চৌগাছায় নেই বিনোদন কেন্দ্র, দু’টি সিনেমা হলের একটি গ্যারেজ অন্যটি রাইসমিল

0

মুকুরুল ইসলাম মিন্টু, চৌগাছা (যশোর) ॥ চৌগাছায় নেই কোন বিনোদন কেন্দ্র। শহর ও শহরতলীর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আছে বিশাল খেলার মাঠ কিন্তু সেখানে হয় না খেলাধুলা। দু একটি দর্শনীয় স্থান থাকলেও নানা কারণে মানুষ সেদিক থেকেও যেন মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। সিনেমা দর্শকদের বিনোদনের জন্য পৌর সদরে এক সময় দুটি সিনেমা হল গড়ে উঠলেও আজ তা স্মৃতির পাতা থেকে বলাচলে হারিয়ে গেছে।
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষের বসবাস এই উপজেলাতে নেই কোনো বিনোদন কেন্দ্র। সিনেমা দর্শকদের কথা বিবেচনা করে সময়ের ব্যবধানে দুইটি সিনেমা হল (উত্তরণ ও লাইট হাউজ) গড়ে ওঠে। কিন্তু এক সময় দর্শক শূন্য হয়ে হলগুলো বাধ্য হয়ে মালিক পক্ষ বন্ধ করতে বাধ্য হয়। প্রায় দেড় যুগ হল দুটি বন্ধ থাকলেও পুনরায় চালু করার কোনো সিদ্ধান্ত কেউ নেয়নি। বর্তমানে লাইট হাউজ নামের সিনেমা হলের মধ্যে তৈরি হয়েছে অটো রাইস মিল, আর উত্তরণ সিনেমা হলের নিচ তলায় তৈরি করা হয়েছে মটর গ্যারেজ, দ্বিতীয় তলা বসতবাড়ি।
সরকার থেকে ঘোষণা এসেছে সব কিছু ঠিক থাকলে করোনায় বন্ধ থাকা দেশের সকল সিনেমা হল আগামী মাসের ১৬ তারিখে খুলে দেয়া হবে। উপজেলার সিনেমা প্রিয় দর্শকরা সরকারের এমন ঘোষণায় বেশ খুশি। কিন্তু এখানে কোনো সিনেমা হল না থাকায় তারা বেশ হতাশ। চৌগাছা পৌর এলাকাতে সুবিশাল ৩টি খেলার মাঠসহ অধিকাংশ ইউনিয়নের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রয়েছে খেলার মাঠ। অথচ নানা কারণে বছরের পর বছর সেভাবে খেলাধুলা হয় না। আর করোনার কারণে গত মার্চ মাস থেকে শিশু কিশোররা মাঠে যাওয়া তো ভুলেই গেছে।
চৌগাছার দর্শনীয় স্থান জগদীশপুর গ্রামে স্থাপিত দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ তুলা গবেষণা ও বীজবর্ধন খামার, মুক্তদাহ গ্রামের জলাশয় (দোহা), হাকিমপুরের পানিগ্রাম রিসোর্ট সেন্টার, স্বরুপপুর গ্রামের ঐতিহ্যবাহী মসজিদ, কুঠিপাড়ার নীলকুঠি, বেড়গোবিন্দপুর বাঁওড় ও ডাইনের বিলসহ বেশ কিছু স্থাপনা আজও বিদ্যমান। কিন্তু নানা কারণে মানুষ এখন আর ওই সব স্থানে যায় না। পৌর কর্তৃপক্ষ শিশুদের বিনোদনের জন্য কপোতাক্ষ নদের পশ্চিমে অর্থাৎ কপোতাক্ষের পুরতান ব্রিজ সংলগ্নে একটি পার্ক নির্মাণের কাজ শুরু করে। কিন্তু আজও তা সম্পন্ন হয়নি।
লাইট হাউজ সিনেমা হলের স্বত্বাধিকারী নজরুল ইসলাম বলেন, ৮০/৯০ দশকের দিকে সিনেমা হলের ব্যবসা খুবই ভাল ছিল। এরপর থেকে ধীরে ধীরে এই ব্যবসায় ধস নামতে শুরু করে। আমি মনে করি ছবি নব্বই দশকের পর নির্মাতারা যে সকল সিনেমা তৈরি করতে থকেন, তাতে দর্শক হলে আসা তো দূরের কথা, হলবিমুখ হয়ে যায়। মাসের পর মাস ব্যবসায় লোকসান হওয়ায় এক সময় হল বন্ধ করতে বাধ্য হই। হলের স্থানে এখন অন্য ব্যবসা করা হচ্ছে। চৌগাছা পৌরসভার মেয়র নুর উদ্দিন আল মামুন হিমেল বলেন, সব বয়সের মানুষের জন্য বিনোদন অত্যন্ত জরুরি। সে লক্ষ্যে আমরা পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডে নদের পাড়ে একটি পার্ক নির্মাণের কাজ হাতে নিয়েছি। ইতোমধ্যে বেশ কাজ হয়েছে, কিন্তু অর্থ অভাবে নির্মাণ কাজ সাময়িক বন্ধ আছে, খুব দ্রুতই কাজে হাত দেয়া হবে। পার্কটি নির্মাণ হলে তখন শিশু কিশোর এমনকি বয়োবৃদ্ধরা সেখানে ঘুরে বেড়াতে পারবেন।