করোনাকালেও মামলা নিষ্পত্তিতে রেকর্ড করলেন বিচারক তাজুল

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ করোনাভাইরাসের মহামারির কারণে দীর্ঘ পাঁচ মাস বন্ধ থাকার পর গত আগস্ট মাসে শুরু হয়েছে দেশের সব আদালতের বিচার কাজ। এতে প্রভাব পড়েছে মামলা নিষ্পত্তির হারে। বিচার বিভাগ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দীর্ঘ পাঁচ মাস বিচার কাজ বন্ধ থাকার কারণে এ সময়ে মামলা নিষ্পত্তির হার গিয়ে পৌঁছেছে শূন্যের কোঠায়। তবে নিষ্পত্তির হার কিভাবে বাড়ানো যায় সেটিই এখন সবচেয়ে বড় চিন্তার বিষয়। আর এজন্য চলতি বছর সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের অবকাশকালীন ছুটি বাতিল করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। এতে করোনাকালে বিচারপ্রার্থীদের যে ক্ষতি হয়েছে তা কিছুটা হলেও কাটিয়ে উঠা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে, ঝিনাইদহ আদালতের ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালের বিচারক (যুগ্ম জেলা জজ) মো. তাজুল ইসলাম করোনাকালীন সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিচারিক কার্যক্রম শুরু করলে গত আগস্টে এবং সেপ্টেম্বরে ৪১ কার্যদিবসে মোট ১৪৪টি দেওয়ানি প্রকৃতির ল্যান্ড সার্ভে মামলা দায়েরের চেয়ে নিষ্পত্তিতে রেকর্ড করেছেন এবং যা বিচার বিভাগে ইতিবাচক সাড়া ফেলেছে। ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালে মামলা জট সারা দেশব্যাপী রয়েছে। তবে করোনার সময়েও তার এ কার্যক্রম ইতোমধ্যে বিভিন্ন মহলে প্রশংসিত হয়েছে। অনেকে মনে করছেন এটা অন্য বিচারকরা অনুসরণ করলে বিচার বিভাগ থেকে মামলার জট কেটে যাবে। সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার বাসিন্দা মো. তাজুল ইসলাম ২০১৮ সালের ২৫ নভেম্বর ঝিনাইদহ আদালতে ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালের বিচারক হিসেবে যোগদান করেন। যোগদানের পর প্রায় ৩ হাজার ল্যান্ড সার্ভে মামলার বিচার প্রক্রিয়ায় যুক্ত হন তিনি। দায়িত্ব নেয়ার সময় তার এখতিয়ারে বিচারাধীন ল্যান্ড সার্ভে মামলাসহ মিস কেস ছিল ২৯৫৪টিরও বেশি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিচারক মো. তাজুল ইসলাম দায়িত্ব নেয়ার ২০১৯ সালে ২২১ কার্যদিবসে ১৪ শতাধিক মামলা নিষ্পত্তি করেন। যার মধ্যে ৬৮০টি মামলা ছিল পুরনো। যেগুলো ২০১৪ সাল থেকে ২০১৬ সালে দায়ের হওয়া। এগুলোকে তিনি অগ্রাধিকার দিয়ে নিষ্পত্তি করেন। এ সময় তাকে প্রায় ১১ শতাধিক সাক্ষীর সাক্ষ্য নিতে হয়। মিস মামলাতে ও ২ শতাধিক সাক্ষী তাদের সাক্ষ্য দেন। এছাড়া প্রায় ২০০টির অধিক মামলায় বিকল্প বিরোধ নিস্পত্তির (এডিআর) মাধ্যমে শুনানি করেন যার বেশিরভাগই বিচারে যাওয়ার পূর্বেই সফলভাবে নিস্পত্তি হয়েছে। অনেক গুরুত্বপূর্ণ মামলা রয়েছে, যা তিনি দায়েরের মাত্র ৫/৭ মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করেছেন। তাজুল ইসলাম ইতোপূর্বে খুলনা, ঢাকা, মেহেরপুর ও ঠাকুরগাঁওয়ে বিচারক হিসেবে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। এ বিষয়ে বিচারক মো. তাজুল ইসলাম জানান, সময়মতো অফিস করলে এবং সময়ের কাজ সময়ে করলে মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করা সম্ভব। যা তিনি করতে পেরেছেন। তিনি বলেন, আমার আদালতে সাক্ষী এলে ফেরত যায় না। আদালতের সময় শেষ হলেও সাক্ষীর সাক্ষ্য নিয়ে তাকে বিদায় দেয়া হয়। এ ব্যাপারে আদালতের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের এবং আইনজীবীদের সহযোগিতার কথা উল্লেখ করেন তিনি।