তুলা আমদানিতে ভিয়েতনামকে ছাড়িয়ে বাংলাদেশ

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ বিশ্ব তুলা দিবস ছিল ৭ অক্টোবর। গত বছর বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) উদ্যোগে প্রথমবারের মতো আয়োজিত হয় দিবসটি। সেই হিসাবে চলতি বছর দ্বিতীয়বারের মতো আয়োজিত হয়েছে বিশ্ব তুলা দিবস। তবে এবার পরিস্থিতি কিছুটা ভিন্ন। নভেল করোনাভাইরাসের মহামারী বিশ্বজুড়ে দিবসটির আয়োজন অনলাইনে সীমিত করে এনেছে। দেশে দেশে তুলা উৎপাদন আরো জনপ্রিয় করতে ও পণ্যটির বিপণন সহজ করে আনতে এ দিবস গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবক হিসেবে ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। বিশ্ব তুলা দিবসের প্রাক্কালে মার্কিন কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) ফরেন এগ্রিকালচারাল সার্ভিসের প্রাক্কলন বিশ্লেষন করে দেখা গেছে, ২০২০ সালে তুলা আমদানিতে শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখবে চীন। তবে বছর শেষে তুলা আমদানিতে ভিয়েতনামকে ছাড়িয়ে এগিয়ে থাকবে বাংলাদেশ।
ইউএসডিএর পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২০ সালে তুলা আমদানিকারক দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষ পাঁচ অবস্থানে থাকতে পারে যথাক্রমে চীন, বাংলাদেশ, ভিয়েতনাম, পাকিস্তান ও তুরস্ক।
এ সময় বিশ্বের শীর্ষ আমদানিকারক দেশ চীনে সব মিলিয়ে ৯০ লাখ বেল (প্রতি বেলে ৪৮০ পাউন্ড) তুলা আমদানির সম্ভাবনা দেখছে প্রতিষ্ঠানটি, যা আগের বছরের তুলনায় ২০ শতাংশ বেশি। গত বছর চীনের বাজারে সব মিলিয়ে ৭৫ লাখ বেল তুলা আমদানি হয়েছে। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে দেশটিতে পণ্যটির আমদানি বাড়তে পারে ১৫ লাখ বেল। এর আগে ২০১১ সালে চীনের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ২ কোটি ৪৫ লাখ ৩৩ হাজার বেল তুলা আমদানি হয়েছিল।
ইউএসডিএর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ইতিহাসে ২০১৭ সালে সবচেয়ে বেশি ৭৬ হাজার বেল তুলা আমদানি হয়েছিল, যা আগের বছরের তুলনায় ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ বেশি। পরের বছর দেশে পণ্যটির আমদানি ৫ দশমিক ২৬ শতাংশ কমে ৭২ লাখ বেলে নেমে আসে।
গত বছর বাংলাদেশে সব মিলিয়ে ৬৫ লাখ বেল তুলা আমদানি হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৯ দশমিক ৭২ শতাংশ কম। তবে চলতি বছর আন্তর্জাতিক বাজার থেকে দেশে সব মিলিয়ে ৭১ লাখ বেল তুলা আমদানি হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি, যা আগের বছরের তুলনায় ৯ দশমিক ২৩ শতাংশ বেশি। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে দেশে তুলা আমদানি বাড়তে পারে ছয় লাখ বেল।
এদিকে গত বছর বাংলাদেশের মতো ভিয়েতনামও সব মিলিয়ে ৬৫ লাখ বেল তুলা আমদানি করেছে বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে ইউএসডিএ, যা আগের বছরের তুলনায় ৫ দশমিক ৮০ শতাংশ বেশি। চলতি বছর দেশটিতে আগের বছরের তুলনায় ৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ বেড়ে মোট ৭০ লাখ বেল তুলা আমদানির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে ভিয়েতনামে তুলা আমদানি বাড়তে পারে পাঁচ লাখ বেল। এর আগে ২০১৭ সালেও ৭০ লাখ বেল তুলা আমদানি করেছিল ভিয়েতনাম। দেশটির ইতিহাসে এখন পর্যন্ত এটাই সবচেয়ে বেশি তুলা আমদানির রেকর্ড।
অর্থাৎ গত বছর বাংলাদেশ ও ভিয়েতনাম একই পরিমাণ তুলা আমদানি করলেও চলতি বছর ভিয়েতনামের তুলনায় দেশে এক লাখ বেল বাড়তি তুলা আমদানি হতে পারে বলে জানিয়েছে ইউএসডিএ। এর মধ্য দিয়ে ২০২০ সালে তুলা আমদানিকারকদের বৈশ্বিক শীর্ষ তালিকায় চীনের পর দ্বিতীয় অবস্থানে থাকতে পারে বাংলাদেশের নাম। ভিয়েতনাম থাকতে পারে তৃতীয় শীর্ষ অবস্থানে।
চলতি বছর পাকিস্তানে সব মিলিয়ে ৪৫ লাখ বেল তুলা আমদানির সম্ভাবনা দেখছে ইউএসডিএ, যা আগের বছরের তুলনায় রেকর্ড ৩৬ দশমিক ৩৬ শতাংশ বেশি। দেশটির ইতিহাসে এটাই হবে সবচেয়ে বেশি তুলা আমদানির রেকর্ড। গত বছর পাকিস্তানে সব মিলিয়ে ৩৩ লাখ বেল তুলা আমদানি হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ১৫ দশমিক ৭৯ শতাংশ বেশি।
একই চিত্র দেখা যেতে পারে তুরস্কেও। চলতি বছর দেশটিতে সব মিলিয়ে ৪২ লাখ বেল তুলা আমদানির সম্ভাবনা দেখছে ইউএসডিএ, যা আগের বছরের তুলনায় ৫ শতাংশ বেশি। গত বছর তুরস্কে সব মিলিয়ে ৪০ লাখ বেল তুলা আমদানি হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ১৪ দশমিক ৩২ শতাংশ বেশি। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে দেশটিতে তুলা আমদানি বাড়তে পারে দুই লাখ বেল। তুরস্কের ইতিহাসে ২০০৯ সালে সবচেয়ে বেশি ৪৩ লাখ ৯৪ হাজার বেল তুলা আমদানি হয়েছিল।
এগ্রিমানি ও ইনডেক্স মুন্ডি অবলম্বনে