দেশটা কি ধর্ষকদের অভয়ারণ্যে পরিণত হচ্ছে, প্রশ্ন ন্যাপের

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ সিলেটের এমসি কলেজে গৃহবধূকে, মুন্সিগঞ্জে ৭২ বছরের বৃদ্ধাকে, হবিগঞ্জের মা ও মেয়েকে গণধর্ষণ ও নোয়াখালীতে গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে পাশবিক নির্যাতন ও ভিডিও প্রকাশসহ সারাদেশে নারী নির্যাতন-ধর্ষণের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ)। সরকারের কাছে প্রশ্ন রেখে দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘দেশটা কী ধর্ষকদের অভয়ারণ্যে পরিণত হচ্ছে? রাষ্ট্র এই লজ্জা কোথায় রাখবে? কিছু নরপিশাচ, কিছু মানুষরূপী হায়েনা আমাদের সকল অহঙ্কার, নীতি-নৈতিকতা ও গৌরবের জায়গাকে ভেঙে খান খান করে দিচ্ছে কার পৃষ্ঠপোষকতায়? ধর্ষকরা এতো সাহস কোথা থেকে পায়, কে জোগায়?’ সোমবার (৫ অক্টোবর) গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে পার্টির চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া সরকারের কাছে এসব প্রশ্ন করেন।
তারা বলেন, ‘বাংলাদেশে ধর্ষণের ঘটনা নতুন নয়। বহুবার দেশবাসীকে দেখতে হচ্ছে এমন পাশবিকতা। ক্রমেই যেন ধর্ষণ আমাদের দেশে নিত্যনৈমত্তিক বিষয়ে পরিণত হয়ে যাচ্ছে। কলেজ ছাত্রী তনুকে গণধর্ষণ করে হত্যা, তার রেশ কাটতে না কাটতেই নোয়াখালীর সুবর্ণচরে এক গৃহবধূকে গণধর্ষণ, পার্বত্য চট্টগ্রামে একটি মেয়েকে ধর্ষণ। ফেনীতে মাদরাসার সুপার কর্তৃক শ্লীলতাহানির পর গায়ে আগুন ধরিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয় তারই ছাত্রী নুসরাত জাহানকে। নারায়ণগঞ্জে মাদরাসা সুপার একে একে ধর্ষণ করে ১২ জন শিক্ষার্থীকে। রাজধানীর ওয়ারীতে সাত বছরের শিশু সায়মাকে ধর্ষণ করে হত্যা, নেত্রকোনার এক শিক্ষক আবুল খায়ের গত এক বছরে ধর্ষণ করেছে ৬ জন শিশুকে যাদের বয়স ৮ থেকে ১১ বছর।’ নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘ধর্ষণের পর অপবিত্র অবস্থায় ধর্ষিতা শিশুদের পবিত্র কুরআন শরিফ স্পর্শ করিয়ে প্রতিজ্ঞা করাতো যেন এই লোমহর্ষক ঘটনা কাউকে না বলে। এসব কিসের লক্ষণ-ইঙ্গিত বহন করছে?’ তারা বলেন, ‘দেশে আইনের শাসন ও ন্যায়বিচারের সংস্কৃতি না থাকায় অন্যায় অপকর্ম ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘটনার পর দেশ-বিদেশে সর্বত্র জনসাধারণ দেখাচ্ছে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া। কিন্তু যাদের হাতে রিমোট সেই ক্ষমতাসীন মহল যদি দেখেও না দেখার ভান করে, তাহলে দেশবাসীর বিক্ষোভ হবে কেবলই অরণ্যে রোদন। প্রায় দেখা যায়, এসব নরপশুর গডফাদার হিসেবে যে ব্যক্তিদের নাম আলোচিত হয় তারা নিজেরাই ঘটনার বিচার চেয়ে পত্রিকায় বিবৃতি দেয়। ফলে অপরাধী ধর্ষকরা পার পেয়ে যায় অনেক ক্ষেত্রেই।’
তারা বলেন, ‘দেশের এই চরম খারাপ সময়ে মন্ত্রী ও দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের কাছ থেকে দেশ ও জাতি কাগজে শুধু বিবৃতি কিংবা সান্ত্বনাবাণী প্রত্যাশা করে না। তারা দ্রুত কার্যকর উদ্যোগ দেখতে চায়। চিহ্নিত অপরাধী এবং তাদের আশ্রয়দাতা গডফাদারদের গ্রেফতার করে দ্রুত বিচার ও বিচারের রায় কার্যকর দেখতে চায়।’ নেতৃদ্বয় আরও বলেন, ‘অপরাধী চক্রের কয়েকজন গ্রেফতার হওয়ায় ক্ষমতাসীন দলের অনেকেই তৃপ্তির ঢেকুর তুলছেন। কিন্তু এমন ‘গ্রেফতার নাটক’ তো দেশবাসীর অতীতেও কম দেখেনি। কেউ যদি এই সব অপরাধীকে বাঁচিয়ে রেখে লোক দেখানো বিচার করতে চান- তা হবে আত্মঘাতী। এক সময় হয় তো দেশবাসী প্রত্যক্ষ করবে, এই লম্পটগুলো তাদের আশ্রয়দাতাদের পরিবারের মেয়েদের দিকেও হাত বাড়িয়েছে। তাই সময় থাকতে সরকার ও সকলকে সচেতন হতে হবে, প্রতিবাদী হতে হবে। বহু কষ্টে অর্জিত এই দেশ ধর্ষকদের অভায়রণ্যে পরিণত হোক, দেশবাসী এটা দেখতে চায় না।’