লোহাগড়ায় কলেজছাত্রকে ফাঁদে ফেলে ১০ লাখ টাকা দাবি!

0

লোহাগড়া (নড়াইল) সংবাদদাতা ॥ লোহাগড়ায় কলেজছাত্র রেদওয়ান মাহফুজকে(২৩) ষড়যন্ত্রমূলকভাবে বিয়ের ফাঁদে ফেলে হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র ও অভিযোগে জানা গেছে, ইতনা ইউনিয়নের কুমারডাঙ্গা গ্রামের ইজাবুল শেখের ছেলে রেদওয়ান মাহফুজ লোহাগড়া সরকারি আদর্শ কলেজের অনার্স (রাষ্ট্রবিজ্ঞান) শেষ বর্ষের ছাত্র।
২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে অপরিচিত একটি নম্বর থেকে রেদওয়ান মাহফুজের মোবাইল ফোনে কল আসে। কুন্দসী এলাকার তিশা আক্তার(২২) নামে একটি মেয়ে নিজের পরিচয় দেয়। রেদওয়ান মাহফুজ ওই মেয়ের সাথে স্বাভাবিক কথা বলেন। কয়েকদিন কথা বলার পর ওই মেয়ে রেদওয়ান মাহফুজকে দেখা করতে বলেন। কলেজ থেকে বাড়ি ফেরার পথে ওই মেয়ের সাথে মেয়ের বাড়ির সামনেই তার দেখা হয়। ওই সময় প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন রেদওয়ান মাহফুজ। তারপর ওই মেয়ের সাথে দুই বছর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন তিনি। ওই মেয়ে রেদওয়ান মাহফুজের বাড়ির ঠিকানা সংগ্রহ করেন। ২০১৯ সালের মাঝামাঝিতে ওই মেয়ে আবারো রেদওয়ান মাহফুজকে উত্ত্যক্ত শুরু করেন। রেদওয়ান মাহফুজ বিষয়টি তার পরিবারকে জানালে তারা বিষয়টি মেয়ের পরিবারকে জানায়। পরে দুই পরিবার বিষয়টির সমাধান করতে আগ্রহী হয়। মেয়ের পরিবার ও আত্মীয় স্বজন ১০ লাখ টাকা দাবি করে বসেন।
পরবর্তীতে গত বছর ২৯ নভেম্বর ওই মেয়ের লোহাগড়া বাজারে এক আত্মীয়ের বাসায় মীমাংসার জন্য বসা হয়। সেখানে মেয়ে পক্ষের লোকজন জোর করে বিয়ের কাবিননামা ফরমসহ এক শ টাকার পাঁচটি ননজুডিসিয়াল স্টাম্পে রেদওয়ান মাহফুজের স্বাক্ষর নেয়। জোর করে স্বাক্ষর নেয়া সেই কাবিননামা নিয়ে ওই মেয়ে গত ৩ সেপ্টেম্বর রেদওয়ান মাহফুজের বাড়িতে গিয়ে ওঠে। রেদওয়ান মাহফুজের বাবা লোহাগড়া থানায় অভিযোগ দিলে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ওই মেয়েকে উদ্ধার করে মেয়ের পরিবারের কাছে সোপর্দ করে। গত ৪ সেপ্টেম্বর বিষয়টির সুরাহা করতে থানায় বসলে পুলিশ দু পরিবারকে সমঝোতা করে নিতে বলে। কিন্তু মেয়ে পক্ষ সেই ১০ লাখ টাকার দাবিতে অনড় থাকায় সমাধান হয়নি।
মামলা করবার উদ্দেশ্যে স্বামী মারধর করেছে মর্মে বিবরণ দিয়ে তিশা আক্তার গত ১৫ সেপ্টেম্বর লোহাগড়া হাসপাতালে ভর্তি হয়ে পরের দিন হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নেয়। কলেজ ছাত্র রেদওয়ান মাহফুজ আশঙ্কা করছেন মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে তাকে ও তার পরিবারকে হয়রানি করার ষড়যন্ত্র চলছে। কলেজ ছাত্রের বাবা ইজাবুল শেখ বলেন, ‘অযথা আমার পরিবারকে হয়রানি করা হচ্ছে। মেয়ে পক্ষের লোকজন লাখ লাখ টাকা দাবি করে দেনদরবার শুরু করেছে।’ ইতনা ইউনিয়নের বিবাহ রেজিস্ট্রার মোহাম্মাদ রুহুল্লা বলেন, ‘ওই বিয়ে আমি পড়াইনি, রেজিস্ট্রিও করিনি। আমি উপস্থিতও ছিলাম না। কাবিনামায় আমি স্বাক্ষরও করিনি। অথচ কথিত কাবিনে আমার নামের সিল সহি ব্যবহার করা হয়েছে। আমি বিষয়টি পরে জেনেছি।’ বক্তব্য নিতে কুন্দসী এলাকার তিশা আক্তারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি। লোহাগড়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. ফিরোজ বলেন, বিষয়টির সমাধান করতে দুই পরিবারকে পরামর্শ দেয়া হয়েছিল। পরে শুনলাম তারা সমাধান করতে পারেনি। সার্বিক বিষয়ে আমরা অবগত।