সুপার ওভারে পাকিস্তানকে হারালো জিম্বাবুয়ে

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ সেঞ্চুরির জবাবে সেঞ্চুরি। ৫ উইকেটের জবাবে ৫ উইকেট। একটা ম্যাচে উত্তেজনা বলতে যা বোঝায় সবই হলো রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তান-জিম্বাবুয়ের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডের শ্বাসরুদ্ধকর ‘টাই’য়ে। মূল ম্যাচে সমানে সমান লড়াই হলেও ফল নিষ্পত্তির সুপার ওভারটা হলো শুধু জিম্বাবুয়ের। ব্লেসিং মুজারাবানির দুর্দান্ত বোলিংয়ে দুর্দান্ত জয়ে হোয়াইটওয়াশ এড়িয়েছে সফরকারীরা। শন উইলিয়ামসের হার না মানা ১১৮ রানে ভর দিয়ে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে ২৭৮ রান করে জিম্বাবুয়ে। ১০ ওভারে মাত্র ২৬ রান দিয়ে ৫ উইকেট নেন মোহাম্মদ হাসনাইন। অন্যদিকে চাপের মধ্যে বাবর আজম ১২৫ রানের দারুণ এক ইনিংস খেললে ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে পাকিস্তানেরও ইনিংস শেষ হয় ২৭৮ রানে। ‘টাই’ হওয়া ম্যাচ সুপার ওভারে গেলে মূল ম্যাচে ১০ ওভারে ৪৯ রান দিয়ে ৫ উইকেট নেওয়া মুজারাবানির বিষাক্ত পেসে অসাধারণ এক জয় পায় জিম্বাবুয়ে। তবে আগেই সিরিজ নিশ্চিত করা পাকিস্তান সিরিজ শেষ করলো ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে।
রাওয়ালপিন্ডিতে ২৭৯ রানের লক্ষ্যে পাকিস্তানের শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি। ৬ রানের মধ্যে দুই ওপেনার ইমাম-উল-হক (৪) ও ফখর জামান (২) বিদায় নেওয়ার পর ব্যর্থতার মিছিলে যোগ দেন হায়দার আলী (১৩), মোহাম্মদ রিজওয়ান (১০) ও ইফতিখার আহমেদ (১৮)। তাতে ৮৮ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বিপর্যস্ত স্বাগতিকরা। ধুঁকতে থাকা পাকিস্তানকে ওই জায়গা থেকে পথে ফেরান অধিনায়ক বাবর ও খুশদিল শাহ। ষষ্ঠ উইকেটে তারা যোগ করেন ৬৩ রান। তবে খুশদিল ৪৮ বলে ৩৩ রানে প্যাভিলিয়নে ফিরলে আবার চাপে পড়ে পাকিস্তান। অবশ্য ওয়াহাব রিয়াজ ব্যাটসম্যান হয়ে দাঁড়িয়ে গিয়ে বাবরের সঙ্গে গড়েন বড় জুটি। এই পেসার ব্যাট হাতে হাফসেঞ্চুরি পূরণ করে ৫৬ বলে খেলেন ৫২ রানের কার্যকরী ইনিংস। অন্যদিকে সাবলীল ব্যাটিংয়ে সত্যিকারের অধিনায়কের মতো সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন বাবর। পূরণ করেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ১১তম সেঞ্চুরি। তার দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে শেষ ২ ওভারে জিততে পাকিস্তানের দরকার পড়ে ২০ রান, হাতে তখনও ৩ উইকেট। কিন্তু মুজারাবানি পরপর শাহীন আফ্রিদি (২) ও বাবরকে প্যাভিলিয়নে ফেরালে জমে যায় ম্যাচ। পাকিস্তানি অধিনায়ক ১২৫ বলে ১৩ চার ও ১ ছক্কায় করেন ১২৫ রান।
শেষ ওভারে পাকিস্তানের দরকার পড়ে ১২ রান, হাতে ১ উইকেট। মোহাম্মদ মুসা প্রথম বলেই বাউন্ডারি হাঁকালে স্বস্তি ফেরে পাকিস্তান ক্যাম্পে। কিন্তু পরের চার বলে মাত্র ৪ এলে শেষ বলে দরকার হয় ৫ রান। মুসা চার মারলে ম্যাচ হয় ‘টাই’। ফল নিষ্পত্তিতে খেলা সুপার ওভারে গড়ালে জয়ের হাসি হাসে জিম্বাবুয়ে। ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতা মুজারাবানি প্রথম ও চতুর্থ বলে ইফতিখার ও খুলশিদকে আউট করলে ৪ বলে পাকিস্তান করতে পারে মাত্র ২ রান। ৩ বলেই সেই লক্ষ্য টপকে শ্বাসরুদ্ধরকর এক জয় পায় আফ্রিকার দেশটি। এর আগে মূল ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা জিম্বাবুয়ের শুরুটাও ছিল বাজে। ২২ রানে হারায় তারা টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যান- চামু চিবাবা (০), ক্রেগ আরভিন (১) ও ব্রায়ান চারিকে (৯)। ওই জায়গা থেকে প্রতিরোধ শুরু ব্রেন্ডন টেলর ও উইলিয়ামসের। টেলর ৫৬ রানে আউট হলেও সেঞ্চুরি পূরণ করেন উইলিয়ামস। জিম্বাবুইয়েন ব্যাটসম্যান ১৩৫ বলে ১৩ বাউন্ডারি ও ১ ছক্কায় অপরাজিত থাকেন ১১৮ রানে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
জিম্বাবুয়ে: ৫০ ওভারে ২৭৮/৬ (উইলিয়ামস ১১৮, টেলর ৫৬, সিকান্দার রাজা ৪৫, ওয়েলসি মাদেভেরে ৩৩; হাসনাইন ৫/২৬, ওয়াহাব ১/৬৫)।
পাকিস্তান: ৫০ ওভারে ২৭৮/৯ (বাবর ১২৫, ওয়াহাব ৫২, খুশদিল ৩৩, ইফতিখার ১৮; মুজারাবানি ৫/৪৯, ডোনাল্ড তিরিপানো ২/৩৯, রিচার্ড এনগারাভা ২/৬২)।
ফল: ম্যাচ টাই (জিম্বাবুয়ে সুপার ওভারে জয়ী)।
সিরিজ: তিন ম্যাচের সিরিজ পাকিস্তান ২-১ ব্যবধানে জয়ী।
ম্যাচসেরা: ব্লেসিং মুজারাবানি।
সিরিজসেরা: বাবর আজম।