‘বড় ভাইদের’ ফোন পেয়ে ছাত্রাবাস থেকে পালায় ধর্ষকরা

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ স্বামীর কাছ থেকে স্ত্রীকে কেড়ে নিয়ে সিলেট এমসি কলেজের ছাত্রাবাস প্রাঙ্গণে প্রাইভেটকারের ভেতর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পালাক্রমে ধর্ষণকালে চারজনের নির্যাতনের পরই জ্ঞান হারান নির্যাতিতা। ফলে বাকি দুইজন আর ওই নববধূকে ধর্ষণ করতে পারেননি। আদালতে ১৬৪ ধারায় দেয়া জবানবন্দিতে মামলার ২নং আসামি তারেকুল ইসলাম তারেক ও ৬নং আসামি মাহফুজুর রহমান মাসুম এ তথ্য জানান। তারা দু’জনই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। জবানবন্দিতে দুই আসামি জানান, সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনাটি জানাজানি হলে ধর্ষকদের রক্ষায় তৎপর হন তাদের রাজনৈতিক ‘বড় ভাইয়েরা’। আসামিদের ধরতে কলেজ গেটে পুলিশ আসামাত্রই বড় ভাইদের ফোন পান তারা। তারপরই দ্রুত পালিয়ে যান।
আদালত সূত্র জানায়, প্রায় একই বক্তব্য দিয়েছেন তারেক ও মাসুম। তবে দু’জনের বক্তব্যেই আসে- ধর্ষণে যুক্ত ছিল সাইফুর, অর্জুন, রনি আর তারেক। মাসুম ও রবিউল ধর্ষণের চেষ্টা করার আগেই প্রায় অচেতন হয়ে যান ভিকটিম। ফলে তারা ধর্ষণ করতে পারেননি। তবে অন্য চারজনকে ধর্ষণে সহযোগিতা করেন তারা। সিলেটের আলোচিত গণধর্ষণ মামলায় গ্রেফতার ৮ আসামিই একে একে আদালতে স্বীকার করলেন ন্যাক্কারজনক এ ঘটনায় জড়িত থাকার কথা। সর্বশেষ গত রবিবার মামলার এজাহারনামীয় আসামি তারেকুল ইসলাম তারেক ও মাহফুজুর রহমান আদালতে এ মর্মে স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তি দেন। এর আগে চাঞ্চল্যকর এ ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেফতারদের মধ্যে গত শুক্র ও শনিবার এই দুইদিনে ৬ আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। শুক্রবার আসামি সাইফুর রহমান, অর্জুন লস্কর ও রবিউল ইসলাম এবং শনিবার রনি, রাজন ও আইনুল আদালতে জবানবন্দি দেন।
গত শুক্রবার বিকালে সিলেটের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম জিয়াদুর রহমানের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন সাইফুর রহমান ও অর্জুন লস্কর। আর রবিউল জবানবন্দি দেন মুখ্য মহানগর হাকিম (দ্বিতীয়) সাইফুর রহমানের আদালতে। পরদিন শনিবার দুপুর ১টায় শাহপরাণ থানাপুলিশ কড়া নিরাপত্তায় মামলার তিন নম্বর আসামি শাহ মাহবুবুর রহমান রনি ও সন্দেহভাজন আসামি মিসবাউর রহমান রাজন ও আইনুদ্দিনকে অতিরিক্ত মহানগর হাকিম জিয়াদুর রহমানের আদালতে হাজির করা হয়। এই তিনজনের মধ্যে রাজন শনিবার বিকালে সিলেটের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মো. জিয়াদুর রহমানের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিকালে গণধর্ষণ ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে স্বীকার করেন রাজন। অপরদিকে, শনিবার সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দ্বিতীয় আদালতের বিচারক সাইফুর রহমান ও মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দ্বিতীয় আদালতের বিচারক শারমিন খানম নীলার কাছে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন অপর দুই আসামি রনি ও আইনুল। তারাও ঘটনার দায় স্বীকার করেন। উল্লেখ্য, এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে গত ২৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় স্বামীর কাছ থেকে কেড়ে নিয়ে নববধূকে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় শনিবার ভোরে ছয়জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও ২-৩ জনকে অভিযুক্ত করে শাহপরাণ থানায় মামলা করেন ধর্ষিতার স্বামী।