৮ ঘন্টা পর সমুদ্র থেকে উদ্ধার এক নির্যাতিত নারী

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ সাবেক স্বামীর নির্যাতন থেকে রক্ষা পেতে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছিলেন দুই সন্তানের মা অ্যাঞ্জেলিকা গাইতান (৪৬)। এরও দু’বছর আগে তিনি পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলেন। অবশেষে আত্মহত্যা করতে ঝাঁপ দেন সমুদ্রে। কিন্তু পানিতে ডোবেন নি তিনি। ঘটনার আট ঘন্টা পরে উপকূল থেকে প্রায় এক মাইল দূরে ভাসমান অবস্থা থেকে তাকে উদ্ধার করেছেন জেলেরা। তখন গাইতান ছিলেন অচেতন। তবে তিনি হাত পা নাড়াতে পারছিলেন। উদ্ধারের পর বলেছেন, ঈশ্বর আমাকে নতুন জীবন দিয়েছেন।
তিনি চেয়েছেন বলেই আমি বেঁচে আছি। ঘটনাটি ঘটেছে আটলান্টিকোর পুয়ের্তো কলোম্বিয়া শহরের পাশে সমুদ্রে। সেখানে জেলেরা মাছ ধরছিলেন। এমন সময় ২৬ শে সেপ্টেম্বর তারা দূরে সমুদ্রে কিছু একটা ভাসতে দেখেন। তাদের মনে হতে থাকে কাঠের কোনো গুঁড়ি ভাসছে হয়তো। জেলেদের মধ্যে রোনালদো ভিসবল বোট চালিয়ে অগ্রসর হতে থাকেন সেদিকে। তারা দেখতে পান অসাড় হয়ে ভাসছেন একজন নারী। প্রথমেই তারা তাকে একটি রশি ছুড়ে মারেন, যাতে তা ধরে তিনি বোটের দিকে অগ্রসর হতে পারেন। এক পর্যায়ে তারা গাইতানের কাছে যান। তাকে জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জাম দেন। উদ্ধার করেন তাকে। নিয়ে যান একটি হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসার পর সুস্থ হয়েছেন তিনি। তারপর নিজের প্রতিক্রিয়ায় উদ্ধারকারীদের ও ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন নতুন জীবন দেয়ার জন্য। তিনি বলেছেন, ২০ বছর ধরে সাবেক স্বামীর হাতে তিনি নির্যাতিত হচ্ছিলেন। দুটি সন্তান যখন পেটে ধারণ করেছেন, তখনও তার ওপর নির্যাতন চলতো। প্রথম সন্তান পেটে আসার পরই এই নির্যাতন শুরু হয়। নৃশংস নির্যাতন চলতে থাকে। দ্বিতীয় সন্তান পেটে আসার পর একই ধারা অব্যাহত থাকে। এ জন্য তিনি পুলিশে রিপোর্ট করেছিলেন অনেকবার। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি। পুলিশ তার স্বামীকে ধরে নিয়ে গিয়েছে। আবার ২৪ ঘন্টা পরে ছেড়ে দিয়েছে। বাড়ি ফিরেই সে আবার আগের মতো নির্যাতন করতে থাকে। তাকে ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখা হতো। বাথরুম ব্যবহার করতে দেয়া হতো না তাকে। প্রাকৃতিক ডাকে সাড়া দিতে হলে তাকে বাধ্য করা হতো পাশের বাগানে যেতে। এ অবস্থায় ২০১৮ সালে তিনি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন। এক পর্যায়ে পরিবার ও বন্ধুবান্ধবদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যান। সিদ্ধান্ত নেন আত্মহত্যা করবেন। তাই সমুদ্রে ঝাঁপ দিয়েছিলেন। কিন্তু সমুদ্রে আট ঘন্টা ভেসে থাকার পরও তার মৃত্যু হয় নি। তাই তিনি ধন্যবাদ দিয়েছেন ঈশ্বরকে।