কিশোরী হত্যার অভিযোগে যশোরে আদালতে মামালা

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোরের আদালতে রিনি (১৬) নামে একজন কিশোরীকে হত্যার অভিযোগে বুধবার একটি মামলা হয়েছে। কিশোরীর বাবা লিটন, সৎমা ও স্বামীসহ ৫ জনকে আসামি করে মামলাটি করেছেন সদর উপজেলার নালিয়া ধানঘাটা গ্রামের স্ত্রী রিনা পারভীন। মামলার বাদী আসামি লিটনের প্রথম স্ত্রী। জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. সাইফুদ্দীন হোসাইন তার অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) আদেশ দিয়েছেন। ওই মামলার আসামিরা হচ্ছেন, নীলফামারীর সৈয়দপুর থানার খোর্দ্দ কেতালবাড়ি এলাকার প্রদীপ ওরফে রঞ্জিৎ ওরফে রবি (১৯) তার বাবা গোপাল চন্দ্র রায় (৫০), মা প্রতিমা রানী (৪৫), যশোর সদর উপজেলার নালিয়া ধানঘাটা গ্রামের তাহের পাটোয়ারীর ছেলে ওই কিশোরীর বাবা লিটন হোসেন (৪৫) ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী শারমিন খাতুন (৩০)।
বাদী রিনা পারভীনের অভিযোগ, তার মেয়ে রিনির সাথে আসামি রবির মোবাইল ফোনের মাধ্যমে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০১৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর রিনি ও রবি দুজনে পালিয়ে যাওয়ার সময় যশোর শহরের ক্যাফে মদিনা হোটেলের সামনে থেকে পুলিশ তাদের আটক করে। পরে পুলিশ জিডি মূলে তাদের নিরাপদ হেফাজতে পাঠানোর জন্য আদালতে সোপর্দ করে। এরপর আসামি গোপাল চন্দ্র রায় তার ছেলে রবিকে এবং বাদী রিনা পারভীন তার মেয়ে রিনিকে আদালত থেকে জিম্মায় নেন। এর কয়েক মাস পর গত ১ জানুয়ারি সকালে আসামি লিটন হোসেন ও শারমিন খাতুন অন্য আসামিদের সাথে যোগসাজশে আসামি রবিকে মোবাইল ফোন করে ডেকে আনেন এবং তারা তার সাথে রিনিকে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। এ ঘটনা জানতে পেরে বাদী রিনা পারভীন কৌশলে তার মেয়ে রিনিকে সেখান থেকে নিয়ে যান। কিন্তু পরদিন ২ জানুয়ারি রিনিকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিলো না। পরে তার মা রিনা পারভীন মেয়ের সন্ধানের জন্য আসামি লিটন হোসেন ও শারমিন খাতুনের বাড়িতে যান। এ সময় তারা তাকে জানান যে, রবি তার মেয়ে রিনিকে নিয়ে গেছেন। এক পর্যায়ে তাদের চাপ সৃষ্টি করলে তারা রিনিকে ফিরিয়ে এনে দিবেন বলে তাকে আশ্বাস দেন। এরপর রিনি তার মা রিনা পারভীনকে মোবাইল ফোন করে জানায়, সে রবিকে বিয়ে করে তার বাড়িতে (নীলফামারীতে রবির বাড়িতে) অবস্থান করছে। সর্বশেষ গত ৬ জানুয়ারি রাত ৮টার দিকে আসামি লিটন হোসেন মোবাইল ফোন করে রিনা খাতুনকে জানান, তার মেয়ে মারা গেছে। এরপর আসামি লিটন হোসেন ও শারমিন খাতুন নীলফামারীতে আসামি রবির বাড়িতে যান। পরে তারা বাদী রিনা খাতুনকে মোবাইল ফোন করে জানান, লাশ নিয়ে আসার জন্য অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া বাবদ ২২ হাজার টাকা লাগবে। নতুবা লাশ নদীতে ফেলে দেয়া হবে। ফলে রিনা খাতুন ভাড়ার টাকা দিলে নীলফামারী থেকে রিনির লাশ যশোরে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। বাড়িতে আনার পর তড়িঘড়ি করে লাশ দাফন করা হয়। কিন্তু মৃত্যুর কারণ জিজ্ঞেস করলে লিটন হোসেন ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী শারমিন খাতুন একেক সময় একেক উত্তর দেন। ফলে রিনা খাতুনের ধারণা তার মেয়েকে আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে শ্বাসরোধে অথবা বিষ খাইয়ে হত্যা করেছেন।