চাঁচড়ার ইউপি সদস্য ইয়াছিনের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন স্থানীয় আ.লীগ নেতাদের

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোর সদর উপজেলার চাঁচড়া ইউনিয়নের ইউপি সদস্য ইয়াছিন আলীর বিরুদ্ধে শিক্ষককে মারপিট, অন্যর জমি জোর করে দখল, সন্ত্রাস-চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। শাসকদলের প্রভাবশালী এ ইউপি সদস্যর অত্যাচারে এলাকার নিরীহ-নিরাপরাধ মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছেন বলে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ করেছেন।
শনিবার প্রেসকাব যশোরে সংবাদ সম্মেলনে চাঁচড়া ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) মশিয়ার রহমান বলেন, ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ইয়াছিন আলী একজন ভূমিদস্যু, দখলবাজ ও সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক হিসেবে পরিচিত। ক্ষমতাসীন দলের কতিপয় প্রভাবশালী নেতার ছত্রছায়ায় থেকে এলাকায় সে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে চলেছে। তার অত্যাচার-অনাচারের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুললেই তার ওপর নেমে আসে অমানুষিক নির্যাতন। সম্প্রতি তার অত্যাচারের শিকার হয়ে পুলেরহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক সহিদুল ইসলাম গুরুতর জখম অবস্থায় চিকিৎসাধীন বলে সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করেন। সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগ নেতা মশিয়ার রহমান বলেন, পুলেরহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক সহিদুল ইসলাম গত ৪ অক্টোবর সদর উপজেলার গোয়ালদাহ-কল্যাণদাহ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের শিক্ষানুরাগী সদস্য হিসেবে মনোনীত হয়ে প্রথম সভায় যোগদেন। এসময় ইউপি সদস্য ইয়াছিন আলী ও তার লোকজন নিয়ে সেখানে গিয়ে হামলা চালায়। এক পর্যায়ে তারা শিক্ষক সহিদুল ইসলামকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত করেন। এসময় তারা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। হামলায় রক্ষাক্ত শিক্ষক সহিদুলকে তাৎক্ষণিক যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তিনি গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন। সংবাদ সম্মেলনে বর্তমান সরকারের আমলে ইউপি সদস্য ইয়াছিন আলীর বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ডের ফিরিস্তি তুলে ধরেন আওয়ামী লীগ নেতারা। অভিযোগে বলা হয়, ইউপি সদস্য ইয়াছিন ক্রয় সূত্রে ৭৫ শতক জমি কিনে বসত বাড়ি করলেও সে সম্প্রতি রুদ্রপুরের কাটু মোল্যা নামে একব্যক্তির ৬ শতক জমি জোর করে দখল করে ভোগ করছেন। এছাড়া স্থানীয় গোয়ালদাহ বাজারের কাজী স্বপনের নিকট দোকান ভাড়া নেওয়ার পর প্রথম দুই বছর ভাড়া দিলেও দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে ভাড়া পরিশোধ করেননি। একই সাথে গোয়ালদাহ-কল্যাণদাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তিনটি দোকান দীর্ঘদিন দখল করে রাখলেও ভাড়া পরিশোধ করছেন না।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, ইউপি সদস্য ইয়াছিন স্থানীয় চেয়ারম্যান ও পাশের আরেকটি ইউনিয়নের প্রভাবশালী ইউপি চেয়ারম্যানের ছত্রছায়ায় থেকে একের পর এক অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। ইতিপূর্বে তাকে চাঁদা না দেওয়ায় গোয়ালদাহ বাজারের সফিয়ারের স’মিল বন্ধ করে দেয়। ইউনিয়নের গোয়ালদাহ গ্রামের মাজিদ দফাদারকে ফাঁদে ফেলে দুল লক্ষ টাকা চাঁদা নেয়। একই পন্থায় এড়েন্দা গ্রামের নুর ইসলামের কাছ থেকে জোর করে তিন লক্ষ টাকা নিয়ে নেয় বলে অভিযোগ করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এলাকায় ভূমিদস্যু হিসেবে পরিচিত এই ইউপি সদস্যর অত্যাচারে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি নিজ দলের লোকজনও অতিষ্ট। তার অত্যাচার থেকে আওয়ামী লীগের লোকজনও রেহায় পাননা। মূলত জেলা ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের কতিপয় নেতার আশীর্বাদ ও উস্কানিতে এসব অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়। সংবাদ সম্মেলন অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, চাঁচড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ওয়াজেদ আলী, যুগ্ম সম্পাদক আব্দুল মান্নান, ৩ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ হোসেন, ২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী দেদারুল কাদিরসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।