ভোমরা স্থলবন্দরে রাজস্ব ঘাটতি ৬৩ কোটি ৭৮ লাখ টাকা

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরে রাজস্ব ঘাটতি বেড়েই চলেছে। চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) রাজস্বে ঘাটতি পড়েছে ৬৩ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। তবে গেল অর্থবছরের তুলনায় ঘাটতির পরিমাণ ১৬ কোটি ১৭ লাখ টাকা। বন্দরসংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনাভাইরাসের প্রভাবে বন্দরের ব্যবসা-বাণিজ্য মন্দা যাওয়ায় রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি পড়ছে। এছাড়া পণ্য আমদানি-রফতানি হ্রাস পাওয়ার কারণেও রাজস্ব আয় কমে যচ্ছে বলে মনে করছেন তারা।
ভোমরা শুল্কস্টেশনের রাজস্ব বিভাগ থেকে জানা গেছে, ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম তিন মাস পর্যন্ত ভোমরা বন্দরে রাজস্ব আদায় লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ২১৮ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে জুলাইয়ে ৭৩ কোটি ৫২ লাখ, আগস্টে ৭৭ কোটি ৫৯ লাখ এবং সেপ্টেম্বরে ৬৭ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। এ লক্ষ্যমাত্রা সামনে রেখে গেল তিন মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ১৫৫ কোটি ১ লাখ টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৬৩ কোটি ৭৮ লাখ টাকা কম।
অন্যদিকে গত অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে ভোমরা বন্দরে রাজস্ব আদায় হয়েছিল ১৭১ কোটি ১৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে জুলাইয়ে ৫৪ কোটি ৫৮ লাখ, আগস্টে ৪৭ কোটি ৯ লাখ এবং সেপ্টেম্বরে ৬৮ কোটি ৭ লাখ টাকা আদায় হয়। সেই হিসাবে গত অর্থবছরের প্রথম তিন মাসের তুলনায় চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে রাজস্ব ঘাটতি ১৬ কোটি ১৭ লাখ টাকা।
ভোমরা স্থলবন্দরে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ব্যবসায়ী অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান নাসিম জানান, সরকারের রাজস্বে ঘাটতি পড়ছে, পাশাপাশি ঠিকমতো পণ্য আমদানি-রফতানি করতে না পেরে ভোমরা বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। যেকোনো বন্দরে রাজস্ব কমবেশি হয়ে থাকে পণ্য আমদানি-রফতানির ওপর নির্ভর করে। কিন্তু করোনার কারণে উভয় দেশের ব্যবসায়ীরা সংকটে পড়েছেন। ফলে সরকারের রাজস্ব কমে যাচ্ছে।
ভোমরা শুল্কস্টেশনের দায়িত্বরত কাস্টমসের নবাগত বিভাগীয় সহকারী কমিশনার আমির মামুন বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে রাজস্বে ঘাটতি পড়েছে। বন্দরে পণ্য আমদানি-রফতানি যত বেশি হবে, রাজস্বের পরিমাণও তত বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের জন্য ব্যবসায়ীরা স্বাভাবিকভাবে পণ্য আমদানি-রফতানি করতে পারছেন না। ফলে রাজস্ব ঘাটতি বাড়ছে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে রাজস্ব আয় বাড়বে।
উল্লেখ্য, চলতি অর্থবছর ভোমরা বন্দরে ১ হাজার ৪ কোটি ৩ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এর মধ্যে প্রথম প্রান্তিক বাদে অক্টোবরে ৮৮ কোটি ৭ লাখ, নভেম্বরে ১১৪ কোটি ৮ লাখ, ডিসেম্বরে ১৩১ কোটি ৭ লাখ, জানুয়ারিতে ১৩২ কোটি ৫৫ লাখ, ফেব্রুয়ারিতে ১৫৫ কোটি ২৭ লাখ, মার্চে ১৪৬ কোটি ১৯ লাখ এবং জুনে ১৬ কোটি ৩ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া গেল অর্থবছরের এপ্রিল ও মে মাসে বন্দর বন্ধ থাকায় কোনো রাজস্ব আদায় না হওয়ায় চলতি অর্থবছরের এপ্রিল এবং মে মাসে কোনো রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়নি। তবে যে ১০ মাসের জন্য রাজস্ব আদায় লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, তা গেল অর্থবছরের তুলনায় ১৬৩ কোটি টাকা কম।