আহত গণতন্ত্র চলছে খুঁড়িয়ে

0
জসিম উদ্দিন
ধরার বুকে প্রতিটি অস্তিত্বের একটি মেয়াদ রয়েছে। প্রতিটি বস্তু ও প্রাণকে আমরা নির্ধারিত মেয়াদের মধ্যে দেখতে পাই। মানুষের আয়ু সাধারণত ষাট-সত্তর বছর। একজন মানুষ বড়জোর ১০০ বছর বাঁচে। মানুষের সৃষ্ট ধারণা ও আইডিয়ারও মেয়াদ আছে বলেই আমরা দেখতে পাচ্ছি। নিজেদের শাসনের জন্য মানুষ অনেক তন্ত্রের জন্ম দিয়েছে। এসব ব্যাপারেও মানুষ এখন সিদ্ধান্তমূলক মন্তব্য করার অবস্থানে পৌঁছেছে। কার্ল মার্কস যেমন মানুষের মধ্যে সমতা অর্জনকে অনিবার্য মনে করেছিলেন। শ্রেণীহীন সমাজ নির্মাণের ধারণা নিয়ে বিগত ২০০ বছরে অনেক রক্তক্ষয় হয়েছে। তরুণদের কাছে বিশ শতকে সমাজতন্ত্রকে অসাধারণ কিছুই মনে হয়েছিল। এই শতাব্দীতে লেনিন, চে গুয়েভারা, ফিদেল কাস্ট্রোর মতো পৃথিবী বদলে দেয়া বহু নেতৃত্ব দেখা গেছে। তবে মাত্র সাত দশকের মধ্যে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে খান খান হয়ে যায়। রাশিয়ানরা সমাজতন্ত্র ত্যাগ করে গণতন্ত্রকে আলিঙ্গন করে। সারা বিশ্বের সমাজতন্ত্রীদের মনে হতাশা নেমে আসে। এখন সম্ভবত কোনো দেশে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য তরুণরা রক্ত দিতে প্রস্তুত নন।
গণতন্ত্র কি তা হলে টেকসই? এই তন্ত্র কি অনাদিকাল শাসন করার জন্য উত্তম ব্যবস্থা হিসেবে বহাল থাকবে? এই প্রশ্নের উত্তর অনেকভাবে আমরা পেয়েছি। নাগরিক সাধারণের ব্যাপারটি বুঝে নেয়ার দরকার রয়েছে। গণতন্ত্রচর্চাকারী বিশ্বের বৃহৎ দু’টি দেশের অবস্থা আমরা পর্যবেক্ষণ করতে পারি। আমেরিকা ও ভারতে গণতন্ত্র অনেকটাই রুগ্ণ অবস্থায় রয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি করে দেশ দু’টির গণতন্ত্রকে ইনটেনসিভ কেয়ারে নেয়ার প্রয়োজন দেখা দিতে পারে। তবে হঠাৎ করে একদিন যেমন রাশিয়া ভোল পাল্টে সমাজতন্ত্রকে ছুড়ে ফেলে দিয়েছে, গণতন্ত্র ঠিক এভাবে ছুড়ে ফেলে দেয়ার সুযোগ সম্ভবত নেই। কারণ রাশিয়ানরা সেটা ছুড়ে ফেলার জন্য প্রস্তুত ছিল গণতন্ত্র। কিন্তু ‘গণতন্ত্রওয়ালা’রা এটি ফেলে দিয়ে আরেকটি তন্ত্র যে গ্রহণ করবেন, সেটি প্রস্তুত নেই। তবে তাদের স্বৈরতন্ত্রের দিকেই যেতে দেখা যাচ্ছে। কিন্তু স্বৈরতন্ত্রের কথা মুখে নিতে শাসকরা লজ্জা পাচ্ছেন। অন্তত গণতন্ত্রওয়ালারা প্রকাশ্যে এটি গ্রহণ করতে পারেন না। ঘোষণা কেউ না দিলেও অনেকের যাত্রা ওই দিকেই। গণতন্ত্র চর্চাকারী বিশ্বের বৃহৎ দু’টি দেশের বর্তমান পরিস্থিতি দেখার চেষ্টা করব আমরা। আমেরিকায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। এই নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ব্যক্তিগত আচার আচরণ দেশটির প্রকৃত পরিস্থিতি কোথায় নেমেছে তার ধারণা দেবে। মিথ্যুক ও প্রবঞ্চকরূপে পরিচিত একজন মানুষকে দেশটির জনসাধারণ প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করেছে। এখনো দেশটির বিপুল জনগোষ্ঠী প্রায় উন্মাদ একজন মানুষকে প্রেসিডেন্ট বানাতে চায়, কেবল বর্ণবাদী স্বার্থ হাসিলের জন্য। অন্য দিকে বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ ভারতে কেবল হিন্দুধর্মীয় স্বার্থে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনার নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। ফলে সংখ্যালঘুরা দেশটিতে ভয়াবহ বঞ্চনার মধ্যে পড়েছেন।
বাবরি মসজিদ নিয়ে দেশটির শাসক ও বিচার বিভাগ কী আচরণ করেছে, সেটি লক্ষ করলে দেশটিতে গণতন্ত্রের স্বাস্থ্য আমরা অনুমান করতে পারব। বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ব্যাপারে তদন্তে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এমএস লিবারহেনের সমন্বয়ে এক সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। দীর্ঘ ১৭ বছর তদন্ত শেষে ২০০৯ সালে তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের কাছে রিপোর্ট পেশ করেন তিনি। এ প্রতিবেদনে বলা হয়, উত্তর প্রদেশের প্রশাসন ও পুলিশ বাবরি মসজিদ ধ্বংসের সময় নীরব ছিল। প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কল্যাণ সিং উগ্র সংঘ পরিবারের সমর্থনের ওপর নির্ভর করছিলেন। মূলত রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ বা আরএসএস সরকারের পক্ষ থেকে পুরো ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করেছে। অত্যন্ত পরিকল্পিত উপায়ে তারা বাবরি মসজিদ ধ্বংস প্রক্রিয়াসম্পন্ন করেছিল। প্রশাসনের নিরপেক্ষ কর্মকর্তাদের আগে নিষ্ক্রিয় করা হয়। তার পর নিরাপত্তা বাহিনীকে তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী সাজানো হয়, যাতে এই মসজিদ ধ্বংস করতে কোনো বাধা না আসে। পরিস্থিতি যখন এতটাই খারাপ ও উগ্র সংগঠনের সদস্যরা মানুষের জীবন ও সম্পত্তি বিনাশ করছিল, তখন কেন্দ্রীয় সরকারের পাঠানো নিরাপত্তা বাহিনীকে উত্তর প্রদেশের সরকার ব্যবহার করতে চায়নি। অর্থাৎ মুখ্যমন্ত্রী নিজের জনগণকে বাঁচাতে চাননি। কেবল নিজেদের ধর্মের মানুষ না হওয়ায় তার কাছে এসব মানুষের প্রাণ গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়নি।
লিবারহেন প্রতিবেদনে উমা ভারতী, কল্যাণ সিং, শঙ্কর সিংসহ বিজেপির নেতাদের সরাসরি দায়ী করা হয়। তদন্তে দেখা গেছে, তারা চাইলে এই ধ্বংসযজ্ঞ থামাতে পারতেন। বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব অটল বিহারি বাজপেয়ি, লালকৃষ্ণ আদভানি ও মুরলি মনোহর যোশিকে ঘটনার নাটের গুরু হিসেবে উল্লেখ করেছে কমিশন। মসজিদ ধ্বংসের পেছনে তাদের আদর্শিক উসকানি ছিল। তারা এ ঘটনার ঠিক আগে বাবরি মসজিদ ধ্বংস করা হবে না বলে আদালত ও সারা দেশের মানুষকে প্রতারিত করেছেন। তাদের ঘৃণ্য কর্মকাণ্ড ও উদ্দেশ্যের সঠিক বিবরণ দিয়েছে লিবারহেন কমিশন। লিবারহেনের তদন্ত প্রতিবেদনের এক দশকের মাথায় ঘটনার পুরো চিত্র উল্টে দিলেন ভারতীয় উচ্চ আদালতের আরেক বিচারক। মসজিদ ধ্বংস, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের হত্যা এসব ব্যাপারে বিশেষ আদালতের বিচারক সুরেন্দ্র কুমার যাদব ‘কাউকে দোষী হিসেবে পাননি’। তার রায়ের যে বিবরণ পাওয়া গেছে তাতে এটুকু বোঝা যাচ্ছে, একটি জঘন্য ঘটনা ঘটেছিল; তবে কেউ দোষী নয়। কেউ যদি দোষী হয়েও থাকেন তা হলে তাদের ‘কেউ চেনে না’। আর কেউ যদি চেনেও থাকে তাহলে সেই চেনা অপরাধীদের শনাক্ত করার ‘কোনো প্রয়োজন নেই’। অন্তত এই বিচারক ভয়াবহ ঘটনাটির দোষী ব্যক্তিদের শনাক্ত করে বিচার করে শাস্তি দেয়ার ব্যাপারে কোনো আগ্রহ দেখাননি। বাবরি মসজিদের জমির মালিকানা নিয়ে অন্য মামলাটির নিষ্পত্তি আরো আগে করা হয়েছিল। ওই মামলায় বিচারক বাবরের সেনাপতি মির বাকীর তৈরি করা ১৫২৮ সালের মসজিদটির মালিকানা দিয়ে দিলেন উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনকে। বিচার বিভাগ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার একটি ভারসাম্য রক্ষাকারী সংস্থা। বিশেষ করে রাষ্ট্র যদি নিপীড়ক হয়ে উঠতে চায় ন্যায়ের দণ্ড হাতে নিয়ে বিচার বিভাগ এগিয়ে আসে। ভারতের সরকার পরিচালনা করছে উগ্র হিন্দুরা। এই গোষ্ঠীর পৃষ্ঠপোষকতায় দেশটিতে সংখ্যালঘু নির্যাতন চলছে। দিল্লির দাঙ্গায় আমরা সম্প্রতি তা আবার দেখেছি। ওই দাঙ্গায় সংঘ পরিবারের উসকানি দাতাদের সবাই পার পেয়ে গেছেন। কিন্তু বিচার বিভাগ এমন সব ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করছে যারা ধর্মীয় সংখ্যালঘু গোষ্ঠী এবং বিজেপির রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ। একজন বিচারপতি বিবেকের তাড়নায় মুসলিম নিধনের বিরুদ্ধে স্বপ্রণোদিত হয়ে আদেশ দিয়েছিলেন। তাকে প্রথমে বদলি করে হয়রানি করা হলো। পরে তার বিরুদ্ধেও ব্যবহার করা হয় ওই দাঙ্গার ঘটনাকে। গরুর গোশত ভক্ষণের অভিযোগ এনে গণপিটুনির অপসংস্কৃতি বিজেপি দলটি আগে থেকেই চালু করেছে। দরকার ছিল রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে সংখ্যালঘুদের ওপর যে চরম নির্যাতন নেমে এসেছে তা ঠেকানোর জন্য বিচার বিভাগের সক্রিয় ভূমিকা। আক্রান্ত ও রক্তাক্ত গণতন্ত্রকে বাঁচানোর জন্য এর বড় প্রয়োজন ছিল। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, বিচার বিভাগ নিজেই নিপীড়ক সাম্প্রদায়িক সরকারের পক্ষে দাঁড়াচ্ছে। মুসলিম স্বার্থের বিরুদ্ধে আদালতের বড় বড় রায় এমন একসময় আসছে যখন যাবতীয় অন্যায়ের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু মুসলিমদের পক্ষ হয়ে বিচার বিভাগের তা রুখে দেয়ার কথা।
আমেরিকার গণতান্ত্রিক শাসনের অবস্থা ভারতের চেয়ে খুব ভালো বলার সুযোগ নেই। ভারতীয় প্রশাসন ধর্ম ও বর্ণের ভিত্তিতে যেমন নিন্দনীয় আচরণ করছে, আমেরিকার প্রশাসনে এমন অধঃপতন এখনো হয়নি। তবে রাজনীতিতে এমন দানবীয় পরিবর্তন এসেছে এবং শ্বেতাঙ্গ জনগণের পর্যায় থেকে তা সমর্থনের যে নজির স্থাপিত হয়েছে, এতে অচিরেই দেশটির গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার পূর্বাভাস পাওয়া যাচ্ছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ৮২৭ দিনে ১০ হাজার মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর দাবি করেছেন। দিনে তিনি গড়ে ১২টি মিথ্যা বলেছেন। তিনি এতটাই বাঁধনহারা যে, এক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ক্ষিপ্ত হয়ে বলতে গিয়ে একলাইন বক্তব্যে চারটি মিথ্যাও বলেছেন। যারা ট্রাম্পের মিথ্যা চাতুর্য ও প্রতারণা জানেন তারা ধারণা করছেন তিনি তার চার বছর টার্মের মধ্যে ২০ হাজারের বেশি মিথ্যা কথা বলতে পারেন। এ ধরনের একজন ব্যক্তিকে অমেরিকার জনগণ প্রেসিডেন্ট বানাতে ভোট দিয়েছেন। এ ছাড়া নারীর প্রতি তার মনোভাব সবার জানা। কয়েক ডজন নারী ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও নির্যাতিত হওয়ার অভিযোগ এনেছেন। মুসলিমদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে তিনি কটুকাটব্য করেন। আফ্রিকান কালোদের বিরুদ্ধে তার বিদ্বেষ আরো নগ্ন। ট্রাম্পের এ ধরনের বিকৃত স্বভাবের ব্যাপারে আমেরিকার মানুষ জানে। তারা জেনে শুনেই ট্রাম্পকে সমর্থন দিয়েছেন। হিলারি ক্লিনটনের বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। কোনো ধরনের কারচুপি করে তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হননি। তবে এবার তিনি কারচুপি করতে চাচ্ছেন। সেটি সবার কাছে স্পষ্ট হয়ে গেছে। কারচুপিতে সফল না হলে বিচার বিভাগের কাঁধে ভর করে হলেও নির্বাচনে জিততে চান। প্রধান বিচারপতি মারা যাওয়ার পর একজন বর্ণবাদী বিচারক তিনি নিয়োগ করতে চাইছেন। আর সে বিচারকের কাছে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফায়সালা তিনি করাবেন। তার নিযুক্ত বিচারপতি এবার ভারতের বিচারপতির মতো রায় দেবেন বলে শঙ্কা জেগেছে। এ বিচারের রায়ে ‘তালগাছ আমার’ থাকলেও বিচার সঠিক হয়েছে বলেই হয়তো ধরা হবে।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রথম বিতর্কে ট্রাম্প উন্মত্ত ষাঁড়ের মতো আচরণ করেছেন বলে অনেকে মন্তব্য করেছেন। সব ধরনের নিয়মকানুন, ভদ্রতা ও লজ্জা শরমের মাথা খেয়ে তিনি নির্লজ্জ মিথ্যাচার করেছেন। জোর করে প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেনকে থামিয়ে দিয়েছেন। এর আগে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীদের মধ্যে কেউ এমন অসৌজন্যমূলক ব্যবহার করেনি। তাই বাকি দু’টি বিতর্কের নিয়ম পরিবর্তন করা হচ্ছে। ট্রাম্পের শিবির নিয়ম পরিবর্তনের ঘোর বিরোধী। তবে দু’জনের মধ্যে আবার বিতর্ক হবে কি না কেউ জানেন না। করোনাকে নিয়ে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা ট্রাম্প আপাতত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। ট্রাম্পের ব্যক্তিগত চরিত্র গণতন্ত্রের সম্পূর্ণ বিরোধী। আমেরিকার মানুষ এর পরও তাকে পছন্দ করছেন। নির্বাচনী জরিপে দেখা গেছে, তিনি বাইডেন থেকে কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে পড়েননি; অর্থাৎ বৃহৎ একটি জনগোষ্ঠী তাকে সমর্থন করছে। তা হলে আমেরিকার মানুষ কি প্রকৃতপক্ষে বর্ণবাদী? গণতন্ত্র টিকে থাকবে কি না, এটি তাদের সম্ভবত উদ্বেগের বিষয় নয়। তাদের পছন্দ হচ্ছে ‘শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদ’। তাদের বক্তব্য হলো, আমেরিকা সাদাদের দেশ। এ দেশের সুযোগ সুবিধা সমৃদ্ধি কেবল সাদারা ভোগ করবে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এমন কথা প্রকাশ্যে বলে থাকেন। শুধু আমেরিকা ও ভারতে গণতন্ত্র দুস্থ হয়ে যাচ্ছে এমন নয়। পৃথিবীর বেশির ভাগ দেশে গণতন্ত্র এখন রুগ্ণ আক্রান্ত এবং নানাভাবে পর্যুদস্ত হচ্ছে। এর ফল হিসেবে ভবিষ্যতের পৃথিবী কেমন হবে কারো সঠিক জানা নেই। তবে নানা ধরনের শোষণ নিপীড়ন থেকে বাঁচতে মানুষ যেমন প্রস্তুত গণতন্ত্রকে পেয়েছে, সে ধরনের প্রস্তুত কোনো ‘তন্ত্র’ মানুষের সামনে নেই। তাই বলে পৃথিবীর পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ নাও হতে পারে। পৃথিবীর বেশির ভাগ সময়ে আধুনিক গণতন্ত্র ছিল না। তাই বলে পৃথিবী একেবারে দুঃশাসনে ভরে যায়নি। অনেক প্রজাহিতৈষী শাসক পৃথিবীতে জন্মেছেন। তারা জনসাধারণের সর্বোচ্চ কল্যাণ সাধন করেছেন। সেজন্য জনগণ তাদের ভোটে নির্বাচিত করেছেন এমন নয়।
[email protected]