ট্রেনের ধাক্কায় নিহত চার জনের নড়াইলে শোকাবহে দাফন

0

নড়াইল অফিস ॥ যশোরের অভয়নগরে রেলক্রসিংয়ে ট্রেনের ধাক্কায় প্রাইভেটকারের নিহত চারজনের দাফন শনিবার নড়াইলে সম্পন্ন হয়েছে। খুলনায় ডাক্তার দেখাতে যাওয়ার পথে ট্রেনের ধাক্কায় শুক্রবার বিকেল পৌনে ৫টার দিকে নিহত হন নড়াইল শহরের ভওয়াখালী এলাকার একই পরিবারের তিন সদস্যসহ চারজন। নিহতরা হলেন, নড়াইল পৌরসভার ভওয়াখালী এলাকার মৃত সানাউল্লাহ ভূঁইয়ার ছেলে প্রকৌশলী হিরোক ভূঁইয়া (৩৪),মেয়ে শিল্পী খানম (৩২), হিরোক ভূঁইয়ার ভাই রনির মেয়ে রাইসা (৮),রুপগঞ্জ-কুড়িগ্রাম এলাকার বাসিন্দা হিরোক ভূঁইয়ার বন্ধু আশরাফুল ইসলাম (৪২)। এ ঘটনায় নিহত হিরোকের স্ত্রী শাওন ও এক বছরের মেয়ে হুমায়রা গুরুতর আহত হয়েছে। শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নিহত প্রকৌশলী হিরোক ভূঁইয়া, বোন শিল্পী খানম ও ভাইয়ের মেয়ে রাইসার লাশ নড়াইলের বাসায় পৌঁঁছালে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।
স্বজনরা বলেন, এ পরিবারের উপার্জনক্ষম এবং আপন বলতে আর কেউ থাকলো না। কয়েক বছর আগে হিরোক ভূঁইয়ার মা, বাবা উপ-সহকারী ভূমি সহকারী কর্মকর্তা সানাউল্লাহ ভূঁইয়া মারা যান। তারপর মারা যান হিরোক ভূঁইয়ার বড় দুই ভাই। অপরদিকে হিরোক ভূঁইয়ার বন্ধু আশরাফুল ইসলামের মৃত্যুতেও পরিবারে আয়-রোজগারের আর তেমন কেউ থাকলো না। আশরাফুলের মৃত্যুতে তার তিন শিশু মেয়ে এবং স্ত্রীর চোখে-মুখে নেমে এসেছে অন্ধকারের ছায়া। স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর শরিফুল আলম লিটু জানান,আশরাফুলের নামাজে জানাজা শনিবার সকাল ১০টার দিকে রুপগঞ্জ এলাকায় অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে তাকে দক্ষিণ নড়াইল কবরস্থানে দাফন করা হয়। এদিন বাদ আসর প্রকৌশলী হিরোক ভূঁইয়া, বোন শিল্পী খানম, হিরোক ভূঁইয়ার ভাইয়ের মেয়ে রাইসার দাফন নড়াইল শহরের আলাদাতপুর কবরস্থানে সম্পন্ন হয়েছে। নিহত হিরোক ভূইয়ার বোনের মেয়ে (ভাগ্নি) মীম খানম জানান, মামা পরিবারের পাঁচ সদস্য এবং এক বন্ধুকে নিয়ে ডাক্তার দেখাতে শুক্রবার বেলা পৌনে ৪টার দিকে নড়াইল থেকে নিজের প্রাইভেট কার যোগে খুলনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। পরে সন্ধ্যায় শুনতে পাই নওয়াপাড়া রেলক্রসিংয়ে ট্রেনের ধাক্কায় মামা, খালা, মামাতো বোন এবং মামার এক বন্ধু মারা গেছেন। নওয়াপাড়া রেল স্টেশনের মাস্টার মহসীন রেজা জানান,বিকেল পৌনে ৫টার দিকে মহানন্দা ট্রেনটি খুলনার দিকে যাচ্ছিল। এ সময় নওয়াপাড়া রেলক্রসিংয়ে একটি প্রাইভেটকার ও ট্রেনের সংঘর্ষে এ দুর্ঘটনা ঘটে। অভয়নগর থানার অফিসার ইনচার্জ তাজুল ইসলাম বলেন, প্রাইভেটকার ও ট্রেনের সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই তিনজন মারা গেছেন। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত ডাক্তার আরেকজনকে মৃত ঘোষণা করেন। প্রাইভেটকারের ছয় যাত্রীর মধ্যে চারজন মারা গেছেন। আহত দুজনকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।