এই সরকার ভিন্নমতকে সহ্য করতে পারেনা: রিজভী

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইন ভঙ্গ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ড. মোর্শেদকে চাকুরিচ্যুতি আইনের লঙ্ঘন। একইসাথে বর্তমান সরকার কাপুরুষ বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এই সরকার ভিন্নমতকে সহ্য করতে পারেনা। তাদের দলীয় লোকেরা অন্যায় করলেও পার পেয়ে যাচ্ছে। শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ওয়াহিদুজ্জামান এ্যাপোলোকে অব্যাহতির প্রতিবাদ ও পুনর্বহালের দাবিতে এই মানববন্ধনের আয়োজন করে বাংলাদেশ শিক্ষক সমন্বয় কমিটি।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন- ‘মুজিববর্ষে তিনি সুন্দর জীবন উপহার দিবেন’। আমি বলবো- প্রধানমন্ত্রী আল্লাহার দোহাই লাগে আর সুন্দর দোহাই দিয়েন না। আপনি শুধু আর্তনাদের জীবন দিয়েছেন। আজকে সিলেট থেকে নোয়াখালী শুধুই নারীর আর্তচিৎকার। আপনাকে আল্লাহর দোহাই পদত্যাগ করুন। আপনি পদত্যাগ করলে জনগণ স্বস্তিতে থাকতে পারবে। ‘কারো দয়ায় সরকার ক্ষমতায় নেই’ ওবায়দুল কাদেরের এমন মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রিজভী বলেন, ঠিকই বলেছেন ওবায়দুল কাদের। কারণ তারা জনগণের দয়ায় নেই। কেননা জনগণ তো তাদেরকে দয়া করেননি। তারা অন্য কোনো দেশের দয়ায় ক্ষমতায় আছেন। আজকে সাড়ে বারো বছরে সারাদেশে জনপদের পর জনপদ খুন, গুম, ধর্ষণ আর মানুষের আহাজারি। তারা ধর্ষণের উন্নয়ন ঘটিয়েছে। মাদকের উন্নয়ন ঘটিয়েছে।
রিজভী বলেন, মাদক তো মন্ত্রীসভা পর্যন্ত গিয়ে পৌঁছেছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলছেন- ট্রাম্প নাকি আমাদের মতো সেবা পাচ্ছে! এটা হয় মাদকের প্রভাব নয়তো গঞ্জিকার প্রভাব। অপদার্থ স্বাস্থ্যমন্ত্রী। অকাট মূর্খ লোক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খানকে চাকুরিচ্যুত করার বিষয়ে তিনি বলেন, ড. মোর্শেদ একজন মেধাবী শিক্ষক। তাকে ভিন্নমতের কারণে চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে। কারণ তিনি জিয়াউর রহমানের নামে প্রবন্ধ লিখেছেন। এ জন্যই তাকে চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে। রিজভী বলেন, আসলে সরকার কাপুরুষ। তারা ভেবেছিল এই লেখার ঢেউ তাদের গদিকে নড়বড়ে করে দিবে। ড. মোর্শেদকে চাকুরিচ্যুত করার মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইন ভঙ্গ করেছে। যাকে বলা হয়- ‘ইউনিভার্সিটি অফ ল ব্রেকিং’। অথচ সরকার দলীয় শিক্ষকেরা এমফিল-পিএইচডি থিসিস জালিয়াতি করেও পার পেয়ে যাচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। এ সংক্রান্ত খবর গণমাধ্যমে বেরিয়েছে। রিজভী অবিলম্বে অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ওয়াহিদুজ্জামান এ্যাপোলোকে চাকুরিতে পুনর্বহালে দাবি জানান। যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ধর্ষকদের বাছাই করা হয়েছে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে। তারা সেসময় নির্বাচনে ক্ষমতা দখলের হাতিয়ার হয়ে কাজ করেছে। আজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে, ভিকারুন্নেসার ছাত্রীর ধর্ষক পরিমলের বিচার হয়নি। বনানীর হোটেল রেইনট্রিতে এমপি হারুনের দুই ছেলের ধর্ষণের বিচার হয়নি। এখন আপনারা ধর্ষণের জন্য মৃত্যুদন্ডের আইন করতে যাচ্ছেন। এর মানে হলো- চোখে সুরমা লাগানো। তিনি বলেন, আজকে বিচারকেরা মধ্যরাতে আদালত বসান। তো আপনারা জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে হস্তান্তর করার জন্য আদালত বসান। ক্ষমতাসীন অবৈধ অগণতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে গণ আন্দোলনের বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেন মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।
বাংলাদেশ শিক্ষক সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব সেলিম ভুইয়ার পরিচালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, শিক্ষক সমন্বয় কমিটির মহাসচিব বেলাল হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক লুৎফর রহমান, সাদা দলের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান, বঙ্গবন্ধু কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আবদুল করিম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কামরুল হাসান, অধ্যাপক সোহেল রানা, প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু, বিএনপির সহ প্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, যুবদলের সেক্রেটারি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভুইয়া জুয়েল, যুগ্ম সম্পাদক সাদরেজ্জামান, এসএম জিলানী, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আকরামুল হাসান, ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, সেক্রেটারি ইকবাল হোসেন শ্যামল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের আহ্বায়ক রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সদস্য সচিব আমানউল্লাহ আমান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবুল কালাম সরকার, দাউদ খান, স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ সাধারণ সম্পাদক সরদার নূরুজ্জামান, ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি মামুন বিল্লাহ, যুগ্ম সম্পাদক শামসুল আলম রানা, মহিলা দলের মমতাজ হোসেন লিপি, মজিবর রহমান, মোর্শেদ আলম, ছাত্রদলের সাবেক নেত্রী আরিফা সুলাতানা রুমা, নাদিয়া পাঠান পাপন সহ বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের হাজোরো নেতাকর্মী।