ঝিকরগাছায় রহস্যজনক অগ্নিদগ্ধ শিশু সোহান মারা গেছে

0

তরিকুল ইসলাম, ঝিকরগাছা (যশোর) ॥ ঝিকরগাছা উপজেলার শংকরপুর ইউনিয়নের বাকুড়া গ্রামে দগ্ধ হওয়া সেই শিশু আল-আমিন সোহান (৫) অবশেষে শুক্রবার বিকেলে মারা গেছে। গত ৭ অক্টোবর রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় রহস্যজনকভাবে অগ্নিদগ্ধের শিকার হয়েছিল ওই শিশু। ওই রাতেই তাকে পরিবারের লোকজন যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। গুরুতর অবস্থা হওয়ায় ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে রেফার করা হয়েছিল শিশু সোহানকে। কিছুটা সুস্থ হলে গত ১৮ অক্টোবর শিশুটির নানি সকিরন নেছা তাকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। বাড়িতে থেকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার বিকেলে তার মৃত্যু হয়।
এদিকে আদালতে বাবা দাউদ সরদার ও নানি সকিরন নেছার দায়ের করা পৃথক দুটি মামলা রয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় শিশু সোহানের মৃত্যুর খবর পেয়ে বাঁকড়া আইসি ক্যাম্পের এস আই হাফিজ ও পিবিআইয়ের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে রয়েছেন বলে জানা গেছে। শিশুটির বাবা দাউদ সরদার জানান, একই মশারির নিচে ঘুমিয়ে থাকা শিশু সোহান পুড়ে গেলেও তার নানি সকিরন নেছা অখ্যাত থাকায় তিনি আদালতে মামলা করেছেন।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, শিশুটির জন্মের পর অপহরণ ও হত্যার ঘটনায় ২০১৫ সালে সকিরন নেছার দায়ের করা মামলায় দাউদ সরদার ৮ মাস ও তার স্কুলশিক্ষক মেয়ে রোকেয়া খাতুন ২৩ দিন জেলে খেটেছেন। জামিনে মুক্তি পেয়ে শংকরপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান ধাবক ও ইউপি সদস্য মহসিন আলীর মাধ্যমে ৬ লাখ টাকার মাধ্যমে মীমাংসা হয়েছিল। এ ঘটনার প্রায় তিন বছর পর ওই শিশু বেঁচে আছে মর্মে তার পিতৃতের দাবিতে আবারো মামলা করেন নানি সকিরন নেছা। এ সময় দাউদ সরদার তার সন্তান দাবি করলে নানি সকিরন নেছা দিতে রাজি হননি। ফলে শিশুটির বয়স ১২ বছর পর্যন্ত তার নানির হেফাজতে থাকবে মর্মে আদালত দাউদ সরদারকে এককালীন ৫ লাখ টাকা দেওয়ার নির্দেশ দেন।
সেই মোতাবেক চলতি বছরের ফেব্র“য়ারিতে দাউদ সরদার আদালতে ৫ লাখ টাকা জমা দেন। দাউদ সরদার ও তার পরিবার জানান, দু দফায় তিনি ১১ লাখ টাকা দিয়েছেন। শিশুটিকে নিয়ে তার নানা-নানি যশোর সদরের এড়েন্দা এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করেন। তারা কেউ গ্রামে থাকেন না। চলতি মাসের ৫ তারিখে ওই মামলার হাজিরা ছিলো। আগামী ১ নভেম্বর মামলার রায় হওয়ার কথা রয়েছে। ইতোমধ্যে এ ঘটনা খুবই দুঃখজনক। প্রতিবেশী অনেকেই বলেছেন, ঘটনার দিন কখন সকিরন ওই শিশুটিকে নিয়ে বাড়িতে এসেছেন তা কেউই জানেন না। তবে প্রতিবেশী শেফালী খাতুন বলেন, সন্ধ্যার বেশ কিছু পর নাতিকে সাথে নিয়ে বাড়িতে এসেছিলেন। তাকে ঘুমিয়ে রেখে শেফালীর বাড়িতে গিয়ে বেশ রাত পর্যন্ত গল্প করেছিলেন বলেও জানান তিনি। এ ব্যাপারে শিশু সোহােেনর নানি সাকিরন নেছা ০১৩০৪-৩৬২৪৮৭ যোগাযোগ করা হলে ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর গভীর রাতে ঝিকরগাছার বাকুড়া গ্রামে শিশু আল-আমিন সোহান ঘুমন্ত অবস্থায় অগ্নিদগ্ধ হয়।