অভিযোগের শেষ নেই কয়রা কৃষি অফিসারের বিরুদ্ধে

0

খুলনা সংবাদদাতা॥ খুলনার কয়রা উপজেলা কৃষি অফিসার মিজান মাহমুদের বিরুদ্ধে সীমাহীন দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ইতোমধ্যে বিষয়টি কৃষি অধিদফতরের উচ্চ পর্যায় পর্যন্ত জানাজানি হয়েছে। একাধারে চার বছর যাবত একই স্থানে থেকে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পুনর্বাসন বাবদ বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাৎ, উপজেলার বিসিআইসি সার ডিলার ও খুচরা সার বিক্রেতাদের কাছ থেকে বিভিন্ন অজুহাতে ও মামলার ভয় দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া, অধীনস্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অপসারণ, অফিস চলাকালীন সময়ে অফিসিয়াল কাজ রেখে খুলনা শহরে অবস্থানসহ গত চার বছর যাবৎ তিনি উপজেলা কৃষি অফিসকে দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছেন। সম্প্রতি তিনি ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে মামলার ভয় দেখিয়ে মেসার্স রমজান ট্রেডার্সের মালিক বিসিআইসি সার ডিলার আবুল হাসান গাজীর কাছ থেকে ৩৫ হাজার টাকা নিয়েছেন। উপজেলার আমাদি, মহারাজপুর ও মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের বিসিআইসি ডিলার ও সাব ডিলারদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে তিনি এই টাকা নিয়েছেন। খুচরা সার বিক্রেতাদের জায়গা হস্তান্তর ও বিভিন্ন সমস্যার অজুহাত সৃষ্টি করে নিজ অফিসে ডেকে উপসহকারীদের মাধ্যমে কৌশলে এসব টাকা আদায় করে থাকেন।
সম্প্রতি তিনি জায়গা হস্তান্তর ও বিভিন্ন অভিযোগ দেখিয়ে আমাদি ইউনিয়নের তিনজন খুচরা সার বিক্রেতার নিকট থেকে ২৭ হাজার টাকা ও বাগালী ইউনিয়নে চারজনের নিকট থেকেও ২৯ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এসকল নানান অভিযোগ তুলে ধরে উপজেলা বিসিআইসি সার ডিলারদের পক্ষ থেকে গত ১৫ অক্টোবর দুপুরে কয়রা উপজেলা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনও করা হয়েছে। বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও কয়রা উপজেলা সার ব্যবসায়ী অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবুল হাসান গাজী সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে উপজেলা কৃষি অফিসার মিজান মাহমুদের বিরুদ্ধে এ সকল দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ তুলে ধরেন। মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের খুচরা সার ব্যবসায়ী বিধান চন্দ্র মন্ডল বলেন, উপজেলা কৃষি অফিসার দেখা করতে বলেছিলেন কিন্তু বিশেষ কারণে দেখা করতে না পারায় আমার সার দেয়া বন্ধ করা হয়েছে। এতে করে এলাকার কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, এর আগে কৃষি অফিসার মিজান মাহমুদ পার্শ্ববর্তী সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলায় থাকাকালীন ৩০ শতাংশ ভর্তুকিতে পাওয়ার টিলার গ্রহীতাদের কাছ থেকে অর্থ-বাণিজ্যসহ সীমাহীন অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। শেষ পর্যন্ত সেখানকার সরকারদলীয় সংসদ সদস্য জগলুল হায়দারের সুপারিশে জরুরি ভিত্তিতে তাকে বদলি করা হয়েছিল। এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মো. আব্দুল মুঈদ বলেন, বিষয়টি তার জানা নেই। তবে এ ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেলে তা আমলে নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ সকল বিষয়ে জানতে কয়রা উপজেলা কৃষি অফিসার এস.এম. মিজান মাহমুদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।