদের মনে কাঁপন ধরিয়ে দিয়েছিল প্যারাগুয়ে। অবশ্য গুছিয়ে উঠতে খুব বেশি সময় লাগেনি দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের। ৩-৪-৩ ছকে লিওনেল স্কলানি আক্রমণাত্মক একাদশই সাজিয়েছিলেন। যদিও আক্রমণে উঠে প্যারাগুয়ের রক্ষণে আটকে যাচ্ছিল বারবার। বিপরীতে নিজেদের রক্ষণ বাঁচিয়ে কাউন্টার অ্যাটাকিং ফুটবল খেলছিল সফরকারীরা। তেমনই একটি প্রতিআক্রমণ থেকে পেনাল্টি আদায় করে নেয় তারা। আর্জেন্টিনার দুই খেলোয়াড়ের ফাঁক গলে বল নিয়ে বেরিয়ে গিয়েছিলেন মিগুয়েল আলমিরোন। নিজেদের সীমানায় তাকে আটকাতে গিয়ে ফাউল করে বসেন লুকাস মার্তিনেজ। রেফারি সঙ্গে সঙ্গে বাজান পেনাল্টির বাঁশি। স্পট কিক নিতে আসা আনহেল রোমেরো স্বাগতিক গোলকিপার ফাঙ্কো আরমানিকে কোনও সুযোগই দেননি। বুদ্ধিদীপ্ত শটে বল জালে জড়িয়ে এগিয়ে নেন প্যারাগুয়েকে। ম্যাচ ঘড়ির কাঁটা পেরিয়েছে তখন ২১ মিনিট।
গোলশোধে মরিয়া আর্জেন্টিনা আক্রমণে গতি বাড়িয়ে বেশ কয়েকটি সুযোগও তৈরি করেছিল। যদিও কাঙ্ক্ষিত সাফল্য আসছিল না। অবশেষে বিরতিতে যাওয়ার আগে স্কোরলাইন ১-১ করতে পারে নিকোলাস গনসালেসের দুর্দান্ত হেডে। মিডফিল্ডার পালাসিয়োসের চোটে ২৯ মিনিটে মাঠে নামা জিওভানি লো সেলসোর কর্নার থেকে উড়ে আসা বলে লাফিয়ে হেড করে ৪১তম মিনিটে আলবিসেলেস্তেদের সমতায় ফেরান গনসালেস। এরপর এগিয়ে যাওয়ারও সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল রোদ্রিগো ডি পলের বুলেট গতি শটে। যদিও প্যারাগুয়ে গোলরক্ষক ঝাঁপিয়ে প্রতিহত করলে ব্যবধান বাড়েনি আর্জেন্টিনার। বুয়েনস এইরিসের ম্যাচে ২টি গোল হলেও সবচেয়ে বড় ঘটনা হয়ে থাকলো ভিএআরে মেসির গোল বাতিল হওয়া। ৫৮ মিনিটে লো সেলসোর পাস থেকে বার্সেলোনা অধিনায়কের গোলটি বাতিল না হলে ম্যাচের দৃশ্যপট একেবারেই পাল্টে যেত। তবে মেসি ও আর্জেন্টিনা উদযাপন করলেও এই গোলের উৎসে রোমেরোকে আগেই ফাউল করেছিলেন দমিনগেজ। বেশ খানিক সময় ভিএআর পরীক্ষা শেষে গোলটি বাতিল করেন ফিল্ড রেফারি। এরপর ৭৩ মিনিটে আরেকবার হতাশ হতে হয় মেসিকে। তার নেওয়া চমৎকার ফ্রি কিক প্যারাগুয়ে গোলকিপার ঝাঁপিয়ে প্রতিহত করলে বল গিয়ে আঘাত করে বারে। এবারও এগিয়ে যাওয়া হয়নি আর্জেন্টিনার। এরপর লাউতারো মার্তিনেজ, আনহেল ডি মারিয়া, গনসালেসের চেষ্টাও ব্যর্থ হলে কাতার বিশ্বকাপ বাছাইয়ে প্রথমবার পয়েন্ট ভাগাভাগি করে মাঠ ছাড়তে হয় আর্জেন্টিনাকে।