ভালোবেসে বিয়ের চার মাস পর যুবতীর আত্মহত্যা, স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ি আটক

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোরে ভালোবেসে বিয়ের ৪ মাস পর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন সোনিয়া খাতুন (২০) নামে এক যুবতী। গত রোববার রাতে সদর উপজেলার বসুন্দিয়া ইউনিয়নের জগন্নাথপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। শ্বশুরবাড়ির লোকজনের মানসিক নির্যাতন সইতে না পেরে তিনি আত্মহত্যা করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। অপরদিকে ওই যুবতীকে আত্মহত্যায় প্ররোচণার অভিযোগে সোমবার তার স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়িকে আটক করেছে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে কোতয়ালি থানায়।
সোনিয়া খাতুনের পিতার বাড়ি খুলনার সোনাডাঙ্গা থানার বানরগাতির হাজি ইসমাইল কলোনির কাশেমাবাদ লেনে। তার পিতা মো. আবুল কালামের অভিযোগ, তিনি রং মিস্ত্রির কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। তার মেয়ে সোনিয়া খাতুনের সাথে যশোর সদর উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামের আব্দুস সালাম মোল্যার ছেলে রাকিবুল ইসলামের (২২) প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। চলতি বছরের ১৪ জুন তারা নিজেরা বিয়ে করে। কিন্তু রাকিবুল ইসলামের পিতা আব্দুস সালাম ও মা আবেদা বেগম এই বিয়ে মেনে নিতে পারেননি। তারা এ জন্য সোনিয়া খাতুনকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকেন। ফলে বিয়ের ১৫ দিনের মাথায় সোনিয়া খাতুন তার স্বামী রাকিবুল ইসলামকে নিয়ে খুলনায় পিতার বাড়িতে চলে যায়। কিন্তু আব্দুস সালাম ও আবেদা বেগম দফায় দফায় মোবাইল ফোন করে অনুরোধ করায় রাকিবুল ইসলাম ও সোনিয়া খাতুন ১৫ দিন আগে ফের যশোরের জগন্নাথপুর গ্রামে চলে আসে। শ্বশুরবাড়িতে আসার পর ফের আগের মতো সোনিয়া খাতুনের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু হয়। শ্বশুর ও শাশুড়ি তাকে কথায় কথায় ‘তুই মরতে পারিসনে’ এমনইভাবে মানসিক নির্যাতন করতেন। তার স্বামীও তাকে নির্যাতন চালাতো। গত রোববার রাত সাড়ে সাতটার দিকে তার মেয়ে তাকে (আবুল কালাম) ফোন করে জানায়, সে শ্বশুরবাড়িতে খুবই অশান্তিতে আছে। এর দু’ঘন্টা পর মেয়ের শ্বশুরবাড়ির একজন প্রতিবেশী তাকে ফোন করে জানান, সোনিয়া খাতুন রাত সোয়া আটটার দিকে গলায় ওড়না পেচিয়ে ঘরের আড়ার সাথে ঝুলে আত্মহত্যাা করেছে। এ খবর পেয়ে তিনি (আবুল কালাম) রাত তিনটার দিকে খুলনা থেকে যশোরের জগন্নাথপুর গ্রামে ছুটে আসেন। এ সময় তিনি জানতে পারেন স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ির মানসিক নির্যাতন সইতে না পেরে তার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। পুলিশ জানায়, সোনিয়া খাতুনকে আত্মহত্যায় প্ররোচণার অভিযোগে সোমবার তার পিতা আবুল কালাম কোতয়ালি থানায় একটি মামলা করেছেন। পুলিশ এজাহারভুক্ত আসামি রাকিবুল ইসলাম, আব্দুস সালাম ও আবেদা বেগমকে আটক করেছে। তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।