ধর্ষণ মামলার আসামির সঙ্গে কারা ফটকে বিয়ের নির্দেশ

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ ধর্ষণ মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে থাকা আসামির সঙ্গে কারা ফটকে ভুক্তভোগীর বিয়ের আয়োজন করতে রাজশাহী কারাগারের তত্ত্বাবধায়কের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ওই বিয়ের পর ৩০ দিনের মধ্যে লিখিতভাবে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (২২ অক্টোবর) আসামির জামিন আবেদনের শুনানিকালে উভয়পক্ষের সম্মতিতে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট এস এম শাহেদ চৌধুরী। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন বাপ্পী।
মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, রাজশাহীর গোদাগাড়ি উপজেলার সিতানাথ খালকোর ছেলে দিলীপ খালকোর সঙ্গে তার নিকট আত্মীয়ের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এরই সূত্র ধরে ২০১১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ভুক্তভোগীকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে জড়ায় অভিযুক্ত দিলীপ খালকো। এর কিছুদিন পর ওই ভুক্তভোগী গর্ভবতী হয়ে পড়েন। পরবর্তীতে দিলীপ খালকো ভুক্তভোগী নারীকে বিয়ে করতে রাজি না হওয়ায় এ নিয়ে সালিশের মাধ্যমে সময়ক্ষেপণ হয়। শেষ পর্যন্ত সালিশে সুরাহা না হওয়ায় ভুক্তভোগী ২০১১ সালের ২৩ অক্টোবর স্থানীয় হাসপাতালে হাজির হয়ে শারীরিক অবস্থার পরীক্ষা করান। এরপর ২০১১ সালের ২৫ অক্টোবর গোদাগাড়ি থানায় হাজির হয়ে দিলীপ খালকোর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন। এই মামলায় আসামির বিরুদ্ধে ২০১২ সালের ২৯ জানুয়ারি রাজশাহীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ গঠন করা হয়। এরপর বিচার শেষে ২০১২ সালের ১২ জুন দিলীপ খালকোকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানার রায় ঘোষণা করেন আদালত। রায়ে বলা হয়, যখন ভুক্তভোগী ধর্ষণের শিকার হন তখন তার বয়স ছিল ১৪ বছর। ২০১২ সালের ওই রায়ের পর থেকে এখন পর্যন্ত দিলীপ কারাগারেই আছেন। তবে সম্প্রতি কারাগারে থেকেই দিলীপ হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন জানায়। আবেদনটির ওপর শুনানিকালে দিলীপের আইনজীবী হাইকোর্টকে জানান, ভুক্তভোগী নারী আদালতে হাজির হয়েছেন। তারা বিয়ে করতে সম্মত হয়েছেন। জামিন পেলে তাদের মধ্যে বিয়ে হবে। এ অবস্থায় হাইকোর্ট কারা ফটকে বিয়ের আয়োজন করতে রাজশাহীর কারা তত্ত্বাবধায়ককে নির্দেশ দিয়েছেন।