মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দড়াটানা মসজিদে দোয়া মাহফিল: তরিকুল ইসলাম আলেম সমাজের পাশাপাশি মসজিদ ও মাদরাসার খেদমত করে গেছেন

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য, সাবেক মন্ত্রী, বরেণ্য রাজনীতিক মরহুম তরিকুল ইসলামের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে পরিবারের আয়োজনে দোয়া মাহফিল হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বাদ আসর যশোর শহরের ঐতিহ্যবাহী দড়াটানা জামে মসজিদে এ দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
দোয়া মাহফিলে যশোরের শীর্ষ স্থানীয় আলেমরা আলোচনায় অংশ নেন। আলোচনায় উলামায়ে কেরামগণ বলেন, মরহুম তরিকুল ইসলাম জীবদ্দশায় শুধু দেশ ও জনগণের খেদমত করে যাননি, তিনি এ দেশের আলেম সমাজের পাশাপাশি মসজিদ-মাদরাসার খেদমত করে গেছেন। জাতীয়তাবাদী আদর্শের পাশাপাশি ইসলামী মূল্যবোধের চেতনার গণমানুষের নেতা ছিলেন তিনি। দেশের শীর্ষ স্থানীয় দ্বীনি প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত দড়াটানা মাদরাসার উন্নয়নে তাঁর পরিবারের বিশেষ অবদান রয়েছে। বিশেষ করে তাঁর পিতা মরহুম আব্দুল আজিজ ও তাঁর সন্তানরা এ প্রতিষ্ঠানটির উন্নয়নে সার্বিক সহযোগিতা করে আসছেন। মরহুম তরিকুল ইসলাম যতবার মন্ত্রী ও এমপি হয়েছেন ততবার এই যশোরের বিভিন্ন মসজিদ-মাদরাসার পাশে দাঁড়িয়েছেন।
উলামায়ে কেরামগণ বলেন, দুনিয়ার জিন্দেগিতে মানুষের এমন কিছু আমল আছে যে আমলের সুফল মৃত্যুর পরও কেয়ামত পর্যন্ত চলমান থাকে। সেটি হচ্ছে সদকায়ে জারিয়া। দুনিয়ায় যারা সদকায়ে জারিয়ার মতো আমল করে যাবে মৃত্যুর পর কবরে তথা তার আমলনামায় সওয়াব যেতে থাকবে। তরিকুল ইসলাম সেই কাজটি করে গেছেন। তিনি আলেমদের কাছে গেছেন। মানুষের সেবা করেছেন। এজন্য আল্লাহ তাঁকে শান্তিতে রেখেছেন বলে আমরা বিশ্বাস করতে পারি। মরহুম তরিকুল ইসলামের বর্ণাঢ্য জীবনের কিছু উল্লেখযোগ্য দিক তুলে ধরে দড়াটানা মাদরাসার মুহাদ্দিস সিরাজুল ইসলাম বলেন, তিনি একজন বিশাল মানবিক গুণের মানুষ ছিলেন। তাঁর হাত ধরেই এই যশোরের উন্নয়ন হয়েছে। তাঁকে শুধু যশোরের মানুষই স্মরণ করেন না, এই যশোরের প্রতিটি ইট-বালুকণা পর্যন্ত স্মরণ করে। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ছাড়াও তিনি অসহায় মানুষের খেদমত করে গেছেন। যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের উন্নতিসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন। তাই দুনিয়ায় যারা এ ধরনের কাজ করেন আল্লাহ তায়ালা পরকালে তাদের ঠিকই প্রতিদান দিবেন। তিনি তরিকুল ইসলামের আত্মার মাগফিরাত কামনাসহ তাঁর সন্তানসহ পরিবারের সদস্যদের দীর্ঘায়ূ কামনা করেন।
দোয়াপূর্ব আলোচনায় দড়াটানা মসজিদের খতিব মাওলানা মাওলানা আমানুল্লাহ বলেন, তরিকুল ইসলাম ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসীর লোক ছিলেন। তিনি আলেমদের খুব সম্মান করতেন। তাঁরই মত এখন আলেমদের খুব কাছাকাছি চলে এসেছেন তাঁর সুযোগ্য পুত্র অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। তিনি ইতিমধ্যে এই অঞ্চলের গণমানুষের নেতা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন। তার নেক মকসুদের প্রতিদান হিসেবে আল্লাহ তাকে আরও সম্মানিত করবেন বলে আমরা দোয়া করি। তিনি বলেন, তরিকুল ইসলাম যে ইসলামী মূল্যবোধের বিশ্বাসী ছিলেন তার অসংখ্য নজির রয়েছে। এরমধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা হচ্ছে তিনি যখন ডাক ও টেলি যোগাযোগ মন্ত্রী ছিলেন, তখন ডাক টিকিটের মধ্যে মুন্সী মেহেরুল্লাহর ছবি দিয়ে প্রশংসিত হয়েছিলেন। তিনি আরও বলেন, দুনিয়ার জিন্দেগি খুবই ক্ষণস্থায়ী। আল্লাহর কাছে যার মূল্য কিছুই নেই। যে মানুষ দুনিয়ায় ভালো কাজ করে যাবেন, সে ব্যক্তি আখেরাতের জিন্দেগিতে তার প্রতিদান পাবেন। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাঁকে পরকালে এর পুরস্কার দেবেন, শান্তিতে রাখবেন।আলোচনা শেষে মরহুম তরিকুল ইসলাম ও তাঁর পরিবারের মৃত্যুবরণকারী স্বজনদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া করা হয়। দোয়া পরিচালনা করেন দড়াটানা জামে মসজিদের খতিব মাওলানা মো. আমানুল্লাহ আমান। দোয়া মাহফিলে মরহুমের পরিবারের সদস্য, আত্মীয়-স্বজন, শুভাকাঙ্খীসহ যশোরের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, পেশাজীবী, সাংস্কৃতিক, সাংবাদিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও নানা শ্রেণিপেশার মানুষ অংশ নেন।