গ্রিন টি খেলেই রোগা? কখন, কতটা খাবেন, সঠিক চা বাছবেন কীভাবে

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ গ্রিন টি খেলেই কি রোগা, এ জাতীয় একটা কথা চালু রয়েছে। কিন্তু গ্রিন টি কীভাবে খাওয়া উচিত, এতে কী কী উপকার তা নিয়ে স্পষ্ট ধারণা অনেকেরই নেই। অতিরিক্ত গ্রিন টি যেমন পান করা ঠিক না, তেমনই আবার খালি পেটে ঘুম থেকে উঠেই গ্রিন টি, কিংবা রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে গ্রিন টি পান করাও মোটেও স্বাস্থ্যকর নয়।
আমেরিকান জার্নাল অব মেডিসিনে প্রকাশিত বেশ কয়েকটি গবেষণাপত্র বলছে, অন্যান্য চায়ের মতো গ্রিন টি আমাদের শরীরে জারিত হয় না। তাই এই চা অন্য চায়ের তুলনায় স্বাস্থ্যকর। অনেক রকম ফ্লেভার তো বটেই, বাজারে ভেষজ গ্রিন টি-ও পাওয়া যায়। গ্রিন টি শরীরে খারাপ কোলেস্টেরল বা এলডিএল ও ট্রাইগ্লিসারাইড জমতে দেয় না। রক্তনালিতে এই সব ফ্যাট জমলে রক্ত সঞ্চালন বাধা পায়।
মেটাবলিজমের মাত্রা বাড়িয়ে দ্রুত ফ্যাট ঝরাতে সাহায্য করে। গ্রিন টি পলিফেনল ও ফ্লাভেনয়েডের মতো অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টে পরিপূর্ণ যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্যের জন্য দারুণ উপকারী।
কিন্তু সঠিক গ্রিন টি বেছে নেওয়ারও কিছু পদ্ধতি রয়েছে
অর্গানিক গ্রিন টি বেছে নিলে কীটনাশকের বা কোনও ক্ষতিকারক রাসায়নিকের প্রভাবমুক্ত থাকা যাবে
গ্রিন টিতে যোগ করতে পারেন লেবুর রস কিংবা আদাও। ফাইল ছবি
সতেজ গ্রিন টি কিন্তু হালকা সবুজ রঙেই হবে
টি ব্যাগ এড়িয়ে চলাই ভাল
পাতার আকার হবে বড়
মার্চ-এপ্রিল মূলত এই গ্রিন-টি চাষ করা হয়, তাই পুষ্টিগুণও সেই সময় সবচেয়ে বেশি মেলে।
৬ মাসের বেশি গ্রিন টি রাখা যায় না কোনওমতেই
গ্রিন টি-তে কখনওই চা মিশিয়ে খাবেন না
গ্রিন টি-র প্যাকেটে এপিগ্যালোক্যাটেচিন (ইজিসিজি)আছে কি না দেখতে হবে, ভাল রকমের ইজিসিজি মানে সেটাই কেনা ভাল।
গ্রিন টির গন্ধ হবে হালকা, সতেজ, কচি ঘাসের মতো
গ্রিন টি রাখতে হবে কাচ বা পোর্সেলিনের বদ্ধ পাত্রে
খাওয়ার বিষয়ে কী কী খেয়াল রাখতে হবে
গ্রিন টি-তে দুধ মেশানো ঠিক নয়
ওয়ার্ক আউটের আগে বা পরে গ্রিন টি খাওয়া যায়
স্ন্যাক্স খাওয়ার ইচ্ছা দমন করতে হলেও এক কাপ গ্রিন টি যথেষ্ট
গরম গ্রিন টি-তে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টের পরিমাণ বেশি থাকে, বলছে একাধিক গবেষণা। কিন্তু এতে কি ওজন কমে?
গ্রিন টি খেয়ে কখনও উপোস করা উচিত না, জানালেন পুষ্টিবিদ সোমা চক্রবর্তী। কারণ এর ফলে টক্সিসিটির পরিমাণ বাড়তে পারে। এ ছাড়াও পুষ্টিবিদ বা চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া গ্রিন টি পান করে ওজন কমানো একেবারেই ঠিক নয়। পেপটিক আলসারের রোগীরা গ্রিন টি না খাওয়াই ভাল। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় গ্রিন টি পান করতে চাইলে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করার কথাও বলেন তিনি। শুধুমাত্র গ্রিন টি খেলে রোগ হওয়া যায়, এ জাতীয় কথা একেবারেই ঠিক না, জানান মেডিসিনের চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস। স্বাস্থ্যকর এবং পুষ্টিকর বাড়ির খাবার, শরীরচর্চায় সুস্থ থাকবেন মানুষ, এমনই মত তাঁর।
সঠিক গ্রিন টি বানানোর পদ্ধতি
৫ গ্রাম বা এক চা চামচ গ্রিন টি নিতে হবে। জল গরম করে ফুটে গেলে (৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় জল থাকলে ভাল।) তারপর তা সামান্য ঠান্ডা হলে স্টিল বা কাচের পাত্রে রাখতে হবে। তার পর এতে চা পাতা যোগ করে ৩ মিনিট ঢাকা দিয়ে রাখতে হবে। চা পাতা পুরোপুরি ভিজে গেলে পছন্দের কাপে চা ছেঁকে চুমুক দিন প্রিয় পানীয়তে।
কেউ চাইলে এর মধ্যে দারচিনি গুঁড়ো, এলাচ গুঁড়ো, আমলা গুঁড়ো যোগ করতে পারেন। যোগ করা যায় আদাও। এক চা চামচ আমলার রস, এক চা চামচ লেবুর রস, এক চা চামচ আদার রসে গ্রিন টি পাবে অন্য মাত্রা। তবে দিনে দু থেকে তিনবারই যথেষ্ট। অতিরিক্ত গ্রিন টি পান করা কখনওই ঠিক নয়।