যশোরে পাওনা টাকা নিয়ে পিতা খুন, পুত্র আহত

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোর শহরের পুরাতন কসবা ঘোষপাড়ায় গতকাল মঙ্গলবার দুর্র্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে পিতাপুত্র হতাহত হয়েছেন। পাওনা টাকা দেওয়ার কথা বলে ডেকে নিয়ে তাদের ছুরিকাঘাত করে দুর্বৃত্তরা। নিহতের নাম আব্দুল কুদ্দুস (৫০)। তিনি সদর উপজেলার নওদাগা গ্রামের কাঠি খানের ছেলে। যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক শরিফুল আলম খানের ব্যক্তিগত গাড়িচালক ছিলেন তিনি। আহত হয়েছেন আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে বিপ্লব হোসেন (২৬)। আহত বিপ্লব হোসেন জানান, শহরের পুরাতন কসবা আমবাগান এলাকার সেলিম ৬ মাস আগে দুধের ব্যবসা করার কথা বলে তার কাছে স্ত্রীর সোনার অলঙ্কার বন্ধক রেখে ৪৪ হাজার টাকা নেয়। কিন্তু এরপর সে আর সোনার অলঙ্কার ফেরত নেয়নি, পাওনা ৪৪ হাজার টাকাও ফেরত দেয়নি। টাকা চাইলে সে তাকে বিভিন্নভাবে ঘোরাতে থাকে। সর্বশেষ গতকাল বিকেল তিনটার দিকে মোবাইল ফোন করে সে পাওনা ৪৪ হাজার টাকা নেওয়ার জন্য তাকে ঘোষপাড়া মসজিদের পাশে যেতে বলে। তার পিতা আব্দুল কুদ্দুস এ কথা জানতে পেরে সাইকেল নিয়ে ঘোষপাড়ার উদ্দেশ্যে রওনা হন। পরে তিনি (বিপ্লব) একটি ইজিবাইকে করে ঘোষপাড়ার দিকে যেতে থাকেন। বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে ঘোষপাড়া মসজিদের কাছে পৌঁছালে তিনি ইজিবাইকে বসে দেখতে পান, তার পিতাকে মারধর করছে সেলিম ও আমবাগান এলাকার স¤্রাট। ফলে তিনি চলন্ত ইজিবাইক থেকে নেমে দৌড়ে পিতাকে রক্ষা করতে ছুটে যান। কিন্তু এরই মধ্যে স¤্রাট তার পিতার বুকের বিভিন্ন স্থানে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে। এ সময় সেলিম ও আমবাগান এলাকার পাইপ শফি তার পিতার দুই হাত ধরে রেখেছিলো। এরপর তিনি সেখানে পৌঁছালে তাকেও ছুরিকাঘাত করে স¤্রাট। পরে সেলিম, স¤্রাট ও পাইপ শফি সেখান থেকে চলে যায়।
স্বজনেরা জানান, আশেপাশের লোকজন গুরুতর জখম পিতা-পুত্রকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় আব্দুল কুদ্দুসকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যান চিকিৎসকরা। কিন্তু সেখানেই রাত সাতটার দিকে মারা যান আব্দুল কুদ্দুস।
আহত বিপ্লব হোসেনের এক খালা জানান, বিপ্লব পাওনা টাকা চাওয়ায় কিছুদিন আগে তাকে ইয়াবা দিয়ে পুলিশে ধরিয়ে দিয়েছিলো সেলিম। পাঁচদিন আগে বিপ্লব কারাগার থেকে জামিনে বেরিয়ে এসেছেন। এরপর টাকা চাওয়ায় সেলিম পরিকল্পিতভাবে তার সহযোগীদের দিয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম জানান, ছুরিকাঘাতে পিতা-পুত্র হতাহতের ঘটনাটি তার জানা নেই। অপরদিকে কোতয়ালি থানা পুলিশের ওসি মো. মনিরুজ্জামান ও ইনসপেক্টর (তদন্ত) শেখ তাসমীম আলমকে মোবাইল ফোন করা হলে রিসিভ না করায় এ বিষয়ে তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।