কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়াতে হবে

0

প্রবাসী কর্মীদের ফিরে যাওয়া নিয়ে যে সংকট বিরাজ করছে তা থেকে সেদি ও ওসমান প্রবাসীরা আপাতত মুক্তি পেয়েছে। এখন ইউরোপ, আমেরিকা অস্ট্রেলিয়ার বন্ধুত্ব ঘোচাতে হবে। অন্যথায় যে অর্থনৈতিক বিপর্যয় ঘটছে তা সহসা কাটিয়ে ওঠা যাবে না। সরকারকে এ জন্য কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করতে হবে। আমরা জানি, করোনাভাইরাসের সংক্রমণের পর বিরূপ পরিস্থিতিতে বিশ্ব অর্থনীতিতে যে ধাক্কা লেগেছে তার ঢেউ এসে পড়েছে বাংলাদেশেও। বাংলাদেশে এক বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে প্রবাসী আয়েও। করোনাকালে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে দেশে ফিরে আসেন অনেক প্রবাসী কর্মী। সম্প্রতি সৌদিপ্রবাসী কর্মীদের সে দেশে ফেরা নিয়ে দেখা দেয় জটিলতা। অনেকের ইকামার (কাজের অনুমতিপত্র) মেয়াদ শেষ হওয়ার পথে। করোনাভাইরাস মহামারিকালে সৌদিপ্রবাসী যাঁরা দেশে এসেছিলেন, দেশটির সরকার বিমান চলাচল আবার শুরু করলেও বাংলাদেশ থেকে যাওয়ায় ক্ষেত্রে দেখা দেয় বিপত্তি। সৌদি আরবের অনুমতি না মেলায় এবং বিমান সে দেশে নিয়মিত বাণিজ্যিক ফাইট আবার চালু করতে না পারায় সৌদিতে কর্মরত অনেক বাংলাদেশী বিমানের টিকিট কেটে রেখেও যেতে পারছিলেন না। অন্যদিকে ফাইট কম থাকায় সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইনসও এত যাত্রীর চাপ নিতে পারছিল না। এই পরিস্থিতিতে সৌদিপ্রবাসী কর্মীরা নেমেছিলেন বিােভে। তাঁরা বিমান ও সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইনস অফিসের সামনে দুদিন বিােভের পর বুধবার ও বৃহস্পতিবার প্রবাসী কল্যাণ ভবনের সামনেও বিােভ করেন।
অবশেষে সব সমস্যার সমাধান এসেছে কূটনৈতিক তৎপরতায়। দুই দেশের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের পর সৌদি আরবগামী কর্মীদের দুশ্চিন্তা দূর হয়। এখন ফাইট বাড়াচ্ছে বিমান সংস্থাগুলো। বেশিসংখ্যক বাংলাদেশী প্রবাসীকে সৌদিতে তাঁঁদের কর্মস্থলে পৌঁছে দিতে ছয় দিন ঢাকা থেকে ছয়টি ফাইট পরিচালনা করবে সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইনস। এই ছয়টি বিশেষ ফাইট ছাড়াও তাদের সাপ্তাহিক দুটি নিয়মিত ফাইট ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চালিয়ে যাওয়া হবে। বিমানও ফাইট পরিচালনার অনুমতি পেয়েছে। আটকে পড়া কর্মীদের ফেরাতে সরকারের কূটনৈতিক তৎপরতায় সমাধান এসেছে। সৌদি আরবের পর আটকে পড়া প্রবাসীদের ওমানে ফেরা নিয়ে সমস্যাও কেটে গেছে। ওমান সরকার জানিয়েছে, আগামী ১ অক্টোবর থেকে আটকে পড়া বাংলাদেশিরা ওমানে ফিরতে পারবেন। প্রবাসী কর্মীদের অনিশ্চয়তার অবসান হয়েছে, এটা আমাদের কূটনৈতিক সাফল্য। এই সাফল্য আগামী দিনেও ধরে রাখতে হবে। তবে সচেতন থাকতে হবে অভ্যন্তরীণ ষড়যন্ত্রের বিষয়ে। আবারো সাহেদ সাবরিনারা যাতে মিথ্যা সার্টিফিকেট দিয়ে বিদেশীদের বিশ্বাস ভেঙে দিতে না পারে। মনে রাখতে হবে, করোনা নেগেটিভের মিথ্যা রিপোর্টের কারণে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়াসহ ইউরোপের বেশ কিছু দেশ আস্থা হারিয়েছে। সেখানে বহু বাংলাদেশী যেমন আটকে আছে তেমনি দেশেও রয়েছে প্রবাসী। আমরা এসব দেশের সাথে কূটনৈতিক সাফল্য প্রত্যাশা করি।