মেয়ের চিকিৎসা এবং অধিকার পেতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন দিঘলিয়ার নুরজাহান

0

ফুলবাড়ীগেট (খুলনা) সংবাদদাতা ॥ অসুস্থ মেয়ে মারিয়ার (৯) চিকিৎসা এবং অধিকার ফিরে পেতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন নুরজাহান বেগম। শ্বশুরবাড়ির স্বজনরা প্রভাবশালী হওয়ায় উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত করতে হত্যাসহ বিভিন্ন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকায় অবশেষে আদালতে মামলা হয়েছে। মামলা ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে, খুলনার দিঘলিয়ার তওফিক মাসুদ মোড়লের সাথে ২০১০ সালের ৮ জানুয়ারি একই গ্রামের মৃত জিয়াদ মোড়লের মেয়ে নুরজাহানের(২৫) দেড় লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ে হয়। বিয়ের এক বছর পর তাদের সংসারে একটি মেয়ে সন্তান জন্ম নেয়। সন্তান জন্মের পর স্বামী-স্ত্রীকে আলাদা করতে নুরজাহানের শ্বশুর গোলাম মোস্তফা মোড়ল নুরজাহানসহ তিন জনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতনে মামলা দায়ের করেন।
মামলায় নুরজাহান এবং তার দুই বছরের শিশু মারিয়া জেল খেটে জামিন পান। পরবর্তিতে মামলাটি মিথ্যা প্রমাণিত হলে তারা মামলা থেকে খালাসপ্রাপ্ত হন। পুনরায় শুরু করে সুখের সংসার কিন্তু বেশি দিন সুখ সইলো না। ২০১৬ সালে স্বামী হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন এবং শ্বশুর গোলাম মোস্তফাও মারা যান। একমাত্র সন্তান মারিয়াও হৃদরোগে আক্রান্ত হয়। স্বামী ও শ্বশুরের মৃত্যুর পর শ্বশুরবাড়ির লোকজন নুরজাহান এবং তার অসুস্থ সন্তানের প্রাপ্ত অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র ও হুমকি-ধামকি দেয়। শ্বশুরের প্রচুর সম্পদ থাকা সত্ত্বেও মেয়ের হার্টের উন্নত চিকিৎসার অভাবে ধুঁকে ধুঁকে নিশ্চিত মৃত্যু মেনে নিতে পারছিলেন না নুরজাহান। মেয়েকে বাঁচাতে স্বামীর প্রাপ্য থেকে চিকিৎসার ব্যবস্থার দাবি করলে দেবর তরিকুল ইসলাম(মিঠু)গংয়ের সাথে শুরু হয় বিবাদ।
বিষয়টি নিয়ে নুরজাহান তার সন্তানকে নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন। মেয়ের অধিকার প্রতিষ্ঠায় নুরজাহান ওয়ারিশকায়েম সার্টিফিকেটের জন্য ওয়ার্ড মেম্বার ও চেয়ারম্যানের কাছে গেলে তার না দিলে দিঘলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করেন। দেবর তরিকুল ইসলাম মিঠু গং অত্যন্ত প্রভাবশালী হওয়ায় ওয়ারশকায়েম সার্টিফিকেট নিয়ে চলে টালবাহানা। নুরজাহান তার অসুস্থ মেয়ের চিকিৎসার জন্য নিরুপায় হয়ে তাদের অধিকার ফিরে পেতে আদালতে মামলা দায়ের করেন। বিষয়টি জানতে পেরে গত ২ অক্টোবর সন্ধ্যায় নুরজাহানের ওপর হামলা চালানো হয়। এ সময় তার চিৎকারে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। যাওয়ার সময় মামলা তুলে না নিলে মুখে অ্যাসিড মেরে কেটে লাশ বানিয়ে নদীতে ভাসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। এ ব্যাপারে নুরজাহান তরিকুল ইসলাম মিঠু, তার স্ত্রী ও ভাবি নুরজাহান লিটনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ করেন।