মাদক ব্যবসায়ী পিয়াসের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ স্ত্রীর

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিশেষ পরিস্থিতির শিকার হয়ে যশোরের চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম পিয়াসকে বিয়ে করতে বাধ্য হয়েছিলেন সাবরিনা আক্তার লাবনী নামে এক যুবতী। কিন্তু সাইফুল ইসলাম পিয়াসের প্রতারণা বুঝতে পারেননি তিনি। বিয়ের ৫ বছর পর কোনো কারণ ছাড়াই তার কাছে তালাকনামা পাঠিয়েছে পিয়াস। এ অবস্থায় শিশু সন্তান নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ওই যুবতী। তাছাড়া সাইফুল ইসলাম পিয়াসের এক ভাই তাকে নানাভাবে নাজেহাল করে আতঙ্কের মধ্যে রেখেছেন বলে তার অভিযোগ। শহরের মুড়লি এলাকার মৃত রবিউল ইসলামের মেয়ে সাবরিনা আক্তার লাবনীর অভিযোগ, বকচর কোল্ড স্টোরেজের পেছনে নাজির শংকরপুরের মৃত শফিকুল ইসলামের ছেলে সাইফুল ইসলাম পিয়াস কর্তৃক তিনি বিশেষ পরিস্থিতির শিকার হয়েছিলেন। এ জন্য তিনি ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। পুলিশ তাকে আটকও করে। কিন্তু সাইফুল ইসলাম পিয়াস তাকে বিয়ে করতে রাজি হওয়ায় তিনি তার জামিনে বিরোধিতা করেননি। জামিন মেলায় ২০১৬ সালের ৭ সেপ্টেম্বর তারা দুজন বিয়ে করেন। ২ লাখ টাকার দেনমোহরে তার বিয়ে হয়। দাম্পত্য জীবনে তাদের পুষ্পা নামে ২ বছর ৩ মাসের একটি মেয়ে সন্তান আছে। কিন্তু মাদক ব্যবসা এবং অস্ত্র ও মাদক সংক্রান্ত মামলার কারণে এই ৫ বছরের বিভিন্ন সময় সাইফুল ইসলাম পিয়াস আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ১১ বার আটক হয়। তিনি প্রতিবার নিজের সঞ্চিত টাকা দিয়ে তাকে জামিনে মুক্ত করেছেন। তার স্বামীর পেছনে তিনি ৮ লাখ টাকা ব্যয় করেছেন। তার স্বামী তাকে বিভিন্ন সময় শারীরিকভাবে নির্যাতন করায় তিনি মুখ বুঝে এতোদিন সহ্য করে এসেছেন। তারা শহরের শংকরপুর বাসটার্মিনাল এলাকার একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। গত ১১ সেপ্টেম্বর বাঘারপাড়ায় বোনের প্রতিবন্ধী অসুস্থ সন্তানকে দেখার কথা বলে দুদিনের জন্য বাসা থেকে বের হয়ে যান তার স্বামী। কিন্তু এরপর বাসায় ফিরে না আসায় তিনি তাকে মোবাইল ফোন করলে তাকে গালিগালাজ করা হতো। গত ১৬ সেপ্টেম্বর নাজির শংকরপুরের বাড়িতে গিয়ে তিনি সেখানে সাইফুল ইসলাম পিয়াসকে দেখতে পান। এ সময় তার স্বামী তাকে মারধর করেন। ৯৯৯ নম্বরে এলাকার কে বা কারা ফোন করায় পুলিশ এসে দুজকে কোতয়ালি থানায় নিয়ে যায়। এ সময় মীমাংসা বৈঠকে তার সাথে আর ঘরসংসার করবেন না বলে সাইফুল ইসলাম পিয়াস জানান। তাকে দেনমোহরের ২ লাখ টাকার মধ্যে ৭০ হাজার টাকা নিয়ে তালাকনামায় সই করে দিতে বলা হয়। কিন্তু তিনি পুরো টাকা না পেলে তালাক দিবেন না বলে জানিয়ে দেন। ফলে সাইফুল ইসলাম পিয়াস ও তার স্বজনেরা সেখান থেকে চলে যান। এ ঘটনার পর হঠাৎ গত ২৬ সেপ্টেম্বর সাইফুল ইসলাম পিয়াসের পাঠানো একটি তালাকনামা তিনি হাতে পান। এরপর জানতে পারেন, গত ৭ অক্টোবর সাইফুল ইসলাম পিয়াস একটি মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করায় তাকে কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। সাবরিনা আক্তার লাবনী জানান, তারা শংকরপুর বাসটার্মিনাল এলাকার যে বাড়িতে ভাড়া থাকতেন সেই বাড়িওয়ালাকে তার সম্পর্কে নানা কথা শুনিয়েছেন সাইফুল ইসলাম পিয়াসের মামাতোভাই ইমরান। ফলে তিনি ওই বাড়ি ছেড়ে দিতে বাধ্য হন। এরপর শংকরপুরের যশোর কলেজ রোডের একটি বাড়ি ভাড়া নিয়েছেন তিনি। সেখানেও এসে বাড়িয়ালাকে তার সম্পর্কে নানা কথা শুনিয়েছেন ইমরান। এমনকি তাকে বাড়ি ভাড়া না দেওয়ার জন্য বলা হয়েছিলো। তিনি নাজির শংকরপুরের একটি বাড়ি থেকে সন্তানের জন্য দুধ কিনে থাকেন। ওই বাড়ির লোকজনকেও তার কাছে দুধ বিক্রি না করার জন্য বলেছেন ইমরান। এভাবে তাকে নানাভাবে নাজেহাল করা হচ্ছে। ফলে তিনি এখন চরম আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। এ জন্য তিনি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।