খুলনার এইচএসটিটিআই’র উপ-পরিচালকের বিরুদ্ধে ভুয়া পরিচয়ে জাবি‘র খাতা মূল্যায়নের অভিযোগ

0

ফুলবাড়ীগেট (খুলনা) সংবাদদাতা ॥ খুলনা এইচএসটিটিআই এর উপ-পরিচালক (সংযুক্ত) এর দায়িত্বে থেকে বিএল কলেজের শিক্ষক পরিচয়ে প্রায় ৮ বছর যাবত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের খাতা মূল্যায়ন করছেন। এমন অভিযোগ রয়েছে কর্মকর্তা শেখ মোহতাশামুল হক মারুফের নামে। তার বিরুদ্ধে ভুয়া পরিচয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার খাতামূল্যায়ন, সংযুক্তিতে থেকেও আর্থিক কমিটির সাথে নিজেকে যুক্ত রাখাসহ বিভিন্ন অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বঙ্গবন্ধুর দেশ প্রেমিক সৈনিক নামের একটি সংগঠনের লিখিত অভিযোগের সূত্রে জানা যায়, খুলনার এইচএসটিটিআই’র বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(মাউশি) উপ-পরিচালক(সংযুক্ত) শেখ মোহতাশামুল হক মারুফ প্রশাসনিক দায়িত্বে থেকে খুলনা বিএল কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংষ্কৃতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হিসাবে ভুয়া পরিচয়ে বছরের পর বছর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষক, প্রধান পরীক্ষক, মৌখিক পরীক্ষা বোর্ডের পরীক্ষক এবং পরীক্ষার প্রশ্ন প্রণেতার অবৈধ সুযোগ নিচ্ছেন। সর্বশেষ তিনি বিএল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক পরিচয়ে কলেজের টিএমআইএস এবং পরীক্ষা কোড -৩৫৭৪৮ এর মাধ্যমে গত ২১ জুলাই খাতা গ্রহণ করেন। অথচ বিএল কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংষ্কৃতি বিভাগে অনেক শিক্ষক আছেন শ্রেণিতে পাঠদান করিয়েও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পরীক্ষার খাতামূল্যায়নের সুযোগ পান না। বর্তমান কর্মস্থলের আর্থিক কার্মকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা না থাকলেও তিনি প্রায় প্রতিটি আর্থিক কমিটির সাথে নিজেকে যুক্ত রেখেছেন। অভিযোগকারীদের দাবি, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের পদোন্নতি, বদলি সংক্রান্ত বিভিন্ন কাজের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে তার ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে। তার অপকর্মের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললে অভিযোগকারীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে সবকিছইু করে থাকেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, ভুক্তভোগী একাধিক কলেজ শিক্ষক বলেন, তার অপকর্মের শেষ নেই, তিনি একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে র্দীর্ঘদিন এ সকল কাজ করে আসছেন। তার হাত খুবই শক্তিশালী হওয়ায় এ সকল বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিগণ অবগত থাকলেও তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় না। এ বিষয়ে ইসলামের ইতিহাস ও সংষ্কৃতি বিভাগের প্রধান পরীক্ষক আঞ্জুম সুলতানা বলেন, মোহতাশামুল হক এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক না হয়ে খাতা দেখছেন, কিন্তু তিনি তো একা নন আরও অনেকেই আছেন। বিএল কলেজসহ দেশের বড় বড় নামীদামি কলেজের নামে এমন অনেকেই করছেন। তিনি বলেন, যারা সিলেবাস জানেন না এবং এর সাথে কোনভাবেই জড়িত নন, প্রশ্ন করেন না, কাস নেন না, তারা যদি পরীক্ষক হিসেবে খাতা দেখে তাহলে খাতার সঠিক মূল্যায়ন হবে না। বহু শিক্ষক আছেন যারা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কাসে পাঠদান করান অথচ ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও তারা খাতা দেখার সুযোগ পাচ্ছেন না। তাছাড়া সিনিয়র শিক্ষকদের বাদ দিয়ে জুনিয়র শিক্ষকদের দেওয়া হচ্ছে পরীক্ষার খাতা। বিষয়গুলো নিয়ে অনেক শিক্ষকদের মাঝে ক্ষোভ ও আছে। এ বিষয়গুলো সংশ্লিষ্টদের উপলব্দি করে সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। বিএল কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংষ্কৃতি বিভাগের প্রধান ও শিক্ষক পরিষদের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. খন্দকার হামিদুল ইসলাম বলেন তিনি ২০০২ সাল থেকে এই কলেজে আছেন, তার জানামতে মোহতাশামুল হক বিএল কলেজের শিক্ষক হিসেবে কখন ছিলেন না। তবে তার স্ত্রী ড. হোসনে আরা রোজি বর্তমানে এই কলেজের শিক্ষক। তিনি বলেন এই কলেজের শিক্ষক নন, অথচ কলেজের সহযোগী প্রফেসর হিসেবে খাতামূল্যায়ন করে থাকলে নৈতিক দিক দিয়ে তিনি পরাজিত হয়েছেন। কেননা তিনি শিক্ষকের পদে নেই, প্রশাসনিক কর্মকর্তার পদে দায়িত্ব পালন করছেন। ফলে শিক্ষার্থীদের খাতার সঠিক মূল্যায়ন করা হচ্ছেনা। বিষয়টি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ঊর্ধ্বতন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আর্কষণ করেছেন সমাজের শিক্ষাবিদসহ খ্যাতনামা ব্যক্তিবর্গ। এ ব্যাপারে খুলনা এইচএসটিটিআই এর উপ-পরিচালক(সংযুক্ত) শেখ মোহতাশামুল হক মারুফের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন তিনি খুলনা এইচএসটিটিআইতে কর্মরত আছেন । কখনো বিএল কলেজের শিক্ষক ছিলেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোন উত্তর না দিয়ে কিছু সময় পর ফোনটি কেটে দেন। পরে একাধিক বার ফোন করা হলেও তিনি ফোনটি রিসিভ করেননি।