খুলনায় ট্রিপল মার্ডার: মূল হোতাসহ তিন জন ৫ দিনের রিমান্ডে

0

খুলনা সংবাদদাতা॥ খুলনার মশিয়ালীতে আলোচিত ট্রিপল মার্ডারের ঘটনায় মূল হোতা মিল্টন শেখ, তার ভাই জাকারিয়া ও এজাহারভুক্ত আরেক আসামি রেজওয়ান শেখ রাজুকে ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। শনিবার (১০ অক্টোবর) দুপুরে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আসামিদের হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে বিচারক মো. শাহীদুল ইসলাম ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) এনামুল হক বলেন, ‘শুক্রবার সকালে ঢাকার মিরপুর এলাকার একটি বহুতল ভবন থেকে ৩ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। হত্যাকাণ্ডের পর প্রায় তিন মাস তারা আত্মগোপনে ছিল। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে অস্ত্র উদ্ধার, হত্যাকাণ্ডের কারণ ও বাকি আসামিদের সম্পর্কে বিস্তারিত জানা সম্ভব হতে পারে।’ তিনি বলেন, ‘এ হত্যা মামলার ২২ আসামির মধ্যে এ পর্যন্ত ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের মধ্যে ছয় জন হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।’
উল্লেখ্য, মশিয়ালী গ্রামের একটি মসজিদ কমিটির মেয়াদ শেষ হলে সভাপতির পদ থেকে শেখ জাকরিয়াকে পদত্যাগ করতে বলে মিল শ্রমিক মুজিবরসহ মসজিদের মুসল্লিরা। সবার দাবির মুখে বাধ্য হয়ে পদ থেকে সরে দাঁড়াতে সম্মত হয়ে ১৭ জুলাই জুম্মার নামাজের পর পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু এর আগে ১৬ জুলাই বিকালে জাকারিয়া ও তার ভাইয়েরা অস্ত্র দিয়ে মিল শ্রমিক মুজিবরকে পুলিশের কাছে ধরিয়ে দেয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিবাদী এলাকাবাসীর ওপর জাকারিয়া-জাফরিন-মিল্টন বাহিনী নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান মশিয়ালী গ্রামের মৃত বারিক শেখের ছেলে মো. নজরুল ইসলাম (৬০), একই এলাকার মো. ইউনুছ আলীর ছেলে গোলাম রসুল (৩০) এবং পরে গুলিবিদ্ধ এলাকার সাইদুল ইসলামের ছেলে আটরা মেট্রো টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র সাইফুল ইসলাম (২২) খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এছাড়া গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আফসার শেখ, শামিম, রবি, খলিলুর রহমান, মশিয়ার রহমানসহ বেশ কয়েকজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এই ঘটনায় খানজাহান আলী থানা আওয়ামী লীগের সহ-প্রচার সম্পাদক জাকারিয়া জাকারকে দল থেকে বহিষ্কার করে খানজাহান আলী থানা আওয়ামী লীগ। গুলিবর্ষণে হতাহতের ঘটনায় নিহত কলেজছাত্র সাইফুল ইসলামের পিতা সাইদুল ইসলাম বাদী হয়ে ১৮ জুলাই খানজাহান আলী থানায় মামলা দায়ের করেন (নং-১২, তাং ১৮/৭/২০)। মামলায় খানজাহান আলী থানা আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সহ-প্রচার সম্পাদক শেখ জাকারিয়া হোসেন জাকার, তার ভাই মহানগর ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সহ-সভাপতি শেখ জাফরিন, অস্ত্র মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি মিল্টনসহ ২২ জনের নাম উল্লেখ এবং ১৫/১৬ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।