জনগণের মন থেকে জিয়াউর রহমানের ইতিহাস ও অবদানকে মুছে ফেলা যাবে না : যশোরে আলোচনা সভায় অনিন্দ্য ইসলাম অমিত

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোরে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের আলোচনা সভায় বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ও কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেছেন, ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর যেভাবে সিপাহী জনতা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশের ঐতিহাসিক প্রয়োজনে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে বন্দিদশা থেকে মুক্ত করেছিলেন, দেশ ও জাতির আরেকটি ঐতিহাসিক প্রয়োজনে জাতির কাঁধে জগদ্দল পাথরের মত চেপে বসা আওয়ামী সরকারের পতন নিশ্চিত করতে হবে। যার মধ্য দিয়ে জনগণ স্বৈরাচারী ফ্যাসিবাদীর আগ্রাসন থেকে মুক্তি পাবে। জনগণ ফিরে পাবে তাদের ভোট-ভাতসহ সকল মৌলিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার। নিষ্কন্টক হবে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব। গতকাল শনিবার জেলা বিএনপির আয়োজনে দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
আলোচনা সভায় অনিন্দ্য ইসলাম অমিত আরও বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত জনগণ শোষিত নির্যাতিত হয়েছিল। এ থেকে মুক্তি পেতে তার মুক্তিসেনা হিসেবে জিয়াউর রহমানকে চিনতে ভুল করেনি। তাই ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর জিয়াউর রহমানকে সিপাহী জনতা বন্দিদশা থেকে মুক্ত করে তার হাতে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব তুলে দিয়েছিল। সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশ সেদিন দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র থেকে মুক্তি পেয়েছিল। নতুন রূপে ফিরে পেয়েছিল স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব। সেদিন জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় বসে বাকশালকে হটিয়ে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আজ কথায় কথায় যারা জিয়াউর রহমানকে নিয়ে বিষোদ্গার করেন, সেদিন তাদের রাজনীতি করার বৈধতা দিয়েছিলেন তিনি। সেদিন জনগণের বাক-স্বাধীনতাসহ সকল মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন জিয়াউর রহমান। সংবাদপত্র তার স্বাধীনতা ফিরে পেয়েছিল। অথচ, সনির্ভর দেশ গড়ার কারিগর জিয়াউর রহমানকে খুলি আখ্যা দিয়ে আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে চায়। কিন্তু জনগণ প্রকৃত ইতিহাস জানে, মহানস্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে শুরু করে দেশ পুনর্গঠনে জিয়াউর রহমানের কি অবদান ছিল। আওয়ামী লীগের চরিত্রই হলো ইতিহাস বিকৃতির। তাই তারা শহীদ জিয়ার অবদানকে মুছে ফেলতে চায়। কিন্তু জনগণের মন থেকে কোনদিনই জিয়াউর রহমানের সংগামী ইতিহাস ও তার অবিস্মরণীয় অবদান মুছে ফেলা যাবে না। যতদিন বাঙালি জাতি বেঁচে থাকবে ততদিন জিয়াউর রহমানের কীর্তি অমর হয়ে থাকবে। আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তৃতায় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগম বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে দেশ ও জাতিকে মুক্ত করেছিলেন বর্তমান ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনা সরকার সেই পরাধীনতার শৃঙ্খলে দেশ ও জাতিকে বন্দি করে রেখেছে। এ থেকে মুক্তি পেতে হলে ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরের চেতনা ধারণ করে আরেকটি বিপ্লবের মাধ্যমে স্বৈরাচারের পতন নিশ্চিত করতে হবে। ফিরিয়ে আনতে হবে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা। প্রতিষ্ঠা করতে হবে জনগণের সরকার।
আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাড. সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আব্দুস সালাম আজাদ, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি নূর-উন-নবী, নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মুনির আহমেদ সিদ্দিকী বাচ্চু, জেলা যুবদলের সভাপতি এম তমাল আহমেদ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা আমির ফয়সাল, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান বাপ্পি, জেলা তাঁতী দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুদুর রহমান প্রমুখ। আলোচনা সভা পরিচালনা করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য অ্যাড. হাজী আনিছুর রহমান মুকুল। পরে দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানে জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামসহ প্রয়াত সকল নেতা-কর্মীদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও মুনাজাত করা হয়। পাশাপাশি গুরুতর অসুস্থ দলের চেয়ারপার্সন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করে এবং দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করা হয়। এছাড়াও অসুস্থ জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাড. রুহুল কবির রিজভি আহমেদসহ দলের অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের অসুৃস্থ নেতা-কর্মীর সুস্থতা কামনা করা করা হয়। দোয়া ও মুনাজাত পরিচালনা করেন সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী আজম।