দুলাভাইকে হত্যা : পুলিশ সদস্য রিমান্ডে

0

সাতক্ষীরা সংবাদদাতা॥ সাতক্ষীরায় দুলাভাইকে হত্যার অভিযোগে গ্রেফতার পুলিশ সদস্য আরিফুল ইসলামের দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। মঙ্গলবার (১০ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে সাতক্ষীরা আদালতের বিচারক ইয়াসমিন নাহার এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পুলিশ সদস্য আরিফুল ইসলাম সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার বন্দকাটি গ্রামের মৃত আরশাদ আলী মোড়লের ছেলে। তিনি মাগুরার শালিখা থানার হাজরাহাটি পুলিশ ক্যাম্পে কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সাতক্ষীরা আদালত পুলিশের পরিদর্শক অমল কুমার রায় জানান, কালিগঞ্জ থানার নীলকণ্ঠপুর গ্রামের ইটভাটা শ্রমিক আবিদ হোসেন বাবু হত্যা মামলায় আরিফুল ইসলামের সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জিয়ারত আলী। শুনানি শেষে বিচারক দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, চলতি বছরের ৩ মার্চ কালিগঞ্জ উপজেলার বন্দকাটি গ্রামের আরশাদ আলী মোড়লের বিধবা মেয়ে দুই সন্তানের জননী সাবিনাকে বিয়ে করেন পার্শ্ববর্তী নীলকণ্ঠপুর গ্রামের রহিম মোল্লার ছেলে আবিদ হোসেন বাবু। বিয়ের পর বাবু শ্বশুরবাড়িতেই থাকতেন। সম্প্রতি সাবেক স্বামী ফারুকের ফুফাতো ভাই লাভলুর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কে জাড়িয়ে পড়েন সাবিনা। এরপর ইটভাটা শ্রমিক বাবুর সঙ্গে সাবিনার সম্পর্কের অবনতি ঘটে। কবিননামার দেড় লাখ টাকা দিয়ে বাবুকে তালাক দেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করে আসছিল সাবিনা ও তার পুলিশ সদস্য ভাই আরিফুল ইসলামসহ পরিবারের সদস্যরা। এরই জের ধরে গত ৩ নভেম্বর ভোরে বাবুকে নির্যাতন করে হত্যার পর মরদেহ পুকুরের পাশে লেবু গাছের ডালে ঝুলিয়ে রাখা হয়। সাবিনার ভাই পুলিশ সদস্য আরিফুল গত ২৮ অক্টোবর ছয়দিনের ছুটিতে বাড়িতে এসে এ হত্যাকাণ্ড ঘটান।
এদিকে এ ঘটনায় ৩ নভেম্বর রাতেই নিহত আবিদ হোসেন বাবুর মা হোসনে আরা খাতুন বাদী হয়ে সাবিনা, আরিফুল ইসলামসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ করে কালিগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলার পর গ্রেফতার করা হয় সাবিনাকে। সাবিনা ৪ নভেম্বর আদালতে বাবু হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে তার ভাই পুলিশ সদস্য আরিফুলসহ জড়িতদের নাম উল্লেখ করে। এরপর পুলিশ সদস্য আরিফুলকে কর্মস্থল থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কালিগঞ্জ থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) জিয়ারত আলী জানান, পুলিশ সদস্য আরিফুলকে কর্মস্থল থেকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে সাতদিনের রিমান্ড আবেদন জানানো হয়। দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে বলে শুনেছি। আদালতের আদেশ হাতে পাওয়ার পর রিমান্ডের জন্য তাকে থানা হেফাজতে নেয়া হবে। কালিগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোওয়ার হোসেন বলেন, পরিকল্পিতভাবে পরিবারের সদস্যরা মিলে আবিদ হোসেন বাবুকে হত্যা করেন। হত্যা মামলায় তার স্ত্রী ও শ্যালককে গ্রেফতার করা হয়েছে। স্ত্রী হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। এছাড়াও জানিয়েছেন- তার ভাই পুলিশ সদস্য আরিফুল ইসলামও ঘটনায় জড়িত। তাকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারে কাজ করছে পুলিশ।