ছয় দিনেও বাঁধা যায়নি নাপিতখালীর বাঁধ

0

শেখ মাসুদ হোসেন, সাতক্ষীরা॥ ছয় দিন আগে কপোতাক্ষ নদে বিলীন হওয়া গাবুরার নাপিতখালী অংশের ভাঙন কবলিত উপকুল রক্ষা বাঁধ শুক্রবার (২৩ অক্টোবর) বিকাল পর্যন্ত বাঁধা যায়নি। ইতোমধ্যে প্রায় আড়াইশ’ ফুট জায়গাজুড়ে রিংবাঁধ দেওয়া হলেও বৃষ্টির কারণে কাজ করতে পারনি এলাকাবাসী ও পানি উন্নয়ন বোর্ড। নিরুপায় হয়ে স্থানীয়রা ভাঙন কবলিত অংশ রক্ষায় পলিথিন জড়িয়ে দিয়ে নদীর ঢেউ থেকে বাঁধের বাইরের অংশ আঘাতমুক্ত রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা চালছে। এদিকে বৃষ্টি শুরুর পাশাপাশি কাজ বন্ধ হওয়াতে ভাঙনের মুখে থাকা বাঁধের অবশিষ্ট অংশ নতুন করে নদীতে বিলীন হওয়ার আতঙ্কে পড়েছে স্থানীয়রা।
জানা যায়, গত শনিবার মধ্যরাতে আকস্মিকভাবে ১৫ নং পোল্ডারের উপকুল রক্ষা বাঁধের নাপিতখালী অংশে প্রায় ৬০ ফুট জায়গা পাশের কপোতাক্ষ নদে বিলীন হয়। পরের দিন দুপুরের দিকে ভাঙন কবলিত ওই অংশে জনৈক মিজানুর রহমানের বাড়ি থেকে আব্দুর রশিদের বাড়ি পর্যন্ত বাঁধের আরও প্রায় দেড়শ’ ফুট জায়গা খাড়াভাবে নদীতে ধসে গেলে গোটা এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। নদীতে জোয়ারের চাপ না থাকার পরও সে সময়ে গ্রামের কিছু অংশ জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হলে স্থানীয়রা তাৎক্ষণিকভাবে মাটি ফেলে লোকালয়ে পানির প্রবেশ আটকে দেয়। গাবুরা ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদুল আলম বলেন, বিপদ আমাদের পিছু ছাড়ছে না। একের পর এক ঝড়-জলোচ্ছ্বাস আসছে। আবহওয়া বার্তা দেওয়া হয়েছে আবারও পানি বৃদ্ধি পাবে। ইতোমধ্যে আমার ইউনিয়নের দুই জায়গায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে সংলগ্ন অংশ ভাঙছে বলে কর্তৃপক্ষকে জানানোর পরও বিষয়টি তারা গুরুত্ব না দেওয়াতে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের শ্যামনগর অংশের সাব-ডিভিশন ইঞ্জিনিয়ার মো. রাশেদুর রহমান বলেন, ‘ভাঙন কবলিত নাপিতখালী এলাকায় জিও ব্যাগ ডাম্পিংয়ের জন্য ঠিকাদার নিযুক্ত রয়েছে। বালুর অভাবে কাজ শুরু করা যায়নি। জেলা প্রশাসক মহোদয়কে অবহিত করা হয়েছে। বালু সমস্যার সমাধান হলে আজ থেকে সেখানে জিও ব্যাগ ডাম্পিং এর কাজ শুরু হয়েছে। জিও ব্যাগ ডাম্পিং হলেই বাঙন রোধ হবে। উল্লেখ্য, দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরাকে ঘিরে থাকা প্রায় ৩০ কি. মি. বাঁধের কোনও একটি অংশ ভাঙলে গোটা জনপদের ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। আইলার আঘাতে ধ্বংস হওয়ার পর ১৫নং পোল্ডারের ওই উপকুল রক্ষা বাঁধ সম্প্রতি বুলবুল ও আম্পানের দুদফা আঘাতে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় পৌঁছায়। সামান্য ঝড়-বৃষ্টি আর জোয়ারের চাপ বৃদ্ধি হলেই বাঁধের বিভিন্ন অংশ নদীতে বিলীন হয়ে সংলগ্ন এলাকা প্লাবিত হয়।